ঢাকা ০৮:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতারণা ব্ল্যাকমেইলে দেহব্যবসায় জড়িত তানিয়ার উচ্ছৃঙ্খল জীবন

টিকটকার তানিয়া খানম ছনিয়া ওরফে মৌ খান জুঁইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল ও দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, তানিয়া নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে পুরুষদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে করেন এবং পরে অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে পালিয়ে যান।

ভুক্তভোগী মো. আসাদুজ্জামান নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, তানিয়া তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ২৩টি দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং ১৫ মাসে তার ব্যবসা ও সম্পদ দখল করে নেন। পরে বিনা কারণে তালাক দিয়ে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তানিয়া নাহিদের বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্রও চুরি করে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, গুলশানের একটি সিসা বারে ধরা পড়ার পর গ্রামবাসীর মধ্যস্থতায় সমাধানের চেষ্টা করা হলেও কোনো সমাধান হয়নি।

তানিয়া খানম ছনিয়া ফরিদপুর জেলার সালথা থানার চরবলবদী গ্রামের খোকন শেখের মেয়ে। তানিয়া ঢাকায় ‘মৌ খান জুঁই’ নামে পরিচিত। সে বিভিন্ন ক্লাব ও বারে নৃত্য পরিবেশন করতেন এবং আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল ও দেহ ব্যবসার মতো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। এমনকি বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নেন এবং সেখানে নতুন কোনো পুরুষকে ‘স্বামী’ পরিচয়ে রাখেন। মাস শেষে বাড়িওয়ালার সঙ্গে অযথা ঝগড়া করে ভাড়া না দিয়েই চলে যান। এক জায়গায় বেশি দিন অবস্থান না করে নতুন এলাকায় গিয়ে একই পদ্ধতিতে প্রতারণা চালান। তার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে নিজ গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তানিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হলো, তিনি বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে পরে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। এভাবে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগীরা তানিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান নাহিদ বলেন, “তানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর ব্যবসা হারিয়েছি, সে আমার বাড়ি থেকে সোনা-গহনা চুরি করে নিয়ে গেছে। তানিয়া কেবল একজন প্রতারক নন, তিনি সুসংগঠিত প্রতারণা চক্রের সদস্য হতে পারে। তার গতিবিধি নজরদারি করে দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এদিকে ভুক্তভোগীরা জনসাধারণকে সতর্ক করেছেন, তানিয়া খানম ছনিয়ার মতো প্রতারকের ফাঁদে যেন কেউ না পড়েন। তার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন কিংবা সম্পর্ক গড়ার আগে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। কেউ তার সম্পর্কে তথ্য পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে বলেছেন তারা।

এ বিষয়ে তানিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগের বিষয়ে প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রতারণা ব্ল্যাকমেইলে দেহব্যবসায় জড়িত তানিয়ার উচ্ছৃঙ্খল জীবন

আপডেট সময় ০৪:০৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

টিকটকার তানিয়া খানম ছনিয়া ওরফে মৌ খান জুঁইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল ও দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, তানিয়া নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে পুরুষদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে করেন এবং পরে অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে পালিয়ে যান।

ভুক্তভোগী মো. আসাদুজ্জামান নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, তানিয়া তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ২৩টি দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং ১৫ মাসে তার ব্যবসা ও সম্পদ দখল করে নেন। পরে বিনা কারণে তালাক দিয়ে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তানিয়া নাহিদের বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্রও চুরি করে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, গুলশানের একটি সিসা বারে ধরা পড়ার পর গ্রামবাসীর মধ্যস্থতায় সমাধানের চেষ্টা করা হলেও কোনো সমাধান হয়নি।

তানিয়া খানম ছনিয়া ফরিদপুর জেলার সালথা থানার চরবলবদী গ্রামের খোকন শেখের মেয়ে। তানিয়া ঢাকায় ‘মৌ খান জুঁই’ নামে পরিচিত। সে বিভিন্ন ক্লাব ও বারে নৃত্য পরিবেশন করতেন এবং আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল ও দেহ ব্যবসার মতো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। এমনকি বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নেন এবং সেখানে নতুন কোনো পুরুষকে ‘স্বামী’ পরিচয়ে রাখেন। মাস শেষে বাড়িওয়ালার সঙ্গে অযথা ঝগড়া করে ভাড়া না দিয়েই চলে যান। এক জায়গায় বেশি দিন অবস্থান না করে নতুন এলাকায় গিয়ে একই পদ্ধতিতে প্রতারণা চালান। তার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে নিজ গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তানিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হলো, তিনি বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে পরে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। এভাবে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগীরা তানিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান নাহিদ বলেন, “তানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর ব্যবসা হারিয়েছি, সে আমার বাড়ি থেকে সোনা-গহনা চুরি করে নিয়ে গেছে। তানিয়া কেবল একজন প্রতারক নন, তিনি সুসংগঠিত প্রতারণা চক্রের সদস্য হতে পারে। তার গতিবিধি নজরদারি করে দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এদিকে ভুক্তভোগীরা জনসাধারণকে সতর্ক করেছেন, তানিয়া খানম ছনিয়ার মতো প্রতারকের ফাঁদে যেন কেউ না পড়েন। তার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন কিংবা সম্পর্ক গড়ার আগে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। কেউ তার সম্পর্কে তথ্য পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে বলেছেন তারা।

এ বিষয়ে তানিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগের বিষয়ে প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।