বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শান্তি বজায় রাখতে ও উত্তেজনা কমাতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে তারা সমর্থন করেন।
মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ম্যাথিউ মিলারের কাছে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় প্রাণহানি বিষয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক।
জবাবে মিলার বলেন, বাংলাদেশের ঘটনা আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা শান্তি বজায় রাখতে ও উত্তেজনা কমাতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি আগেও বলেছি, আমরা সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাই। সেটা যেমন সহিংসতাই হোক—শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা হোক বা সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা হোক। আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সমর্থন করি। কিন্তু সব অবস্থায় বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হতে হবে। আর সরকারকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাংলাদেশজুড়ে টেলিযোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার খবরে গভীর উদ্বেগ জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র। তিনি বলেন, এর ফলে বাংলাদেশে অবস্থানরত আমেরিকার নাগরিকসহ দেশটির মানুষের জরুরি তথ্য পাওয়ার সুযোগ সীমিত হয়েছে। এটা এমন একটি বিষয় যা অন্যান্য দেশে ঘটলে তার বিরুদ্ধে আমরা কথা বলেছি এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও বলছি। আমরা এই উদ্বেগ জানিয়ে যাব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করার আহ্বান জানায়। আমরা স্পষ্টভাবে বলি, বিশ্বের যে কোনো জায়গায় দেশগুলো যখন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো ধারণ করে, তখনই সেসব দেশ সবচেয়ে শক্তিশালী হয়। এটাই আমরা অব্যাহত রাখব। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের কর্মপদ্ধতি এই নীতি দ্বারাই পরিচালিত হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, আমরা আমাদের অগ্রাধিকারের কথা, আমাদের মূল্যবোধের কথা অব্যাহতভাবে বলতে থাকব। যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের কোনো দেশ বা অন্য কোনো দেশ যা ভাবে বা কোনো পরিস্থিতি এভাবে সামলানো উচিত বলে মনে করে, তা কি বিশ্বের সব দেশ হুবহু মেনে চলবে? অবশ্যই না। সার্বভৌম সব দেশ নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেয়।
ওই সাংবাদিক বাংলাদেশে বিক্ষোভ দমনে জাতিসংঘের লোগো-সংবলিত গাড়ি ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন করলে ম্যাথিউ মিলার বলেন, এ সম্পর্কে আমাদের হাতে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। আপনি জাতিসংঘের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইতে পারেন।
এদিকে মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্রেটিক দলের নেতা চাক শুমার গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমি গভীর উদ্বেগ নিয়ে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভের অধিকার যেকোনো গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি। সহিংসভাবে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমন করাটা ভুল এবং তা আরও অস্থিরতা তৈরি করবে।