ঢাকা ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিএনপি এক ব্যক্তির শাসন দেখতে চায় নাশহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি গণতন্ত্র কিংবা অন্য কোন মানব রচিত ব্যবস্থার মাধ্যমে দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্ত কল্যাণকর সমাজ এবং রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়- আমীর, ইসলামী সমাজ। ঈশ্বরদীর আরামবাড়িয়া বাজারে গুলি: যুবদল কর্মী বিপু গুলিবিদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভায় সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। ফের বাড়ল সোনার দাম মুসলমানদেরকে শিরক মুক্ত ঈমান ও ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তোষ অর্জন করতে হবে ভোলায় গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সংগ্রহের লিফলেট বিতরণ মধ্যরাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ঝটিকা মিছিল নভেম্বরেও হচ্ছে না হামজার অভিষেক! ইউএনও’র বাসভবনে সিন্দুক ভরা পোড়া টাকার ভিডিও ভাইরাল, সমালোচনা

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হোটেল শেরাটন ভবন, বিমান চলাচলে ঝুঁকি

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজধানীর বনানীতে সরকারি জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে ২৮ তলা হোটেল শেরাটন। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করলেও নেয়া হয়নি শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা। বিমানবন্দরের রানওয়ের অ্যাপ্রোচ ফানেল এলাকায় প্রায় ৬০০ ফুট উচ্চ ভবনটি বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ সিভিল এভিয়েশনের।

নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেট হোটেল শেরাটনের মালিকেরই প্রতিষ্ঠান। ছবি: সময় সংবাদ
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেট হোটেল শেরাটনের মালিকেরই প্রতিষ্ঠান। ছবি: সময় সংবাদ
আতাউর কাওসার

বনানী থেকে গুলশান-২ যাওয়ার পথে সিটি করপোরেশন মার্কেটের সামনের খালি অংশে নির্মিত ভবনটিই হোটেল শেরাটন।

অভিযোগ আছে, মার্কেট ও আবাসিক মিলিয়ে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ১৪তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি হয়। কিন্তু করপোরেশনের কর্তা ব্যক্তিদের সহায়তায় দুধাপে ২৮ তলা পর্যন্ত পৌঁছে যায় শেরাটন কর্তৃপক্ষ। বাকি ১৪ তলা করতে কোনো রকম আনুষ্ঠানিক অনুমতি নেয়নি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেট, যা আবার হোটেল শেরাটনের মালিকেরই প্রতিষ্ঠান। ভবনটি নির্মাণকালে এ চুক্তি ভঙ্গ করলেও শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি সিটি করপোরেশন।

শুধু এ বিষয়েই নয়, গেলো এক দশকে চুক্তি অনুযায়ী ১৪ তলা অংশে নিজেদের অংশের ৩০ শতাংশ মালিকানার ৫৫০ কোটি টাকার সম্পদ পর্যন্ত বুঝে পায়নি সিটি করপোরেশন। চুক্তি ভেঙ্গে করা বাকি ১৪ তলাও একাই ভোগ করছে হোটেল শেরাটন কর্তৃপক্ষ। অথচ এগুলো নিয়ে যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই সিটি করপোরেশনের। তাদের নেই কোনো অভিযোগ; নেই কোনো বক্তব্য।

শুধু সরকারি জমি এবং সম্পদ দখলই নয়, ২৮ তলা উচ্চ ভবনটি ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের অবতরণ ও উড্ডয়নকে। বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ ফানেল এলাকায় ২০১ ফুটের চেয়ে বেশি উচ্চ ভবন নির্মাণের অনুমতি না থাকলেও কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে হোটেল শেরাটন ভবন গিয়ে ঠেকেছে ৬০০ ফুটে।

সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর সাদিকুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন,
২০১ ফুট উচ্চতার বেশি যতটুকু করা হয়েছে, সেই ব্যাপারে আমরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) বলেছি। এ সংক্রান্ত একটা মামলাও আদালতে চলমান আছে।

তিনি আরও বলেন, ‘যখন কোনো নির্মাণ কাজ হয়, তখন রাজউকের কাছ থেকে ছাড়পত্র নেয়া হয়। রাজউক তখন ওই জায়গার উচ্চতা কতটুকু হবে, সেটা আমাদের কাছে জানতে চায়। আমরা বলার পর, কেউ বেশি উচ্চতার ভবন করতে চাইলে রাজউক আইন অনুযায়ী সেটার ব্যবস্থা নেয়।’

তার বক্তব্য অনুযায়ী, রাজউকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের অনুমতির বাধ্যবাধকতা থাকলেও সিটি করপোরেশন এবং বোরাক রিয়েল এস্টেট কেউই তার তোয়াক্কা পর্যন্ত করেনি।

রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন,
যখন ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে, তখন রাজউকের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে কিনা, সেই বিষয়ে সিটি করপোরেশন ও হোটেল কর্তৃপক্ষকে আমরা পত্র দিয়েছিলাম। হোটেল কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে রাজউককে জানিয়েছে, ভবনটি সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত, সিটি করপোরেশন তাদের ইজারা দিয়েছে।

তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে হোটেল শেরাটন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও হোটেল কর্তৃপক্ষ লিখিত বক্তব্যটি খণ্ডনের চেষ্টা করেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি এক ব্যক্তির শাসন দেখতে চায় নাশহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হোটেল শেরাটন ভবন, বিমান চলাচলে ঝুঁকি

আপডেট সময় ১০:৪৮:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজধানীর বনানীতে সরকারি জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে ২৮ তলা হোটেল শেরাটন। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করলেও নেয়া হয়নি শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা। বিমানবন্দরের রানওয়ের অ্যাপ্রোচ ফানেল এলাকায় প্রায় ৬০০ ফুট উচ্চ ভবনটি বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ সিভিল এভিয়েশনের।

নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেট হোটেল শেরাটনের মালিকেরই প্রতিষ্ঠান। ছবি: সময় সংবাদ
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেট হোটেল শেরাটনের মালিকেরই প্রতিষ্ঠান। ছবি: সময় সংবাদ
আতাউর কাওসার

বনানী থেকে গুলশান-২ যাওয়ার পথে সিটি করপোরেশন মার্কেটের সামনের খালি অংশে নির্মিত ভবনটিই হোটেল শেরাটন।

অভিযোগ আছে, মার্কেট ও আবাসিক মিলিয়ে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ১৪তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি হয়। কিন্তু করপোরেশনের কর্তা ব্যক্তিদের সহায়তায় দুধাপে ২৮ তলা পর্যন্ত পৌঁছে যায় শেরাটন কর্তৃপক্ষ। বাকি ১৪ তলা করতে কোনো রকম আনুষ্ঠানিক অনুমতি নেয়নি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেট, যা আবার হোটেল শেরাটনের মালিকেরই প্রতিষ্ঠান। ভবনটি নির্মাণকালে এ চুক্তি ভঙ্গ করলেও শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি সিটি করপোরেশন।

শুধু এ বিষয়েই নয়, গেলো এক দশকে চুক্তি অনুযায়ী ১৪ তলা অংশে নিজেদের অংশের ৩০ শতাংশ মালিকানার ৫৫০ কোটি টাকার সম্পদ পর্যন্ত বুঝে পায়নি সিটি করপোরেশন। চুক্তি ভেঙ্গে করা বাকি ১৪ তলাও একাই ভোগ করছে হোটেল শেরাটন কর্তৃপক্ষ। অথচ এগুলো নিয়ে যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই সিটি করপোরেশনের। তাদের নেই কোনো অভিযোগ; নেই কোনো বক্তব্য।

শুধু সরকারি জমি এবং সম্পদ দখলই নয়, ২৮ তলা উচ্চ ভবনটি ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের অবতরণ ও উড্ডয়নকে। বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ ফানেল এলাকায় ২০১ ফুটের চেয়ে বেশি উচ্চ ভবন নির্মাণের অনুমতি না থাকলেও কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে হোটেল শেরাটন ভবন গিয়ে ঠেকেছে ৬০০ ফুটে।

সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর সাদিকুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন,
২০১ ফুট উচ্চতার বেশি যতটুকু করা হয়েছে, সেই ব্যাপারে আমরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) বলেছি। এ সংক্রান্ত একটা মামলাও আদালতে চলমান আছে।

তিনি আরও বলেন, ‘যখন কোনো নির্মাণ কাজ হয়, তখন রাজউকের কাছ থেকে ছাড়পত্র নেয়া হয়। রাজউক তখন ওই জায়গার উচ্চতা কতটুকু হবে, সেটা আমাদের কাছে জানতে চায়। আমরা বলার পর, কেউ বেশি উচ্চতার ভবন করতে চাইলে রাজউক আইন অনুযায়ী সেটার ব্যবস্থা নেয়।’

তার বক্তব্য অনুযায়ী, রাজউকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের অনুমতির বাধ্যবাধকতা থাকলেও সিটি করপোরেশন এবং বোরাক রিয়েল এস্টেট কেউই তার তোয়াক্কা পর্যন্ত করেনি।

রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন,
যখন ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে, তখন রাজউকের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে কিনা, সেই বিষয়ে সিটি করপোরেশন ও হোটেল কর্তৃপক্ষকে আমরা পত্র দিয়েছিলাম। হোটেল কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে রাজউককে জানিয়েছে, ভবনটি সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত, সিটি করপোরেশন তাদের ইজারা দিয়েছে।

তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে হোটেল শেরাটন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও হোটেল কর্তৃপক্ষ লিখিত বক্তব্যটি খণ্ডনের চেষ্টা করেছে।