ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শরীয়তপুর জাজিরা কামরুলের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন  জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির এই যুগে মেধাস্বত্ব একটি শক্তিশালী হাতিয়ার -বেরোবি উপাচার্য কুবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত জামালপুরে ১৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ৮ শিক্ষককে অব্যাহতি বগুড়া ডাকাত চক্রের ৫ সদস্য আটক নরসিংদী বাজারে মাছ কেটে সংসার চালায় শতাধিক পরিবার নার্সিং ডিপ্লোমাকে স্নাতক সমমান করার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ের বিক্ষোভ সমাবেশ কৃষি প্রণোদনা ও কৃষিঋণ বিতরণ সহজীকরণের দাবি বোরহানউদ্দিনে গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগে খামারির মাছ নিধন লালমনিহাটের পাটগ্রামে টানা রেলপথ অবরোধের পাশাপাশি সড়কপথ অবরোধের ঘোষণা

জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মালচিং প্রযুক্তি

জলবায়ু সহিষ্ণু মালচিং প্রযুক্তিতে সবজি চাষে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মালচিং পেপার কেবল আদ্রতাই ধরে রাখছে না, ফসলে যোগাচ্ছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি। এছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে কমেছে সেচের খরচ আর আগাছা ও বালাই নাশকের ব্যবহার। কম খরচে অধিক উৎপাদন পাওয়ায় আধুনিক এই পদ্ধতিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষক জামালপুরের কৃষকরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সবজি চাষে সবচেয়ে বড় বাধা পোকামাকড় ও আগাছা। অন্যদিকে সবজি উৎপাদনে প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পানি। এই দুই বিষয়কে সাশ্রয় করতে বেড়েছে আধুনিক কৌশল মালচিং পদ্ধতির ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। এ বছর জামালপুর জেলায় ২৪ হেক্টর জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ, টমেটো, বেগুনসহ নানা সবজি চাষাবাদ করছেন দেড় শতাধিক কৃষক।

এদিকে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো টমেটো চাষ করেছেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের কৃষক নূর সালাম। মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করে পেয়েছেন দারুণ সাফল্য।

নূর সালাম বলেন, আগে সাধারণভাবে চাষাবাদ করতাম। গত দুইবছর ধরে এ মালচিং এ চাষাবাদ করে অনেকটা ফলন ভালো পেয়েছি। আমাকে দেখে আশে পাশের অনেক চাষিরা এখান এ পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। অনেকেই আবার আমার কাছে পরামর্শ নিয়ে যায়।

এছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে ক্ষেতের আদ্রতা রক্ষা, আগাছা দমন খরচ কমেছে, আবার সার ও পানি কম লাগায় এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে আশেপাশের কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

আমিনুল নামে এক কৃষক বলেন, নূর সালাম যেভাবে টমেটো চাষ করছেন তাতে আবাদও অনেক ভালো পেয়েছেন। নিরানী লাগে না, পানি কম লাগে সবদিক থেকেই সুবিধা। আমরাও আগামীতে এমন করে চাষাবাদ করবো।

কৃষকদের কাছে এই পদ্ধতির সুফল জানাতে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের অস্ট্রেলিয়ান এনজিও কো-অপারেশন প্রোগ্রামের অর্থায়নে উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নে জেসমিন প্রকল্প। প্রকল্পের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে পরিবেশ বান্ধব বালাইনাশক নিয়ে কাজ করা কৃষি উপকরণ বাজারজাতকারী বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

ওয়ার্ল্ড ভিশন জেসমিন প্রজেক্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক স্টিফেন অসীম চ্যাটার্জ্জী বলেন, আমাদের জেসমিন প্রকল্প কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সঙ্গে কাজ করছে। জামালপুর জেলার ৪টি উপজেলায় এই প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে। ধাপে ধাপে ২৫ হাজার কৃষকের মধ্যে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে ভালো সাড়া পড়েছে কৃষকদের মধ্যে।

জেলার পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, দেশে সাধারণত দিন দিন আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। দেশ ও জাতি যেমন উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঠিক তেমনি কৃষিখাতেও পরিবর্তন আসছে। কৃষক চায় সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে অধিক ফসল উৎপাদনের দিকেই অগ্রসর হয় কৃষক। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কম হবার ফলে মালচিং পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে।

অপরদিকে মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, মালচিং এমন একটি পদ্ধতি যা মাটির ওপরে জৈব বা অজৈব ব্যবহার করে একটি স্তর তৈরি করা। এত জমির অদ্রতা অনেক অংকাশেই সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। গাছের স্বাস্থ্য ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে এই পদ্ধতি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীয়তপুর জাজিরা কামরুলের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন 

জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মালচিং প্রযুক্তি

আপডেট সময় ০৭:০৪:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

জলবায়ু সহিষ্ণু মালচিং প্রযুক্তিতে সবজি চাষে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মালচিং পেপার কেবল আদ্রতাই ধরে রাখছে না, ফসলে যোগাচ্ছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি। এছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে কমেছে সেচের খরচ আর আগাছা ও বালাই নাশকের ব্যবহার। কম খরচে অধিক উৎপাদন পাওয়ায় আধুনিক এই পদ্ধতিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষক জামালপুরের কৃষকরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সবজি চাষে সবচেয়ে বড় বাধা পোকামাকড় ও আগাছা। অন্যদিকে সবজি উৎপাদনে প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পানি। এই দুই বিষয়কে সাশ্রয় করতে বেড়েছে আধুনিক কৌশল মালচিং পদ্ধতির ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। এ বছর জামালপুর জেলায় ২৪ হেক্টর জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ, টমেটো, বেগুনসহ নানা সবজি চাষাবাদ করছেন দেড় শতাধিক কৃষক।

এদিকে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো টমেটো চাষ করেছেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের কৃষক নূর সালাম। মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করে পেয়েছেন দারুণ সাফল্য।

নূর সালাম বলেন, আগে সাধারণভাবে চাষাবাদ করতাম। গত দুইবছর ধরে এ মালচিং এ চাষাবাদ করে অনেকটা ফলন ভালো পেয়েছি। আমাকে দেখে আশে পাশের অনেক চাষিরা এখান এ পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। অনেকেই আবার আমার কাছে পরামর্শ নিয়ে যায়।

এছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে ক্ষেতের আদ্রতা রক্ষা, আগাছা দমন খরচ কমেছে, আবার সার ও পানি কম লাগায় এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে আশেপাশের কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

আমিনুল নামে এক কৃষক বলেন, নূর সালাম যেভাবে টমেটো চাষ করছেন তাতে আবাদও অনেক ভালো পেয়েছেন। নিরানী লাগে না, পানি কম লাগে সবদিক থেকেই সুবিধা। আমরাও আগামীতে এমন করে চাষাবাদ করবো।

কৃষকদের কাছে এই পদ্ধতির সুফল জানাতে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের অস্ট্রেলিয়ান এনজিও কো-অপারেশন প্রোগ্রামের অর্থায়নে উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নে জেসমিন প্রকল্প। প্রকল্পের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে পরিবেশ বান্ধব বালাইনাশক নিয়ে কাজ করা কৃষি উপকরণ বাজারজাতকারী বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

ওয়ার্ল্ড ভিশন জেসমিন প্রজেক্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক স্টিফেন অসীম চ্যাটার্জ্জী বলেন, আমাদের জেসমিন প্রকল্প কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সঙ্গে কাজ করছে। জামালপুর জেলার ৪টি উপজেলায় এই প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে। ধাপে ধাপে ২৫ হাজার কৃষকের মধ্যে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে ভালো সাড়া পড়েছে কৃষকদের মধ্যে।

জেলার পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, দেশে সাধারণত দিন দিন আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। দেশ ও জাতি যেমন উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঠিক তেমনি কৃষিখাতেও পরিবর্তন আসছে। কৃষক চায় সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে অধিক ফসল উৎপাদনের দিকেই অগ্রসর হয় কৃষক। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কম হবার ফলে মালচিং পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে।

অপরদিকে মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, মালচিং এমন একটি পদ্ধতি যা মাটির ওপরে জৈব বা অজৈব ব্যবহার করে একটি স্তর তৈরি করা। এত জমির অদ্রতা অনেক অংকাশেই সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। গাছের স্বাস্থ্য ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে এই পদ্ধতি।