ঢাকা ০৭:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

চুনারুঘাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দিনমজুরের মৃত্যু

চুনারুঘাট গত ০৬ এপ্রিল রবিবার রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়-তুফানের রেশ কাটতে না কাটতেই ০৭ এপ্রিল রাত ১০:৩৮ মিনিটে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে চুনারুঘাট উপজেলার ১০ নং মিরাশি ইউনিয়নের পড়াঝার গ্রামের খোয়াই নদীর বাঁধ এলাকায়। রফিক মিয়া (২৬) নামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক দিনমজুর। তিনি বিবাহিত এবং তার তিন বছর বয়সী এক ছেলে ও দেড় বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিমের বসতবাড়ি খোয়াই নদীর বাঁধের সামান্য নিচেই অবস্থিত, যা ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ৭,শত ফুট দূরে। নদীর বাঁধ ঘেঁষে যাওয়া বিদ্যুৎ লাইনের উপর ঝড়ের কারণে একটি কাঁঠাল গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছিল। বাঁধের উপর অন্যান্য গাছের সাথে কাঁঠাল গাছের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি এবং এই গাছগুলির উপরিভাগের ডালের মধ্য দিয়েই বিদ্যুৎ লাইনটি গিয়েছে। ডালের ভিতরে তার যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই তারের উপর অনেক ডাল পাতা জমে ছিল। গত ০৬ই এপ্রিল রাত আনুমানিক রাত ২টায় প্রবল ঝড়-তুফান হয়। এর ফলে কাঁঠাল গাছের একটি বড় ডাল বিদ্যুৎ লাইনের উপর ভেঙে পড়লে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার পূর্বমুহূর্ত থেকে ০৭ এপ্রিল সোমবার রাত পর্যন্ত ওই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। যখন ভিকটিম নিজে ওই বিদ্যুৎ লাইনের উপর পড়ে থাকা ডালপালা পরিষ্কার করার জন্য কাঁঠাল গাছে ওঠেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এবং তিনি গাছের উপরিভাগের ডালেই ঝুলে থাকেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ, ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরেও কেন দ্রুত লাইন মেরামত করা হয়নি এবং বিদ্যুৎ লাইনে পড়ে থাকা গাছপালা গুলো কর্তৃপক্ষের মনিটরিং না করে। কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে সে বিষয়ে কোনো আগাম খবর দেওয়া হয়নি। যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ করার আগে লাইন পরীক্ষা করা হত অথবা স্থানীয়দের জানানো হত, তাহলে হয়তো এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটত না। খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যায় এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং স্থানীয়রা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। নিহত দিনমজুরের পরিবারে এখন শোকের মাতম চলছে। তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারটি চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্যের দাবি জানিয়েছেন ফরিদপুর জেলার সাধারণ কৃষকেরা

চুনারুঘাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দিনমজুরের মৃত্যু

আপডেট সময় ০২:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

চুনারুঘাট গত ০৬ এপ্রিল রবিবার রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়-তুফানের রেশ কাটতে না কাটতেই ০৭ এপ্রিল রাত ১০:৩৮ মিনিটে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে চুনারুঘাট উপজেলার ১০ নং মিরাশি ইউনিয়নের পড়াঝার গ্রামের খোয়াই নদীর বাঁধ এলাকায়। রফিক মিয়া (২৬) নামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক দিনমজুর। তিনি বিবাহিত এবং তার তিন বছর বয়সী এক ছেলে ও দেড় বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিমের বসতবাড়ি খোয়াই নদীর বাঁধের সামান্য নিচেই অবস্থিত, যা ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ৭,শত ফুট দূরে। নদীর বাঁধ ঘেঁষে যাওয়া বিদ্যুৎ লাইনের উপর ঝড়ের কারণে একটি কাঁঠাল গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছিল। বাঁধের উপর অন্যান্য গাছের সাথে কাঁঠাল গাছের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি এবং এই গাছগুলির উপরিভাগের ডালের মধ্য দিয়েই বিদ্যুৎ লাইনটি গিয়েছে। ডালের ভিতরে তার যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই তারের উপর অনেক ডাল পাতা জমে ছিল। গত ০৬ই এপ্রিল রাত আনুমানিক রাত ২টায় প্রবল ঝড়-তুফান হয়। এর ফলে কাঁঠাল গাছের একটি বড় ডাল বিদ্যুৎ লাইনের উপর ভেঙে পড়লে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার পূর্বমুহূর্ত থেকে ০৭ এপ্রিল সোমবার রাত পর্যন্ত ওই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। যখন ভিকটিম নিজে ওই বিদ্যুৎ লাইনের উপর পড়ে থাকা ডালপালা পরিষ্কার করার জন্য কাঁঠাল গাছে ওঠেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এবং তিনি গাছের উপরিভাগের ডালেই ঝুলে থাকেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ, ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরেও কেন দ্রুত লাইন মেরামত করা হয়নি এবং বিদ্যুৎ লাইনে পড়ে থাকা গাছপালা গুলো কর্তৃপক্ষের মনিটরিং না করে। কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে সে বিষয়ে কোনো আগাম খবর দেওয়া হয়নি। যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ করার আগে লাইন পরীক্ষা করা হত অথবা স্থানীয়দের জানানো হত, তাহলে হয়তো এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটত না। খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যায় এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং স্থানীয়রা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। নিহত দিনমজুরের পরিবারে এখন শোকের মাতম চলছে। তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারটি চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।