ঢাকা ১১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুর্নীতিকে কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না – বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সমাজকল্যাণমন্ত্রীর আশীর্বাদে মিজানের সম্পদের পাহাড় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির উদ্দেগে ২৮ শে ডিসেম্বর মহা সন্মেলনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্টিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে বিস্ফোরণ, আহত ১২ বেলাবতে তারেক রহমানের ১৭তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে শীর্ষক আলোচনা দীর্ঘ সাত বছর পর আজ ৭ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে আসেন ডুবাই প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরনবী ভুইয়া ক্রেস্ট কেলেঙ্কারির বাবুলের ১ সপ্তাহে তিন পদোন্নতি গোয়াইনঘাটে ৯০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ: ধরা যায়নি কাউকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব মহাসড়কে ঘুস আদায়, ১১ ট্রাফিক গ্রেফতার

ধার দিয়েই আয় ৪০ হাজার কোটি টাকা

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিচালন ব্যয় বাদে নিট মুনাফা হয়েছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংক সবচেয়ে বেশি আয় করেছে রেপো, স্পেশাল রেপো এবং বিভিন্ন ব্যাংককে দেওয়া স্বল্পমেয়াদি ধারের বিপরীতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত অর্থবছর ৩২ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে। যা আগের সাত বছরে দেওয়া মোট ধারের পরিমাণকে ছাড়িয়ে গেছে।
এরই মধ্যে গত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব বিবরণী অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। বিবরণী অনুসারে, সব ধরনের খরচের পর গত অর্থবছর নিট আয় থেকে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সরকারি কোষাগারে। তার আগের অর্থবছরের নিট মুনাফা হয় ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ দেখানো হয় ৯৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে দেখানো হয় ৯৭ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা।

আর বাংলাদেশ ব্যাংকে ঋণ না বেড়ে উলটো ৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা কমেছে। তবে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে তথ্য গোপন করে ৬২ দিনে সরকারকে টাকা ছাপিয়ে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদনে দেখাচ্ছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক থেকে নিট ঋণ ছিল ৮২ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি ঋণ সরবরাহ করলে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। এমনিতেই এখন ১১ শতাংশের ওপরে মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে এভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ সরবরাহ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেন অর্থনীতিবিদরা। অবশ্য গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে ঋণ সরবরাহ না করারই প্রতিশ্রতি দিয়েছিল।

বৈদেশিক মুদ্রার চরম সংকটের কারণে গত অর্থবছরও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে। আগের অর্থবছর বিক্রি করে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। আবার এ সময়ে টাকার বিপরীতে ডলারের দর অনেক বেড়েছে।

সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা খাত থেকে ভালো আয় হয়েছে। ডলার বিক্রির কারণে অবশ্য দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপক কমে এখন আইএমএফের বিপিএম-৬ অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। যদিও নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করেছে। সরকারের আমদানি চাহিদা আন্তঃব্যাংক থেকে সংগ্রহ করে দিচ্ছে।

প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা ছাপলে তার পরিণতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রয়োজনের বেশি আর টাকা ছাপানো হবে না। কারণ, সেটা জাতির জন্য ভালো হবে না। তখন মূল্যস্ফীতি ১০০ শতাংশ হয়ে যাবে। সরকার কিংবা ব্যাংক অতিরিক্ত টাকা ছাপিয়ে কাউকে দেওয়া হবে না।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতিকে কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না – বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ধার দিয়েই আয় ৪০ হাজার কোটি টাকা

আপডেট সময় ১১:৩০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিচালন ব্যয় বাদে নিট মুনাফা হয়েছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংক সবচেয়ে বেশি আয় করেছে রেপো, স্পেশাল রেপো এবং বিভিন্ন ব্যাংককে দেওয়া স্বল্পমেয়াদি ধারের বিপরীতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত অর্থবছর ৩২ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে। যা আগের সাত বছরে দেওয়া মোট ধারের পরিমাণকে ছাড়িয়ে গেছে।
এরই মধ্যে গত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব বিবরণী অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। বিবরণী অনুসারে, সব ধরনের খরচের পর গত অর্থবছর নিট আয় থেকে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সরকারি কোষাগারে। তার আগের অর্থবছরের নিট মুনাফা হয় ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ দেখানো হয় ৯৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে দেখানো হয় ৯৭ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা।

আর বাংলাদেশ ব্যাংকে ঋণ না বেড়ে উলটো ৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা কমেছে। তবে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে তথ্য গোপন করে ৬২ দিনে সরকারকে টাকা ছাপিয়ে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদনে দেখাচ্ছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক থেকে নিট ঋণ ছিল ৮২ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি ঋণ সরবরাহ করলে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। এমনিতেই এখন ১১ শতাংশের ওপরে মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে এভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ সরবরাহ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেন অর্থনীতিবিদরা। অবশ্য গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে ঋণ সরবরাহ না করারই প্রতিশ্রতি দিয়েছিল।

বৈদেশিক মুদ্রার চরম সংকটের কারণে গত অর্থবছরও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে। আগের অর্থবছর বিক্রি করে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। আবার এ সময়ে টাকার বিপরীতে ডলারের দর অনেক বেড়েছে।

সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা খাত থেকে ভালো আয় হয়েছে। ডলার বিক্রির কারণে অবশ্য দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপক কমে এখন আইএমএফের বিপিএম-৬ অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। যদিও নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করেছে। সরকারের আমদানি চাহিদা আন্তঃব্যাংক থেকে সংগ্রহ করে দিচ্ছে।

প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা ছাপলে তার পরিণতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রয়োজনের বেশি আর টাকা ছাপানো হবে না। কারণ, সেটা জাতির জন্য ভালো হবে না। তখন মূল্যস্ফীতি ১০০ শতাংশ হয়ে যাবে। সরকার কিংবা ব্যাংক অতিরিক্ত টাকা ছাপিয়ে কাউকে দেওয়া হবে না।