রাশিয়ার কুরস্কে একটি বিমানঘাঁটিতে মঙ্গলবার ড্রোন হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলের গভর্নর রোমান স্তারোভয়েত। দুই রুশ বিমানঘাঁটিতে রহস্যজনক বিস্ফোরণের পরদিনই এই হামলার খবর পাওয়া গেল।
রাশিয়া সোমবারের হামলার জন্য ইউক্রেনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। এ কথা সত্য হয়ে থাকলে তা হবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরোধ তথা পাল্টা আক্রমণ জোরদারের প্রমাণ।
সোমবারের বিস্ফোরণের শিকার দুটি রুশ বিমানঘাঁটিতে ছিল ইউক্রেনে হামলায় ব্যবহূত দূরপাল্লার বোমারু বিমান। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না এলেও বিস্ফোরণের জন্য কিয়েভের হামলাকেই দায়ী করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যেই কুরস্ক অঞ্চলে হামলার খবর এলো।
সামাজিক মাধ্যম টেলিগ্রামে কুরস্ক অঞ্চলের গভর্নর রোমান স্তারোভয়েত মঙ্গলবার জানান, এদিনের হামলায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আগুনও ধরেনি।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে ১৭৫ কিলোমিটার দূরের রুশ বিমানঘাঁটিতে বিস্ফোরণের পর রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে উঠেছে। ভোরের দিকেও ঘটনাস্থলে কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল।
রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, গত দুই দিনের হামলায় আধুনিক স্ট্রিজ ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ড্রোন প্রথম সোভিয়েত যুগে ১৯৭০-এর দশকে তৈরি করা হয়েছিল।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সারাতোভ অঞ্চলের এঙ্গেলস-২ ও রিয়াজানের বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের সোমবারের হামলায় তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে। দুটি বিমান সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কিয়েভ এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইউক্রেনের এক কর্মকর্তার বরাতে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবারের ড্রোন হামলাগুলো ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকেই হয়েছে। আর সোমবার ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী সামাজিক মাধ্যমে একটি ক্ষতিগ্রস্ত যুদ্ধবিমানের ছবি দিয়ে শুধু লেখে, ‘কী হয়েছে?’ সেখানে একটি ব্যঙ্গাত্মক ইমোজিও ব্যবহার করা হয়।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সোমবারের হামলা ছিল তাদের দূরপাল্লার কৌশলগত বোমারু বিমানগুলো নিষ্ক্রিয় করার উদ্দেশ্যে চালানো ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’। হামলায় ব্যবহূত ড্রোন ভূপাতিত করারও দাবি করেছে মস্কো।
কথিত ড্রোন হামলা হওয়া সারাতোভ ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দূরে। এক রুশ বিশ্লেষক বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার ভেতরে এত দূরে হামলা করতে পারলে মস্কোতেও আক্রমণ করতে সক্ষম।
সামরিক বিশ্লেষক সেরহি জাগুরেত্স অবশ্য বলেন, ‘এখনই এ ধরনের মন্তব্য করা ঠিক নয়। তবে রাশিয়ার অভ্যন্তরের সামরিক লক্ষ্যে হামলা করতে পারা ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতার একটি প্রতীক। এর গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে।