বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর ড্রাইভিং ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন গাড়ি না পাওয়া এবং পুরনো লক্কর ঝক্কর গাড়ি ব্যবহারের কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ পরীক্ষার্থীরা। একদিকে, নতুন নিরাপদ এবং আধুনিক গাড়ি ব্যবহার না হওয়ায় পরীক্ষার্থীরা তাদের ড্রাইভিং দক্ষতা সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে পারছেন না, অন্যদিকে পুরনো এবং অদক্ষ গাড়ি ব্যবহারের কারণে পরীক্ষার ফল এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার জন্য ড্রাইভিং পরীক্ষার সময় যে গাড়ি ব্যবহার করা হয়, সেগুলি বেশিরভাগই পুরনো, অবনতি হওয়া এবং মেরামত প্রয়োজন এমন গাড়ি। এসব গাড়ির ফিটনেস এবং নিরাপত্তা মান খারাপ হওয়ায়, পরীক্ষার্থীদের জন্য সঠিকভাবে ড্রাইভিং পরীক্ষা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এছাড়া, পুরনো গাড়ি ব্যবহারের কারণে পরীক্ষার সময় বিপদ এবং অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে, যা সাধারণভাবে প্রশ্নবোধক এবং অসন্তুষ্ট করেছে।
অনেক ড্রাইভিং পরীক্ষার্থী অভিযোগ করছেন যে, তারা নতুন গাড়ি বা উন্নত গাড়ি প্রত্যাশা করলেও, পুরনো এবং অদক্ষ গাড়ি ব্যবহার করতে হচ্ছে। এক পরীক্ষার্থী বলেন, “আমি বহুদিন ধরে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে, কিন্তু যখন বিআরটিএ-র পরীক্ষা দিতে যাই, তখন আমাকে যে গাড়ি দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়, তা পুরোপুরি অপ্রস্তুত এবং লক্কর ঝক্কর। এটা আসলেই খুব হতাশাজনক।”
আরেকজন পরীক্ষার্থী বলেন, “গাড়ির ব্রেক, গিয়ার কিংবা স্টিয়ারিং সঠিকভাবে কাজ করে না। পরীক্ষার সময় পুরোপুরি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়। আমার মনে হয়, বিআরটিএ-কে এই বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানা গেছে যে, তারা নতুন গাড়ি এবং উন্নতমানের যানবাহন ব্যবহারের জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তবে অর্থনৈতিক সংকট এবং সরবরাহের অভাবের কারণে এখনো সঠিকভাবে সব পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানায়, “আমরা নতুন গাড়ির ব্যবস্থা করার জন্য পরিকল্পনা করছি, কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে তা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তবে, আমরা দ্রুত এটি সমাধান করার জন্য কাজ করছি।”
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা এবং মান সুনিশ্চিত করতে নতুন গাড়ি ব্যবহার করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুরনো এবং অবস্থা খারাপ গাড়ি দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার কারণে শুধু পরীক্ষার্থীর সঠিকতা নয়, সড়ক নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এমন গাড়ি দিয়ে ড্রাইভিং পরীক্ষা নেওয়ার ফলে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে এটি একটি অসুবিধা হয়ে দাঁড়ায়।
এক্ষেত্রে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের উচিত:
১. নতুন গাড়ি সরবরাহ: পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে নতুন, আধুনিক এবং নিরাপদ গাড়ি সরবরাহ করতে হবে, যাতে পরীক্ষার মান বৃদ্ধি পায় এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
২. ফিটনেস পরীক্ষার মান উন্নয়ন: গাড়ির ফিটনেস নিশ্চিত করতে হবে, যাতে পরীক্ষার্থীরা সঠিকভাবে তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে।
৩. ডিজিটালাইজেশন: ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজ করতে হবে, যাতে স্বচ্ছতা এবং দ্রুততা নিশ্চিত করা যায়। এতে পরীক্ষার্থীরা আরও সহজে এবং দ্রুত সেবা পাবে।
৪. অভিযোগ সুরাহা ব্যবস্থা: পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ দ্রুত শোনা এবং সমাধান করার জন্য একটি কার্যকরী ব্যবস্থা চালু করা উচিত। যাতে পরীক্ষার্থীরা তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরতে এবং যথাযথ প্রতিকার পেতে পারেন।
মিরপুর বিআরটিএ-তে ড্রাইভিং পরীক্ষা নিতে গিয়ে যদি পুরনো, অদক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ গাড়ি ব্যবহৃত হয়, তবে এটি নিরাপত্তা এবং প্রশিক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করবে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নতুন গাড়ি সরবরাহ এবং ফিটনেস পরীক্ষা সঠিকভাবে চালানোর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এতে পরীক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতা সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে পারবে এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, যা সবার জন্য উপকারী হবে।