বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আজ খামচে ধরেছে, সেই পুরনো শকুন জামায়াত-শিবির। একথা বলেছেন রংপুরে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ মিঞার তার এই বক্তব্যে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। তিনি আরোও বলেন,তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ১৯৭১ সালকে ক্ষীণ করার জন্য ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টকে তুলনা করা হয়, এটা কখনো হতে পারে না। গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এ বক্তব্য দেন। এ সময় তাকে উত্তেজিত দেখা যায়। কলেজ প্রাঙ্গণে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভের পাদদেশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যক্ষের বক্তব্যের এমন একটি ভিডিও ক্লিপ এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। একাত্তরের সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের তুলনা করায় এর সমালোচনা করে অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা । তার বক্তব্যকে রাজনৈতিক বক্তব্য উল্লেখ করে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান আরেক শিক্ষক। এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আব্দুল ওয়াহেদকে বলতে শোনা যায়, আজকে ১৯৭১ সালকে ক্ষীণ করার জন্য ২৪ সালের জুলাই-আগস্টকে তুলনা করা হয়, এটা কখনো হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধ ছেলে খেলা নয়। একাত্তর সালে ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছি। আমাদের জাতীয় পতাকা এটা কোনো রাজনৈতিক দলের পতাকা নয়। এটা সমস্ত মানুষের পতাকা, বাংলাদেশের আপামর জনগণের পতাকা। এই পতাকা খামছে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন। সেই জামায়াত-শিবির যারা আজ এই পতাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করেছে। আজ এই পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধর ইতি হাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া যাবেনা।
তার এমন বক্তব্যর শেষে প্রতিবাদ জানান প্রতিষ্ঠানটির আরেক শিক্ষক মোজাফফর হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে কটাক্ষ করে আমরা দ্বিমত সৃষ্টি করার চেষ্টা করব না। এ ধরনের বক্তব্যকে আমি প্রত্যাখ্যান করব এবং প্রতিবাদ জানাই , কারণ ২০২৪ সালের আন্দোলন জামায়াত-শিবিরের আন্দোলন ছিল না। ছাত্র-জনতাসহ সব মানুষের আন্দোলন ছিল – এটা মনে রাখতে হবে।
রংপুর মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি গোলাম জাকারিয়া বলেন, ১৯৭১ আমাদের প্রেরণা এবং চেতনা। আর ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের অস্তিত্ব। কিন্তু বিজয় দিবসে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও জামায়াতে ইসলাম নিয়ে যে বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য দিয়েছে । এতে বুঝাযায় তিনি আওয়ামী লীগের দোসর।
কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষক বলেন, আব্দুল ওয়াহেদ মিঞার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি তার নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার এক মামলায় নাম থাকলেও পরে তিনি তদবির করে নাম কাটিয়ে নেন।
এ বিষয়ে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা বলেন, কোথায় কি বক্তব্য দিছি, এটি নিয়ে এখন আর আমি কোনো কমেন্ট করতে চাচ্ছি না।