কুমিল্লা নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডের ঝাউতলা এলাকার সিলভার মুুন ফ্লাটের বাসিন্দা রেয়াজুল হক কাজল ও তার স্ত্রী হামিদা বেগম মনি দম্পতির রোষানলের শিকার হয়ে আতংকে জীবনযাপন করছেন প্রায় শতাধিক পরিবার।
এমন অভিযোগ এনে শনিবার ১৩ জুলাই সকালে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন নির্যাতিত ও রোষানলের শিকার শতাধিক পরিবার।
বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত রেয়াজুল হক কাজল কুমিল্লার বি-পাড়া উপজেলার বড় ধুুশিয়া গ্রামের মৃত. আমির হোসেনের ছেলে।
নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘন ঘন মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করাই এই দম্পতির কাজ। তাদের মামলা-অভিযোগ-নোটিশ থেকে রক্ষা পায়নি ভবন মালিক, শিক্ষক, ব্যাংকার, বিউটিশিয়ান, ব্যবসায়ি, পুলিশ, এমনকি বাড়ির দাড়োয়ানও। অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়েও ভয়ে মুখ খুলছেন না। কারণ তাদের কাছে কিছু জানতে চাইলে তারা সাথে সাথে আদালতে গিয়ে মামলা ঠুকে দেন। কেউ কেউ প্রতিবাদ করে এই দম্পতির বিরুদ্ধে থানায় কিংবা আদালতে মামলা দায়ের করলে এই দম্পতি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন।
থাই-এলুমিনিয়াম ব্যবসায়ি বি-পাড়া উপজেলার দীর্ঘভূমি এলাকার বাসিন্দা মো: ফারুক হোসেন জানান, রেয়াজুল হক কাজল ২০১৯ সালে আমার কাছে ৫ শতক জমি বিক্রি করবে বলে বায়নাপত্র সূত্রে ১০ লাখ টাকা নেয়। বাকি টাকার জন্য আমার কাছ থেকে ৩ টা ব্যাংক চেক নেয়। পরে ২০২১ সালে সাব কাবলা দলিল বুুঝিয়ে দেয় আমাকে। তখন আমি চেকগুলো ফেরত চাই। কাজল সাহেব পরে দিবে বলে চলে যায়। পরে আর ফেরত দেননি। এর ৬ মাস পরেই আমার বিরুদ্ধে ৩টি চেক ডিসওনারসহ ৬টি মামলা দায়ের করে। পরে সামাজিকভাবে অনেকবার বসার চেষ্টা করা হলেও তিনি বসতে চাননি। তিনি আমার কাছে দলিল ফেরত চান বার বার। এছাড়া ওই বসতভূমিতে দুই তলা দোকান সংস্কার ও মেরামতে আমার ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া তার ভাই শাহজালাল মামুনও জায়গা বিক্রি করবে বলে ২০১৯ সালে আমার কাছ থেকে ২৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু জায়গা বিক্রি করেন নি। পরে ২০২১ সালে শাহজালাল মামুন মারা যান। ফলে ওই টাকাও আমি ফেরত পাইনি। এখন আমি মামলা খেয়ে পথে পথে ঘুরছি। আমার ব্যবসা-বাণিজ্য সব শেষ। তার প্রতারণায় আমি সর্বশান্ত।
সিলভার মুুন ফ্লাট মালিক সমিতির সদস্যরা এই দম্পতির নির্যাতনে অতীষ্ঠ হয়ে স্থানীয় ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনজুর কাদের মনির কাছে ১৮টি কারণ উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হল- ফ্লাটের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগও করে সার্ভিস চার্জ না দেওয়া, ফ্লাট মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও থানায় অভিযোগ দায়ের, লিফট ও জেনারেটর নষ্ট করার চেষ্টা, ফ্লাটের নিচতলার মালিক আব্দুল কাইয়ুম ও তার স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে আসা, ছাদে তালা দিয়ে অন্যদের ব্যবহার করতে বাঁধা প্রদান, ফ্লাট মালিকদের গাড়িতে কঠিন ধাতব পদার্থ দিয়ে দাগ বসিয়ে দেওয়া, ভবনের প্রহরীর ব্যবহৃত মালামাল চুরি ও তাকে মামলা দিয়ে হয়রানি, রাতের আধারে অন্য ফ্লাটের মিটার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ করে তাদের বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা, ফ্লাটের সিসি ক্যামেরায় কসটেপ লাগিয়ে সিসিটিভির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া, ফ্লাটের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে মামলা ও থানায় অভিযোগ প্রদানসহ নানা অনিয়ম ও নীতিবাচক কর্মকান্ড করেছে এই দম্পতি।