ঢাকা ০৭:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লালমনিরহাটের কৃষকেরা তামাক চাষে ঝুঁকছেন বগুড়ায় ধর্ষন মামলার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী দীর্ঘ ২০ বছর পর গ্রেফতার বকশীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা ও চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত কমলনগরে হাজিরহাট হামিদিয়া কামিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ শায়েস্তাগঞ্জ ইউ এন ও অফিসিয়াল নম্বর হ্যাক করে টাকা চাইলো প্রতারক চক্র অনুষ্ঠিত হলো  উত্তর তারাবুনিয়া মহিসুন্নাহ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা পিঠা উৎসব ২০২৫ সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমন করল দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন আজ পবিত্র শবে মেরাজ মরহুম আব্দুল লতিফ তালুকদার মেমোরিয়াল টি-১৬ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন বগুড়া সদর থানা থেকে লুন্ঠিত দুটি আগ্নেয়াস্ত্র পুকুর থেকে উদ্ধার

কক্সবাজারে সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।

  • সৈয়দ হোসাইন
  • আপডেট সময় ০৫:৫২:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫২৭ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ গত ২৩ জানুয়ারি এই আদেশ দেন।

অন্য আসামিরা হলেন- কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ।

ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিরাজ উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত এই পরোয়ানা জারি করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১,৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। চিংড়ি ঘের, ঘরবাড়ি ও অন্যান্য অবকাঠামোর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ৪৬ কোটি টাকা। তদন্তে উঠে আসে, মনগড়া ২৫টি চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ৪৬ কোটি টাকার মধ্যে ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।

এ ব্যাপারে মাতারবাড়ীর বাসিন্দা কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত চলাকালে আসামিদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়া হয়। জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এই জালিয়াতিতে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনায় দ্বিতীয় মামলায় রুহুল আমিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে দুদক পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে। জালিয়াতির বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ পান।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে ২৩ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনটি চেক বাতিল করা হয়। অবশিষ্ট ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা যারা উত্তোলন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরো একটি মামলা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়।

এদিকে ২০১৭ সালের ২২ মে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। অন্য আসামিদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাফর আলমকে ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার ও সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালমনিরহাটের কৃষকেরা তামাক চাষে ঝুঁকছেন

কক্সবাজারে সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।

আপডেট সময় ০৫:৫২:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ গত ২৩ জানুয়ারি এই আদেশ দেন।

অন্য আসামিরা হলেন- কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ।

ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিরাজ উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত এই পরোয়ানা জারি করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১,৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। চিংড়ি ঘের, ঘরবাড়ি ও অন্যান্য অবকাঠামোর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ৪৬ কোটি টাকা। তদন্তে উঠে আসে, মনগড়া ২৫টি চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ৪৬ কোটি টাকার মধ্যে ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।

এ ব্যাপারে মাতারবাড়ীর বাসিন্দা কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত চলাকালে আসামিদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়া হয়। জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এই জালিয়াতিতে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনায় দ্বিতীয় মামলায় রুহুল আমিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে দুদক পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে। জালিয়াতির বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ পান।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে ২৩ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনটি চেক বাতিল করা হয়। অবশিষ্ট ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা যারা উত্তোলন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরো একটি মামলা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়।

এদিকে ২০১৭ সালের ২২ মে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। অন্য আসামিদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাফর আলমকে ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার ও সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।