ঢাকা ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরবরাহ সংকটের অজুহাতে লাগামহীন পেঁয়াজের দাম

সরবরাহ সংকটের অজুহাতে দেশের ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ভারত থেকে আমদানির পরও কমছে না নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম। উলটো আরও বাড়ছে।

কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চট্টগ্রামে খুচরা বাজারে ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা দরে। আমদানি করা পেঁয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। শুধু পেঁয়াজ নয়-চাল, ডিম, আলুসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজিই মিলছে না বাজারে।

বেগুনের কেজি সেঞ্চুরি পার করেছে। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। ভোক্তাদের অভিযোগ-প্রশাসনের কঠোর মনিটরিংয়ের অভাবে দিন দিন অস্থির হয়ে পড়ছে ভোগ্যপণ্যের বাজার। কোনো পণ্যের দাম কমার লক্ষণ নেই। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমে থাকলেও বাজারের কোথাও এ দামে বিক্রি হচ্ছে না। বেশিরভাগ পণ্যই অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে। অথচ আলু সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার চেয়ে পণ্য সরবরাহ কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই সে পণ্যের দাম বাড়ে। সম্প্রতি অতি বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গ থেকে পেঁয়াজ আসতে সমস্যা হচ্ছে। ৩ মে এক প্রজ্ঞাপনে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার কথা জানায় ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি)। এতে বলা হয়, প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস- এমইপি) ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে দেশের স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলেও উচ্চ শুল্কের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও আগের চেয়ে কমেছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা বলছেন, দেশের স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলেও উচ্চ শুল্কের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও আগের চেয়ে কমেছে। এছাড়াও কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে পরিবহণ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম দিন দিন বাড়ছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দামে। আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। যা আগে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকার কমে। পাইকারি বাজারে দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকার বেশি দামে।

খুচরা বাজারে দেশীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে আলুর দাম অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এখন কেজিপ্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। কিছু দোকানে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামের আড়তদারদের অভিযোগ-উত্তরবঙ্গের আলু ব্যবসায়ীরা আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

দেশি ও আমদানি করা রসুনের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ২১০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের দাম পড়ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা।

বাজারদর : চট্টগ্রামে কাঁচা বাজারে হঠাৎ করে বেগুনের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি বেগুন ইতোমধ্যে সেঞ্চুরি পার করেছে। বাজারে লম্বা বেগুন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৮০-৯০ টাকায়। আর সবুজ গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। কালো গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সরবরাহ সংকটের অজুহাতে লাগামহীন পেঁয়াজের দাম

আপডেট সময় ১২:০৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪

সরবরাহ সংকটের অজুহাতে দেশের ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ভারত থেকে আমদানির পরও কমছে না নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম। উলটো আরও বাড়ছে।

কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চট্টগ্রামে খুচরা বাজারে ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা দরে। আমদানি করা পেঁয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। শুধু পেঁয়াজ নয়-চাল, ডিম, আলুসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজিই মিলছে না বাজারে।

বেগুনের কেজি সেঞ্চুরি পার করেছে। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। ভোক্তাদের অভিযোগ-প্রশাসনের কঠোর মনিটরিংয়ের অভাবে দিন দিন অস্থির হয়ে পড়ছে ভোগ্যপণ্যের বাজার। কোনো পণ্যের দাম কমার লক্ষণ নেই। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমে থাকলেও বাজারের কোথাও এ দামে বিক্রি হচ্ছে না। বেশিরভাগ পণ্যই অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে। অথচ আলু সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার চেয়ে পণ্য সরবরাহ কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই সে পণ্যের দাম বাড়ে। সম্প্রতি অতি বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গ থেকে পেঁয়াজ আসতে সমস্যা হচ্ছে। ৩ মে এক প্রজ্ঞাপনে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার কথা জানায় ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি)। এতে বলা হয়, প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস- এমইপি) ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে দেশের স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলেও উচ্চ শুল্কের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও আগের চেয়ে কমেছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা বলছেন, দেশের স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলেও উচ্চ শুল্কের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও আগের চেয়ে কমেছে। এছাড়াও কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে পরিবহণ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম দিন দিন বাড়ছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দামে। আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। যা আগে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকার কমে। পাইকারি বাজারে দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকার বেশি দামে।

খুচরা বাজারে দেশীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে আলুর দাম অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এখন কেজিপ্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। কিছু দোকানে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামের আড়তদারদের অভিযোগ-উত্তরবঙ্গের আলু ব্যবসায়ীরা আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

দেশি ও আমদানি করা রসুনের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ২১০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের দাম পড়ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা।

বাজারদর : চট্টগ্রামে কাঁচা বাজারে হঠাৎ করে বেগুনের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি বেগুন ইতোমধ্যে সেঞ্চুরি পার করেছে। বাজারে লম্বা বেগুন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৮০-৯০ টাকায়। আর সবুজ গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। কালো গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।