ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তি পাচ্ছে ‘রুম নম্বর ২০১১’ গণতন্ত্র ও বিএনপি সমান্তরাল : মির্জা ফখরুল আ.লীগ দেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল : তারেক রহমান

বিআইডব্লিউটিএ’র আরিফ দুর্নীতির রাজা

বিআইডব্লিউটিএ বাংলাদেশ সরকারের একটি শায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় কর্মকর্তা মিলে একটি শক্তিশালী দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রীকে ম্যানেজ করে লুটপাট চালাতো সিন্ডিকেটটি। এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা হচ্ছে এ. কে. এম আরিফ উদ্দিন, অতিরিক্ত পরিচালক, বন্দর ও পরিবহন বিভাগ।

তার নেতৃত্বে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাগণ পরস্পর যোগসাযোশে একের পর এক কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। ঘুরে ফিরে এরা এবং এদের গৃহপালিত কর্মকর্তাদেরকে প্রকল্প পরিচালক বানিয়ে কাজ না করেই হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়েছে। সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে নির্দিষ্ট অংশের লভ্যাংশ দিয়ে তারা এমন প্রকল্প নিয়েছে বলে জানা গেছে। সুত্র বলছে আওয়ামীলীগের সাবেক এই দুই মন্ত্রী বিআইডব্লিউটিএ থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পকেটে ঢুকিয়েছেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও অবৈধভাবে প্রকল্পের মেয়াদ এবং টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছে ইচ্ছামতো। বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকল্প যেন এদের টাকা কামানোর মেশিন। তার ফেসবুকীয় নাম আরিফ হাসনাত। পিতা: মৃত আলহাজ্ব আব্দুল করিম, গ্রাম : রায়পুর, থানা: সুজানগর, জেলা পাবনা। বর্তমানে তিনি বন্দর ও পরিবহন শাখার অতিরিক্ত পরিচালক এবং ল্যান্ড এন্ড এস্টেট শাখার পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) কর্মরত আছেন। আওয়ামীলীগ আমলে কট্টর আওয়ামীলীগার বনে যান তিনি। রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু নির্বাচিত হবার পর থেকে তিনি পাবনা জেলার সন্তান হিসেবে নিজেকে আরও সুপার পাওয়ার হিসেবে মনে করে দাপটের সাথে চলতে থাকেন।

ছাত্র-ঘনঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ছিল তার দারুন সখ্যতা। আরিফ উদ্দিন যতবার শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেছেন ততবারই নিজের ফেসবুকে সেই ছবি প্রচার করে নিজের দাপট দেখাতেন। শেখ হাসিনার জন্মদিনে তুরাগ নদীতে নৌকা বাইচের আয়োজন করে একদিকে শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে নিজেকে পরিচিতি লাভ করান, অন্যদিকে নিজের পকেটস্থ করেন সরকারি তহবিলের কোটি কোটি টাকা এবং একই সাথে শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপনের নামে বিআইডব্লিউটিএর স্টে হোল্ডার ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আরো অন্তত এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তার গ্রামের বাড়ি পাবনার সুজানগরের রায়পুর হলেও স্ত্রী শামীমা দীবা, ছেলে সাদ ও মেয়ে আরিন সবাই দেশের বাইরে বসবাসরত। এর মধ্যে তার স্ত্রী প্রায়ই যাতায়াতের মধ্যে থাকেন। এ কে এম আরিফ উদ্দিন বড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযানের নামে অন্তত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন বলে জনশ্রুতি আছে। এ ছাড়া এ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সকে না জানিয়ে নদীর সীমানা পিলার স্থাপন, নারায়ণগঞ্জের পাগলায় চায়না কোম্পানির দু’টি জাহাজ নিলামে দেয়া, গাবতলীতে ১৭টি ট্রাক নিলামে দেয়া, নারায়ণগঞ্জে তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা, মালিকানাধীন জমি সরকারি বলে অন্যত্র লিজ দেয়া, বন বিভাগের জমি বিক্রি করা, কয়েক ব্যক্তির কাছ থেকে চার কোটি টাকা ঘুষ নেয়া, পুরান ঢাকার ইসলামবাগে ১৮টি বৈধভবন মালিকের প্রতিপক্ষ লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সেসই ভবনগুলো ভাঙা, সদরঘাটে মসজিদ ভাঙা, লঞ্চের মাস্টারকে মারধর ও পিকনিকের লঞ্চে আর্মি অফিসার ও সচিবকে লাঞ্চিত করাসহ ব্যাপক অপকর্ম করেছেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের সাথে সাথে আরিফ উদ্দিন নিজেকে একটি বিশেষ দলের দুঃসময়ের কান্ডারি দাবি করছেন। সরেজমিনে যার সত্যতা পেয়েছে দৈনিক সকালের সময়ের বিশেষ টিম। অথচ তিনি আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কোটি কোটি টাকা ডোনেশন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ইতি মধ্যে সাবেক সৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিদের সাথে তোলা তার বেশ কিছু ছবিসহ তথ্য প্রমান হাতে এসেছে। তবে আরিফ উদ্দিন নিজ সার্থ হাসিলের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা নদী বন্দরে কর্মরত থাকাকালীন নিরীহদের উচ্ছেদ করলেও প্রভাবশালীদের ধারে কাছেও যাননি। কথায় কথায় মানুষকে মারধর করেছেন বলেও জানা যায়। এমনকি তার কথামতো কাজ না করলে মালিকানাধীন বৈধ ভবনও নিমিষের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে দ্বিধা করেননি। আবার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধ ভবন উচ্ছেদ না করাসহ নানা অপকর্মের কারণে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে কর্মকালীন সময়ে ২২টি মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। চার কোটি টাকা কন্ট্রাক্ট নিয়ে মদনগঞ্জ ট্রলার ঘাটের পাশে শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে মাহফুজুল ইসলামের আলিনা ডকইয়ার্ড ও শাকিলদের মুন্সি ডকইয়ার্ড অবৈধভাবে উচ্ছেদ করে কর্ণফুলী ডকইয়ার্ডকে জমি বুঝিয়ে দেন আরিফ উদ্দিন। এ ঘটনায় উচ্চ আদালতে রিট করেন মাহফুজুল ইসলাম। একপর্যায়ে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আরিফ উদ্দিন মীমাংসা করেন ডকইয়ার্ড মালিকদের সাথে। এতে মধ্যস্থতা করেন নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার তৎকালীন ওসি আবুল কালাম। আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ ডেক ইঞ্জিন পার্সোনেল ট্রেনিং সেন্টারের (ডিইপিটিসি) বহু গাছ কেটে আরেক ডকইয়ার্ড মালিকের কাছে জমি বুঝিয়ে দিলে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। কাঁচপুরে নদীতীরে বালু ভরাটের কাজে সহায়তার অভিযোগে মামলা হলে তাকে শোকজ করেন বিআইডব্লিউটিএর তখনকার চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক। বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মদনগঞ্জ, কাঁচপুর, ঢাকেশ্বরী, রূপগঞ্জ এলাকায় মানববন্ধন করে হাজারো মানুষ। ডকইয়ার্ড মালিক মাছুম, আবুল কালাম বসু, মাহফুজুল ইসলাম ও শাকিলসহ অনেক ভুক্তভোগী আরিফের অপকর্মের শিকার হয়ে পথে বসেছেন।

ঢাকা নদীবন্দর কর্মকর্তা থাকাকালীন রাজধানীর লালবাগের পূর্ব ইসলামবাগ এলাকায় প্রায় ১৮টি বৈধভবন উচ্ছেদ করেন আরিফ উদ্দিন। এসব ভবন ভাঙার আগে বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাসলাইন সংযোগ পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করেননি। এমনকি ভবনে বসবাসকারীদের নামারও সুযোগ দেননি। এসব ভবন ভাঙার সময় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। চকবাজার থানা এলাকার পূর্ব ইসলামবাগের ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬/২সি, ৫৮/৩, ৫৮/১, ৫৮/১২বি, ৫৭/১খ,৩৮/৩/৪ ও ৫৭/৩খ হোল্ডিং ছাড়াও ভবন মালিক আবুল হোসেন, তোফাজ্জেল, হাবিব তালুকদার, শাহ আলম, রওশানারা হোসেন, শহিদ ও নুরমোহাম্মদ জানান, তাদের ভবনগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাদের কাছে ভবনপ্রতি লাখ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করায় তা না দিতে পারার কারনে এমনটা করেছে বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালের ৫ আগস্ট সদরঘাটে বায়তুল নাজাত মসজিদ ও মাদরাসা ভাঙা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটান আরিফ। এ সময় পাঁচজন আহত হয়। মসজিদের দুইটি দোকান ও মাসে ৪০ হাজার টাকা দাবি করলে তা দিতে চাননি মসজিদ ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি ও লালবাগ জোনের ডিসির নেতৃত্বে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরের দিন মন্ত্রীর নির্দেশে সংস্কার করে দেয়া হয় মসজিদটি। মূলত: সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ছিলেন তার টাকায় কেনা মন্ত্রী। এই দুই মন্ত্রীর কেউই আরিফের বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থা নেননি।
সদরঘাট থেকে একটি সংগঠন দুইটি লঞ্চ নিয়ে চাঁদপুরের দিকে পিকনিকে যাওয়ার আগে পোর্ট অফিসার আরিফ হানা দেয় লঞ্চেটিতে। এ সময় আর্মি অফিসার, সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে লঞ্চ মাস্টারকে মারধরের পর লঞ্চের ঝাড়ু দিয়ে পোর্ট অফিসারকে পিটায় বলে জনশ্রুতি আছে। কিন্তু আরিফ উদ্দিন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় মন্ত্রণালয় বা বিআইডব্লিউটিএ থেকে কোনরকম পদক্ষেপ নেয়নি।
ইতি মধ্যে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে ভুক্তভোগীরা একাধিক অভিযোগ দাখিল করেছে। যার স্মারক নং- ০০.০১.২৬০০.৬০৩.০১.২৩৪.২৩-৩২১৭ এ দুর্নীতি দমন কশিনের উপ-পরিচালক মো: হাফিজুল ইসলাম (অনু ও তদন্ত-২) টিমের পক্ষ থেকে ০৩/০৯/২০২৩ ইং তারিখে পরিচালক (প্রশাসন) বিআইডব্লিউটিএ বরাবরে এক পত্রে একেএম আরিফ উদ্দিন ওরফে আরিফ হাসনাত, যুগ্ম পরিচালক, বন্দর ও পরিবহন বিভাগ, বিআইডব্লিউটিএ, ঢাকা কর্তৃক নানাবিধ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সুষ্ঠ অনুসন্ধানের জন্য মাঠে নামে। দুদকের চাহিদা পত্রে যে সমস্ত কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে তা হলো বিআইডব্লিউটিএ আওতাধীন নারায়নগঞ্জ পোর্ট হইতে ১/১/১৯-৩১/১২/২২ তারিখ সময়ে সদরঘাট পোর্ট হতে ১/১/২০২০-৩১/১২/২২ তারিখ সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক খাতের হিসাবের বিবরনী চাওয়া হয় এ ছাড়াও জনাব আরিফ হাসনাতের ব্যক্তিগত নথি, উত্তোলিত বেতন ভাতার বিবরন (শুরু হইতে জুন/২৩ সময় পর্যন্ত) দায় দায়িত্ব সম্পর্কীত অফিস আদেশ সমূহ তার নিজ স্ত্রী/সন্তান/ভাই গনের নামে ব্যবসা/শেয়ার পরিচালনায় আবেদন এবং অনুমোদন সংক্রান্ত সমুদয় রেকর্ডপত্র। এ.কে.এম আরিফ উদ্দিন ঢাকার ৩০১ এলিফ্যান্ট রোডে তার স্ত্রী শামীমার নামে রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ী, বারিধারা বসুন্ধরাতে ব্লক সি তিনি প্রসাদতম ফ্ল্যাটে বসবাস করে, পাশে ১টি ফ্ল্যাট ক্রয় করে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। এছাড়াও তার নামে ও তার পরিবারের নামে পাবনাতে রয়েছে অসংখ্য সম্পত্তি, সুজানগর পাবনাতে রয়েছে অঢেল সম্পদ। পূর্বাচলে প্লট, বসুন্ধরা অংশীদারিত্বে ১টি বিল্ডিং এর কাজ চলমান। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করার পর শাজাহান খান নৌপরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে আর পেছন ফিরে তাকানো লাগেনি আরিফ উদ্দিনের। একটানা বন্দর ও পরিবহন বিভাগে চাকরী করে আসছেন। নারায়ণগঞ্জ এবং সদরঘাটে থাকাকালীন সময়ে ঘাট ইজারা দিয়ে, ফোরশোর লীজ এবং ঘাটের ইজারাদারকে দিয়ে কোর্টে মামলা দিয়ে ইজারার পরিবর্তে ঘাট খাওয়ানোর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেন। ছেলে আমেরিকা এবং মেয়েকে লন্ডনে পড়াশোনা করাচ্ছেন আরিফ উদ্দিন। নতুন করে তার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ দাখিল হয়েছে গত ২৮-০৮-২৪ বুধবার মোঃ জাকির হোসেন নামক জনৈক ব্যক্তি বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। সেখানেও তার সম্পদের বিবরন তুলে ধরা হয়েছে এভাবে সে গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছে। এছাড়াও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছাত্রদের কোটা বিরোধী আন্দোলনে ব্যবহার করেছে। যা সঠিকভাবে তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে। তার সম্পদের

১. নারায়নগঞ্জ পোর্টে ৪ বছর চাকুরি করে ২০০ কোটি টাকা সম্পদ অর্জন।
২. স্ত্রীর নামে কর্ণফুলি শিপইয়ার্ড নারায়নগঞ্জের শেয়ার রয়েছে।
৩. স্ত্রীর নামে নারায়নগঞ্জ পোর্টে রয়েছে ডকইয়ার্ড।
৪. সদরঘাট পোর্টে চাকুরিকালীন সময়ে কয়েকশো কোটি টাকা লোপাট।
৫. দুই স্ত্রীর নামে রয়েছে এলিফ্যান্ট রোর্ডে ৫ তলা কমার্শিয়াল বিল্ডিং, বসুন্ধরায় জমি, ফ্ল্যাটসহ শত কোটি টাকার সম্পদ। ভাইয়ের নামে বিপুল সম্পদ।
৬. ঢাকার নদী উদ্ধারের নামে কয়েকশো কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন।

৭. দুই স্ত্রী ছাড়াও অসংখ্য গার্লফেন্ড।

৮. ব্রিটেনে বাড়ি এবং বিপুল অর্থ পাচার করেছে।

৯. কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক।

১০. ছেলে-মেয়েদের লন্ডনে পড়াশোনার পিছনে বছরে কোটি টাকা খরচ করে।

১১. পাবনা সদর, স্কয়ার রোড,শালগাড়িয়া,পাবনাতে ৬ তলা বাড়ি।
১২. পাবনা সদর, কাচারী পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি।
১৩. পাবনা সদর, সাধুপাড়ায় ৪ তলা বাড়ি।
১৪. আলিশান বাড়ি ক্রয়: মালিকের নাম নাদিরা, বাড়ি নং ৩৭,রোড নং -৪, ব্লক-সি, ওয়ার্ড -৩০, মনসুরাবাদ হাউজিং মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

১৫. ফ্ল্যাট নং- ৪৭/৫৫
রোড- ২/এ
ব্লক- সি
৩৬০০ স্কয়ার ফিট।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা, বর্তমান এখানে বসবাস করছেন।

১৬. বাড়ি নং ৩০১, মুল্য ২২ কোটি টাকা। এলিফেন্ট রোড, ঢাকা। এই বাড়িটি স্ত্রীর নাম ক্রয় করেছেন।

১৭. বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বিল্ডিং এ ৮ টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। ব্লকঃ বি-হোল্ডিং নং-৪৭,৪৮,৫২,৪১।

১৮. নিজ জেলা পাবনা সুজা নগর মৌজা-বনখোলা,ঘেতুপাড়া, রামপুর, হাটখালি, খেতুপাড়া এলাকায় জমি কিনেছেন প্রায় ২০০ বিঘা।
১৯. তিনি যেখানে অফিস করেন সেখানে তিনটি রুম ডেকোরেশন করে এসি লাগিয়েছেন। খরচ করেছেন ২৪/২৫ লক্ষ টাকা। অথচ: সেখানে তিনি বসেন না।

এছাড়াও ঢাকার নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের স্থাপনা উচ্ছেদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হাজার কোটি টাকা আয় করেন আরিফ হাসনাত। এ সকল অভিযোগের সত্যতা জানতে ফোন করা হলে তিনি বলেন এসকল সম্পত্তি আমার নয় ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

বিআইডব্লিউটিএ’র আরিফ দুর্নীতির রাজা

আপডেট সময় ১১:৩৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিআইডব্লিউটিএ বাংলাদেশ সরকারের একটি শায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় কর্মকর্তা মিলে একটি শক্তিশালী দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রীকে ম্যানেজ করে লুটপাট চালাতো সিন্ডিকেটটি। এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা হচ্ছে এ. কে. এম আরিফ উদ্দিন, অতিরিক্ত পরিচালক, বন্দর ও পরিবহন বিভাগ।

তার নেতৃত্বে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাগণ পরস্পর যোগসাযোশে একের পর এক কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। ঘুরে ফিরে এরা এবং এদের গৃহপালিত কর্মকর্তাদেরকে প্রকল্প পরিচালক বানিয়ে কাজ না করেই হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়েছে। সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে নির্দিষ্ট অংশের লভ্যাংশ দিয়ে তারা এমন প্রকল্প নিয়েছে বলে জানা গেছে। সুত্র বলছে আওয়ামীলীগের সাবেক এই দুই মন্ত্রী বিআইডব্লিউটিএ থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পকেটে ঢুকিয়েছেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও অবৈধভাবে প্রকল্পের মেয়াদ এবং টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছে ইচ্ছামতো। বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকল্প যেন এদের টাকা কামানোর মেশিন। তার ফেসবুকীয় নাম আরিফ হাসনাত। পিতা: মৃত আলহাজ্ব আব্দুল করিম, গ্রাম : রায়পুর, থানা: সুজানগর, জেলা পাবনা। বর্তমানে তিনি বন্দর ও পরিবহন শাখার অতিরিক্ত পরিচালক এবং ল্যান্ড এন্ড এস্টেট শাখার পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) কর্মরত আছেন। আওয়ামীলীগ আমলে কট্টর আওয়ামীলীগার বনে যান তিনি। রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু নির্বাচিত হবার পর থেকে তিনি পাবনা জেলার সন্তান হিসেবে নিজেকে আরও সুপার পাওয়ার হিসেবে মনে করে দাপটের সাথে চলতে থাকেন।

ছাত্র-ঘনঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ছিল তার দারুন সখ্যতা। আরিফ উদ্দিন যতবার শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেছেন ততবারই নিজের ফেসবুকে সেই ছবি প্রচার করে নিজের দাপট দেখাতেন। শেখ হাসিনার জন্মদিনে তুরাগ নদীতে নৌকা বাইচের আয়োজন করে একদিকে শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে নিজেকে পরিচিতি লাভ করান, অন্যদিকে নিজের পকেটস্থ করেন সরকারি তহবিলের কোটি কোটি টাকা এবং একই সাথে শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপনের নামে বিআইডব্লিউটিএর স্টে হোল্ডার ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আরো অন্তত এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তার গ্রামের বাড়ি পাবনার সুজানগরের রায়পুর হলেও স্ত্রী শামীমা দীবা, ছেলে সাদ ও মেয়ে আরিন সবাই দেশের বাইরে বসবাসরত। এর মধ্যে তার স্ত্রী প্রায়ই যাতায়াতের মধ্যে থাকেন। এ কে এম আরিফ উদ্দিন বড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযানের নামে অন্তত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন বলে জনশ্রুতি আছে। এ ছাড়া এ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সকে না জানিয়ে নদীর সীমানা পিলার স্থাপন, নারায়ণগঞ্জের পাগলায় চায়না কোম্পানির দু’টি জাহাজ নিলামে দেয়া, গাবতলীতে ১৭টি ট্রাক নিলামে দেয়া, নারায়ণগঞ্জে তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা, মালিকানাধীন জমি সরকারি বলে অন্যত্র লিজ দেয়া, বন বিভাগের জমি বিক্রি করা, কয়েক ব্যক্তির কাছ থেকে চার কোটি টাকা ঘুষ নেয়া, পুরান ঢাকার ইসলামবাগে ১৮টি বৈধভবন মালিকের প্রতিপক্ষ লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সেসই ভবনগুলো ভাঙা, সদরঘাটে মসজিদ ভাঙা, লঞ্চের মাস্টারকে মারধর ও পিকনিকের লঞ্চে আর্মি অফিসার ও সচিবকে লাঞ্চিত করাসহ ব্যাপক অপকর্ম করেছেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের সাথে সাথে আরিফ উদ্দিন নিজেকে একটি বিশেষ দলের দুঃসময়ের কান্ডারি দাবি করছেন। সরেজমিনে যার সত্যতা পেয়েছে দৈনিক সকালের সময়ের বিশেষ টিম। অথচ তিনি আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কোটি কোটি টাকা ডোনেশন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ইতি মধ্যে সাবেক সৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিদের সাথে তোলা তার বেশ কিছু ছবিসহ তথ্য প্রমান হাতে এসেছে। তবে আরিফ উদ্দিন নিজ সার্থ হাসিলের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা নদী বন্দরে কর্মরত থাকাকালীন নিরীহদের উচ্ছেদ করলেও প্রভাবশালীদের ধারে কাছেও যাননি। কথায় কথায় মানুষকে মারধর করেছেন বলেও জানা যায়। এমনকি তার কথামতো কাজ না করলে মালিকানাধীন বৈধ ভবনও নিমিষের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে দ্বিধা করেননি। আবার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধ ভবন উচ্ছেদ না করাসহ নানা অপকর্মের কারণে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে কর্মকালীন সময়ে ২২টি মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। চার কোটি টাকা কন্ট্রাক্ট নিয়ে মদনগঞ্জ ট্রলার ঘাটের পাশে শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে মাহফুজুল ইসলামের আলিনা ডকইয়ার্ড ও শাকিলদের মুন্সি ডকইয়ার্ড অবৈধভাবে উচ্ছেদ করে কর্ণফুলী ডকইয়ার্ডকে জমি বুঝিয়ে দেন আরিফ উদ্দিন। এ ঘটনায় উচ্চ আদালতে রিট করেন মাহফুজুল ইসলাম। একপর্যায়ে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আরিফ উদ্দিন মীমাংসা করেন ডকইয়ার্ড মালিকদের সাথে। এতে মধ্যস্থতা করেন নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার তৎকালীন ওসি আবুল কালাম। আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ ডেক ইঞ্জিন পার্সোনেল ট্রেনিং সেন্টারের (ডিইপিটিসি) বহু গাছ কেটে আরেক ডকইয়ার্ড মালিকের কাছে জমি বুঝিয়ে দিলে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। কাঁচপুরে নদীতীরে বালু ভরাটের কাজে সহায়তার অভিযোগে মামলা হলে তাকে শোকজ করেন বিআইডব্লিউটিএর তখনকার চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক। বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মদনগঞ্জ, কাঁচপুর, ঢাকেশ্বরী, রূপগঞ্জ এলাকায় মানববন্ধন করে হাজারো মানুষ। ডকইয়ার্ড মালিক মাছুম, আবুল কালাম বসু, মাহফুজুল ইসলাম ও শাকিলসহ অনেক ভুক্তভোগী আরিফের অপকর্মের শিকার হয়ে পথে বসেছেন।

ঢাকা নদীবন্দর কর্মকর্তা থাকাকালীন রাজধানীর লালবাগের পূর্ব ইসলামবাগ এলাকায় প্রায় ১৮টি বৈধভবন উচ্ছেদ করেন আরিফ উদ্দিন। এসব ভবন ভাঙার আগে বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাসলাইন সংযোগ পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করেননি। এমনকি ভবনে বসবাসকারীদের নামারও সুযোগ দেননি। এসব ভবন ভাঙার সময় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। চকবাজার থানা এলাকার পূর্ব ইসলামবাগের ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬/২সি, ৫৮/৩, ৫৮/১, ৫৮/১২বি, ৫৭/১খ,৩৮/৩/৪ ও ৫৭/৩খ হোল্ডিং ছাড়াও ভবন মালিক আবুল হোসেন, তোফাজ্জেল, হাবিব তালুকদার, শাহ আলম, রওশানারা হোসেন, শহিদ ও নুরমোহাম্মদ জানান, তাদের ভবনগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাদের কাছে ভবনপ্রতি লাখ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করায় তা না দিতে পারার কারনে এমনটা করেছে বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালের ৫ আগস্ট সদরঘাটে বায়তুল নাজাত মসজিদ ও মাদরাসা ভাঙা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটান আরিফ। এ সময় পাঁচজন আহত হয়। মসজিদের দুইটি দোকান ও মাসে ৪০ হাজার টাকা দাবি করলে তা দিতে চাননি মসজিদ ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি ও লালবাগ জোনের ডিসির নেতৃত্বে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরের দিন মন্ত্রীর নির্দেশে সংস্কার করে দেয়া হয় মসজিদটি। মূলত: সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ছিলেন তার টাকায় কেনা মন্ত্রী। এই দুই মন্ত্রীর কেউই আরিফের বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থা নেননি।
সদরঘাট থেকে একটি সংগঠন দুইটি লঞ্চ নিয়ে চাঁদপুরের দিকে পিকনিকে যাওয়ার আগে পোর্ট অফিসার আরিফ হানা দেয় লঞ্চেটিতে। এ সময় আর্মি অফিসার, সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে লঞ্চ মাস্টারকে মারধরের পর লঞ্চের ঝাড়ু দিয়ে পোর্ট অফিসারকে পিটায় বলে জনশ্রুতি আছে। কিন্তু আরিফ উদ্দিন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় মন্ত্রণালয় বা বিআইডব্লিউটিএ থেকে কোনরকম পদক্ষেপ নেয়নি।
ইতি মধ্যে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে ভুক্তভোগীরা একাধিক অভিযোগ দাখিল করেছে। যার স্মারক নং- ০০.০১.২৬০০.৬০৩.০১.২৩৪.২৩-৩২১৭ এ দুর্নীতি দমন কশিনের উপ-পরিচালক মো: হাফিজুল ইসলাম (অনু ও তদন্ত-২) টিমের পক্ষ থেকে ০৩/০৯/২০২৩ ইং তারিখে পরিচালক (প্রশাসন) বিআইডব্লিউটিএ বরাবরে এক পত্রে একেএম আরিফ উদ্দিন ওরফে আরিফ হাসনাত, যুগ্ম পরিচালক, বন্দর ও পরিবহন বিভাগ, বিআইডব্লিউটিএ, ঢাকা কর্তৃক নানাবিধ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সুষ্ঠ অনুসন্ধানের জন্য মাঠে নামে। দুদকের চাহিদা পত্রে যে সমস্ত কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে তা হলো বিআইডব্লিউটিএ আওতাধীন নারায়নগঞ্জ পোর্ট হইতে ১/১/১৯-৩১/১২/২২ তারিখ সময়ে সদরঘাট পোর্ট হতে ১/১/২০২০-৩১/১২/২২ তারিখ সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক খাতের হিসাবের বিবরনী চাওয়া হয় এ ছাড়াও জনাব আরিফ হাসনাতের ব্যক্তিগত নথি, উত্তোলিত বেতন ভাতার বিবরন (শুরু হইতে জুন/২৩ সময় পর্যন্ত) দায় দায়িত্ব সম্পর্কীত অফিস আদেশ সমূহ তার নিজ স্ত্রী/সন্তান/ভাই গনের নামে ব্যবসা/শেয়ার পরিচালনায় আবেদন এবং অনুমোদন সংক্রান্ত সমুদয় রেকর্ডপত্র। এ.কে.এম আরিফ উদ্দিন ঢাকার ৩০১ এলিফ্যান্ট রোডে তার স্ত্রী শামীমার নামে রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ী, বারিধারা বসুন্ধরাতে ব্লক সি তিনি প্রসাদতম ফ্ল্যাটে বসবাস করে, পাশে ১টি ফ্ল্যাট ক্রয় করে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। এছাড়াও তার নামে ও তার পরিবারের নামে পাবনাতে রয়েছে অসংখ্য সম্পত্তি, সুজানগর পাবনাতে রয়েছে অঢেল সম্পদ। পূর্বাচলে প্লট, বসুন্ধরা অংশীদারিত্বে ১টি বিল্ডিং এর কাজ চলমান। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করার পর শাজাহান খান নৌপরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে আর পেছন ফিরে তাকানো লাগেনি আরিফ উদ্দিনের। একটানা বন্দর ও পরিবহন বিভাগে চাকরী করে আসছেন। নারায়ণগঞ্জ এবং সদরঘাটে থাকাকালীন সময়ে ঘাট ইজারা দিয়ে, ফোরশোর লীজ এবং ঘাটের ইজারাদারকে দিয়ে কোর্টে মামলা দিয়ে ইজারার পরিবর্তে ঘাট খাওয়ানোর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেন। ছেলে আমেরিকা এবং মেয়েকে লন্ডনে পড়াশোনা করাচ্ছেন আরিফ উদ্দিন। নতুন করে তার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ দাখিল হয়েছে গত ২৮-০৮-২৪ বুধবার মোঃ জাকির হোসেন নামক জনৈক ব্যক্তি বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। সেখানেও তার সম্পদের বিবরন তুলে ধরা হয়েছে এভাবে সে গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছে। এছাড়াও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছাত্রদের কোটা বিরোধী আন্দোলনে ব্যবহার করেছে। যা সঠিকভাবে তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে। তার সম্পদের

১. নারায়নগঞ্জ পোর্টে ৪ বছর চাকুরি করে ২০০ কোটি টাকা সম্পদ অর্জন।
২. স্ত্রীর নামে কর্ণফুলি শিপইয়ার্ড নারায়নগঞ্জের শেয়ার রয়েছে।
৩. স্ত্রীর নামে নারায়নগঞ্জ পোর্টে রয়েছে ডকইয়ার্ড।
৪. সদরঘাট পোর্টে চাকুরিকালীন সময়ে কয়েকশো কোটি টাকা লোপাট।
৫. দুই স্ত্রীর নামে রয়েছে এলিফ্যান্ট রোর্ডে ৫ তলা কমার্শিয়াল বিল্ডিং, বসুন্ধরায় জমি, ফ্ল্যাটসহ শত কোটি টাকার সম্পদ। ভাইয়ের নামে বিপুল সম্পদ।
৬. ঢাকার নদী উদ্ধারের নামে কয়েকশো কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন।

৭. দুই স্ত্রী ছাড়াও অসংখ্য গার্লফেন্ড।

৮. ব্রিটেনে বাড়ি এবং বিপুল অর্থ পাচার করেছে।

৯. কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক।

১০. ছেলে-মেয়েদের লন্ডনে পড়াশোনার পিছনে বছরে কোটি টাকা খরচ করে।

১১. পাবনা সদর, স্কয়ার রোড,শালগাড়িয়া,পাবনাতে ৬ তলা বাড়ি।
১২. পাবনা সদর, কাচারী পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি।
১৩. পাবনা সদর, সাধুপাড়ায় ৪ তলা বাড়ি।
১৪. আলিশান বাড়ি ক্রয়: মালিকের নাম নাদিরা, বাড়ি নং ৩৭,রোড নং -৪, ব্লক-সি, ওয়ার্ড -৩০, মনসুরাবাদ হাউজিং মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

১৫. ফ্ল্যাট নং- ৪৭/৫৫
রোড- ২/এ
ব্লক- সি
৩৬০০ স্কয়ার ফিট।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা, বর্তমান এখানে বসবাস করছেন।

১৬. বাড়ি নং ৩০১, মুল্য ২২ কোটি টাকা। এলিফেন্ট রোড, ঢাকা। এই বাড়িটি স্ত্রীর নাম ক্রয় করেছেন।

১৭. বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বিল্ডিং এ ৮ টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। ব্লকঃ বি-হোল্ডিং নং-৪৭,৪৮,৫২,৪১।

১৮. নিজ জেলা পাবনা সুজা নগর মৌজা-বনখোলা,ঘেতুপাড়া, রামপুর, হাটখালি, খেতুপাড়া এলাকায় জমি কিনেছেন প্রায় ২০০ বিঘা।
১৯. তিনি যেখানে অফিস করেন সেখানে তিনটি রুম ডেকোরেশন করে এসি লাগিয়েছেন। খরচ করেছেন ২৪/২৫ লক্ষ টাকা। অথচ: সেখানে তিনি বসেন না।

এছাড়াও ঢাকার নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের স্থাপনা উচ্ছেদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হাজার কোটি টাকা আয় করেন আরিফ হাসনাত। এ সকল অভিযোগের সত্যতা জানতে ফোন করা হলে তিনি বলেন এসকল সম্পত্তি আমার নয় ।