ঢাকার ধামরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধা বহুমুখী সমাবায় সমিতি লিমিটেডের কার্যালয়ের তালা ভেঙে দুর্বৃত্তরা কাগজপত্র তছনছ ও লুট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) দিবাগত রাতে ধামরাই পৌরসভার ধামরাই বাজারের গোপনগর এলাকায় ওই কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, গত ৫-৬ বছর আগে দুই তলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা নিয়মিত এখানে আসেন। গতকালও যথারীতি এটি তালা দিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সকালের দিকে ভবনের সামনে থাকা একটি রুটির দোকানের মালিক জানান, ভবনের তালা ভাঙা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। তাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন।
সরেজমিনে ওই কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দুই তলা বিশিষ্ট ভবনের নিচতলায় কাঠের প্রধান দরজাটির হ্যাজবল ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে থাকা তালাটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভবনে ঢুকে বাম পাশে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের বসার কক্ষ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কাগজপত্র। এটির ভেতরে থাকা কাগজপত্র রাখার আলমিরাটি খোলা অবস্থায় দেখা যায়। এটির ভেতরে সিন্দুকের তালা ভাঙা ও ভেতরে থাকা আরও দুটি ড্রয়ারের তালা ভাঙা দেখা যায়। তবে ওপরের তলায় বা অন্য কোনো কক্ষে কোনো ভাংচুরের দৃশ্য দেখা যায়নি।
ধামরাই থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেন, ‘রাতে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে কাগজপত্র নিয়ে গেছে। তছনছ করেছে। আমরা খবর পেয়ে এসে এসব দেখতে পাই। থানায় মামলা হচ্ছে। কাগজপত্র অনেককিছু ছিঁড়ে ফেলেছে। আর্থিক ক্ষতি পরিমাণ বলা যাবে না, কিন্তু বহু কাগজপত্র নষ্ট হয়েছে। দরজাগুলো ভাংচুর হয়েছে। সেগুলো নষ্ট হয়েছে। আলমিরা ভাঙা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো শত্রু নেই। গতকাল জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা হলো। এই ঘটনার সঙ্গে হয়তো তাদের সম্পৃক্ততাও থাকতে পারে। যথাযথ তদন্ত হচ্ছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে।’
ধামরাই থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘রাতের বেলা তালা ভেঙে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ঢুকেছে। সেখানকার কিছু জিনিসপত্র তছনছ করেছে। ওখানে ক্যামেরা বা নাইটগার্ড ছিল না। সংসদ সদস্য ও থানা পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। সেখানে ভাংচুর ও তছনছ হয়েছে। তবে তেমন কিছু লুটপাট হয়নি। তবুও এই সময়ে কারা ঢুকেছে, কেন ঢুকেছে এসব বিষয় তদন্ত করে দেখছি। এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা ভবনটি পরিদর্শন করেছি। কে বা কারা রাতে তালা ভেঙেছে। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশকে নিরাপত্তা দেখার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
ঢাকা-২০ ধামরাই আসনের সংসদ সদস্য বেনজির আহমদ বলেন, ‘গতকাল রাতে চারটা তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে। ভাংচুর করেছে। তছনছ করেছে। কিছু কাগজপত্র নিয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদে লুট করা, আক্রমণ করা এটা স্বাধীনতা বিরোধীদের কাজ। স্বাধীনতা যারা মানে না, মুক্তিযোদ্ধাদের সহ্য করতে পারে না তারাই এটা করতে পারে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।’