বিশ্ববাজারে অক্টোবর মাসে পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে, তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। বিদায়ী মাসে বাংলাদেশের পোশাক পণ্য রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছে ৩৬৭ কোটি ৮০ লাখ ১ হাজার ডলার।
এর আগের বছর অক্টোবর মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৩৫৬ কোটি ১৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। অর্থাৎ ২০২১ সালের অক্টোবরের তুলনায় ২০২২ সালের অক্টোবরে পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১১ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। যা শতাংশের হিসেবে ৩ শতাংশ। বিদায়ী এই মাসে পোশাক খাত থেকে সরকারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৩ কোটি ৪৪ লাখ ৮ হাজার ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫ কোটি ৬৪ লাখ ৭ হাজার ডলার কম রপ্তানি হয়েছে।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্যে এই চিত্র দেখা গেছে।
ইপিবির তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পোশাক পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৯৫ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এর আগের তিন মাসে ছিল ১ হাজার ২৭ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ১ হাজার ২৬২ কোটি ১১ লাখ ৫ হাজার ডলার। সেই হিসাবে আগের বছরের একই সময়ে তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয়ে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৪০৫ কোটি ৬১ লাখ ৪ হাজার ডলার। সেখানে রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৯৫ কোটি ২৩ লাখ ৪ হাজার ডলার। অর্থাৎ ১০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার কম রপ্তানি হয়েছে, শতাংশের হিসাবে যা দশমিক ৭৪ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক ও মুখপাত্র মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ইপিবি ২০২২ সালের জুলাই-অক্টোবরের সর্বশেষ রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করেছে। অক্টোবরে সামগ্রিক তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে এক বছরে রপ্তানি ৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম চার মাসে সামগ্রিক পোশাক পণ্য রপ্তানি ১৩ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে বছরওয়ারীভাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
অক্টোবরে নিটওয়্যার এবং ওভেন খাত থেকে রপ্তানি যথাক্রমে ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি ৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন রপ্তানি ৬ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং ১৫ দশমিক ০৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, অক্টোবরে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার একটি পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও পোশাক খাতে এ ধরনের ইতিবাচক বৃদ্ধিকে স্বাগত জানাই। যেহেতু বিশ্বব্যাপী খুচরা বাজারগুলো সংগ্রামরত এবং ক্রেতারা নতুন কার্যাদেশ প্রদান ও ইনভেনটরি পরিচালনার ক্ষেত্রে সতর্ক পদক্ষেপ অনুসরণ করছে, তাই পোশাক খাতের একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আগামী মাসগুলোতে কার্যাদেশ প্রাপ্তি এবং প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে আমি আশাবাদী নই।
তিনি বলেন, একক মাসে ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্য। আমাদের শিল্পের আরও পণ্য সরবরাহ করার সক্ষমতা রয়েছে এবং আমরা পণ্য ও বাজার বৈচিত্র্যকরণসহ নতুন সুযোগগুলোর অন্বেষণ করছি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ এসেছে পোশাক খাত থেকে। তাই পোশাক খাত ভালো করলে রপ্তানি আয়ও হৃষ্টপুষ্ট হয় বলে মন্তব্য করেন বিজিএমইএর এই পরিচালক।