ঘরে তৈরি খাবার খেলে আপনার মনে গোপন একটু অহংকার আসতেই পারে যে, ‘আমি যেখানে সেখানে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই না’। কিন্তু আপনার রান্নাঘরে থাকা সব উপকরণ এবং আপনার রান্না করা সব খাবারই কি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ? সম্ভবত না। এমন অনেক উপকরণ আছে যেগুলো আমরা সব সময় সংরক্ষণ করি এবং প্রায় সব রান্নার জন্যই প্রয়োজনীয় মনে করি। এ ধরনের উপকরণগুলো অতিরিক্ত ব্যবহার করার আগে দুইবার ভাবতে হবে। জেনে নিন কোন উপকরণগুলো আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে-
চিনি
প্রায় সব রান্নাঘরেই সাদা ও স্বচ্ছ চিনি ভরা বয়াম দেখতে পাওয়া যায়। চা, কফি, মিল্কশেকসহ আরও অসংখ্য মিষ্টি খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এই চিনি। অতিরিক্ত চিনি খেলে দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, প্রদাহ, স্থুলতা, ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা। আর এসব সমস্যা থেকে বাড়ে স্ট্রোক ও হার্টের সমস্যা।
ময়দা
কেক, কুকিজ, রুটি, পাস্তা, পিঠা, পরোটা, পাকোড়াসহ আরও অনেক খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ময়দা। ময়দার তৈরি খাবার অতিরিক্ত খেলে তা ওজন বৃদ্ধি, হজমে সমস্যা এমনকী ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। প্রক্রিয়াকরণের প্রতিটি ধাপে ময়দা থেকে ডায়েটরি ফাইবার, ভিটামিন বি, আয়রণ, ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন ই চলে যায়। যে কারণে ময়দায় আর কোনো পুষ্টি উপাদান অবশিষ্ট থাকে না বলেই চলে।
লবণ
অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণেউচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক ইত্যাদি মারাত্মক সব সমস্যার কারণ হতে পারে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে, বেশিরভাগ মানুষই প্রতিদিন অতিরিক্ত লবণ খেয়ে থাকে। গড়ে ৯-১২ গ্রাম লবণ তারা প্রতিদিন খেয়ে থাকে, যা প্রয়োজনীয় মাত্রার প্রায় দ্বিগুণ। সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণ কমালে অনেক অসুখ থেকে দূরে থাকা যায়।
তেল
আপনার চুলার পাশেই বড় এক বোতল তেল থাকে, তাই না? আপনার বাড়ির সদস্যরা কি পাকোড়া, চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফাই, ফ্রোজেন ফুড খেতে খুব ভালোবাসে? এসব প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তবে আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ব্রেস্ট/ওভারিয়ান ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, ওজন বৃদ্ধি, জয়েন্ট পেইনসহ আরও অনেক রোগের ঝুঁকিতে আছেন।
করণীয়
অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতিকর বলে এসব খাবার খাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে তা কিন্তু নয়। এসব খাবারের জায়গায় স্বাস্থ্যকর কোনো বিকল্প খুঁজে নিতে পারেন বা পরিমিত পরিমাণে খেতে পারেন। যেমন ধরুন, ময়দার বদলে ফাইবার সমৃদ্ধ লাল আটা খেলেন,চিনির বদলে খেতে পারেন গুড়। অবশ্য গুড়ও উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ তবে এতে পুষ্টিগুণ থাকে বেশি। এরকম ছোট ছোট পরিবর্তন ও সচেতনতা আপনার ও আপনার পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘ সময় ধরে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।