ঢাকা ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তি অনিশ্চিত, পুনঃগ্রেফতার হতে পারেন ইমরান খান

শনিবার ইদ্দত মামলাসহ একাধিক মামলায় খালাস পেলেও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানের আদিয়ালা জেল থেকে মুক্তি অনেকটাই অনিশ্চিত। পুনঃগ্রেফতার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইমরান খান এখন টেকনিক্যালি একজন মুক্ত ব্যক্তি হলেও নতুন করে গ্রেফতার হতে পারেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী, যা তার মুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, রাওয়ালপিন্ডিতে গত ৯ মে নথিভুক্ত ১২টি মামলায় বিপর্যস্ত পিটিআই চেয়ারম্যানকে জামিন দেওয়া হলেও মামলাগুলোর মধ্যে মাত্র ৭টির মুক্তির আদেশ হাতে পেয়েছে জেল প্রশাসন।

ইদ্দত মামলায় খালাস পাওয়ার পর, একটিসহ বাকি পাঁচটি মামলার আদেশ এখনও মেলেনি। তাই সবগুলো আদেশ কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ইমরানের মুক্তি পাওয়া অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জানা গেছে, লাহোর পুলিশ ইমরান খানকে ৯ মে’র ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত তিনটি মামলায় গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত এই গ্রেফতারের অনুমোদন দিয়েছে। এ তিনটি মামলার বিষয়ে ইমরানকে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করবে লাহোর পুলিশ।

এর আগে লাহোরের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত এসব মামলায় ইমরানের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।

অন্যদিকে সামা টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানার অপব্যবহার সংক্রান্ত মামলার তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে গ্রেফতার করতে পারে দেশটির জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরো (এনএবি)।

চলতি বছরের শুরুর দিকে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা এবং তার স্ত্রীর নামে দায়ের হওয়া ওই মামলার তদন্ত শুরু করেছিল এনএবি। সেই তদন্তে অসহযোগিতার জন্য ইমরান খান এবং বুশরা বিবির সম্ভাব্য গ্রেফতারের ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি।

দ্বিতীয় তোশাখানা মামলার তদন্তটি মূলত বিভিন্ন দামি ঘড়ি এবং গহনা সংক্রান্ত বলে জানা গেছে। সূত্র মতে, বুশরা বিবিও এই মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার সহযোগিতার অভাবের অভিযোগে তিনিও গ্রেফতার হতে পারেন।

এদিকে উপপরিচালক মহসিন হারুনের নেতৃত্বে এনএবির একটি দল এবং সহকারী পরিচালক নাঈমুল্লাহর নেতৃত্বে আরও একটি দল ইতোমধ্যেই আদিয়ালা কারাগারে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও আদিয়ালা কারাগারে পৌঁছেছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনীও।

চলতি বছরের মে মাসে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তোষাখানা অপব্যবহারের একটি নতুন মামলা সামনে আসে। এনএবি সাতটি উচ্চ-মূল্যের ঘড়ি এবং হীরা ও সোনার গহনাসহ আরও ১০টি মূল্যবান উপহারের কথিত অবৈধ জবরদখল ও বিক্রির তদন্ত শুরু করে।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযোগগুলোর মধ্যে গ্রাফ এবং রোলেক্স ঘড়ির মতো মূল্যবান জিনিসপত্রের পাশাপাশি হীরা এবং সোনার গহনাগুলোর অননুমোদিত বিক্রয় জড়িত।
প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, এই উপহারগুলো প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে তোশাখানায় জমা না রেখে বিক্রি করা হয়েছিল।

গত ১ এপ্রিল ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এনএবির দায়ের করা এই মামলায় ইমরান খান এবং বুশরা বিবির সাজা স্থগিত করেছিল।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি জবাবদিহিতা আদালতের বিচারক মুহাম্মদ বশির এই দম্পতিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ইমরান খানকে ১০ বছরের জন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতেও অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

পাশাপাশি প্রত্যেককে ৭৮ কোটি ৭০ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়, যা সামষ্টিকভাবে ১৫৮ কোটি রুপি।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তি অনিশ্চিত, পুনঃগ্রেফতার হতে পারেন ইমরান খান

আপডেট সময় ১০:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪

শনিবার ইদ্দত মামলাসহ একাধিক মামলায় খালাস পেলেও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানের আদিয়ালা জেল থেকে মুক্তি অনেকটাই অনিশ্চিত। পুনঃগ্রেফতার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইমরান খান এখন টেকনিক্যালি একজন মুক্ত ব্যক্তি হলেও নতুন করে গ্রেফতার হতে পারেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী, যা তার মুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, রাওয়ালপিন্ডিতে গত ৯ মে নথিভুক্ত ১২টি মামলায় বিপর্যস্ত পিটিআই চেয়ারম্যানকে জামিন দেওয়া হলেও মামলাগুলোর মধ্যে মাত্র ৭টির মুক্তির আদেশ হাতে পেয়েছে জেল প্রশাসন।

ইদ্দত মামলায় খালাস পাওয়ার পর, একটিসহ বাকি পাঁচটি মামলার আদেশ এখনও মেলেনি। তাই সবগুলো আদেশ কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ইমরানের মুক্তি পাওয়া অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জানা গেছে, লাহোর পুলিশ ইমরান খানকে ৯ মে’র ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত তিনটি মামলায় গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত এই গ্রেফতারের অনুমোদন দিয়েছে। এ তিনটি মামলার বিষয়ে ইমরানকে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করবে লাহোর পুলিশ।

এর আগে লাহোরের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত এসব মামলায় ইমরানের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।

অন্যদিকে সামা টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানার অপব্যবহার সংক্রান্ত মামলার তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে গ্রেফতার করতে পারে দেশটির জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরো (এনএবি)।

চলতি বছরের শুরুর দিকে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা এবং তার স্ত্রীর নামে দায়ের হওয়া ওই মামলার তদন্ত শুরু করেছিল এনএবি। সেই তদন্তে অসহযোগিতার জন্য ইমরান খান এবং বুশরা বিবির সম্ভাব্য গ্রেফতারের ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি।

দ্বিতীয় তোশাখানা মামলার তদন্তটি মূলত বিভিন্ন দামি ঘড়ি এবং গহনা সংক্রান্ত বলে জানা গেছে। সূত্র মতে, বুশরা বিবিও এই মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার সহযোগিতার অভাবের অভিযোগে তিনিও গ্রেফতার হতে পারেন।

এদিকে উপপরিচালক মহসিন হারুনের নেতৃত্বে এনএবির একটি দল এবং সহকারী পরিচালক নাঈমুল্লাহর নেতৃত্বে আরও একটি দল ইতোমধ্যেই আদিয়ালা কারাগারে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও আদিয়ালা কারাগারে পৌঁছেছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনীও।

চলতি বছরের মে মাসে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তোষাখানা অপব্যবহারের একটি নতুন মামলা সামনে আসে। এনএবি সাতটি উচ্চ-মূল্যের ঘড়ি এবং হীরা ও সোনার গহনাসহ আরও ১০টি মূল্যবান উপহারের কথিত অবৈধ জবরদখল ও বিক্রির তদন্ত শুরু করে।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযোগগুলোর মধ্যে গ্রাফ এবং রোলেক্স ঘড়ির মতো মূল্যবান জিনিসপত্রের পাশাপাশি হীরা এবং সোনার গহনাগুলোর অননুমোদিত বিক্রয় জড়িত।
প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, এই উপহারগুলো প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে তোশাখানায় জমা না রেখে বিক্রি করা হয়েছিল।

গত ১ এপ্রিল ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এনএবির দায়ের করা এই মামলায় ইমরান খান এবং বুশরা বিবির সাজা স্থগিত করেছিল।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি জবাবদিহিতা আদালতের বিচারক মুহাম্মদ বশির এই দম্পতিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ইমরান খানকে ১০ বছরের জন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতেও অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

পাশাপাশি প্রত্যেককে ৭৮ কোটি ৭০ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়, যা সামষ্টিকভাবে ১৫৮ কোটি রুপি।