ঢাকা ১২:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

শম্ভুগঞ্জ সেতুর শতকোটি টাকার দরপত্রে ‘সমাঝোতা’! রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধিনে নেগোসিয়েশন ও সমাঝোতার মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত শম্ভুগঞ্জ সেতুর প্রায় শতকোটি টাকার টোল ইজারা প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত করার অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে দরপত্র জমায় বাঁধা দিয়ে সিডিউল ছিনিয়ে নেওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইতোমধ্যে ইজারা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি তুলনামূলক বিবরণী (সি.এস) প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রোববার (২৩ জুন) দুপুরে নিজ দফতরে এসব তথ্য জানান খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। এর আগে গত ২৭ মে ময়মনসিংহ সড়কভবনের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে দরপত্র দাখিলে বাধা ও সিডিউল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গত ২৯ মে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ভুক্তভোগী মেসার্স সৌরভ ব্রিকসের স্বাত্ত্বাধিকারি মো: মাহাবুবুল হক। একই দিনে ঘটনাটি অবহিত করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব অভিযোগের তদন্ত করে কোন ধরনের ব্যস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন এই ভুক্তভোগী। এই বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ

মাঈন উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এখনো ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়নি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্র জানায়, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে বিগত ১৪ বছর ধরে শম্ভুগঞ্জ সেতুর ইজারাদার হিসাবে টোল আদায় করছেন মেসার্স মোস্তফা কামাল। তবে এই ইজারার মূল নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মো: এমদাদুল হক মন্ডল (সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, শম্ভুগঞ্জ সেতুর ইজারা মেয়াদের তিন বছরে প্রায় দেড় শত কোটি টাকা টোল আদায় হয়।

কিন্তু একটি প্রভাবশালী চক্র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে গোপন সমঝোতা করে টানা ১৪ বছর ধরে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কম টাকায় ইজারা নিয়ে আসছে। এ কারণেই সিন্ডিকেটকে খুশি রাখতে চলতি দরপত্র অষ্টম দফা আহবান না করেই তড়িগড়ি করে চুড়ান্ত করার চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীসহ একাধিক ঠিকাদারের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদার জানায়, বর্তমান সরকার সব ধরনের টেন্ডার ইজিপি করলেও কর্তৃপক্ষ এই সেতুর ইজারা ম্যানুয়েলি করেছেন। মূলত সিন্ডিকেটকে সমঝোতা বা নেগোসিয়েশনের সুযোগ দিতেই তারা এই প্রক্রিয়া বহাল রেখেছেন।

সড়ক ভবন সূত্র জানায়, গত বছরের ২১ নভেম্বর প্রথম দফায় এই সেতুর ইজারা দরপত্র আহবান করা হয়। এরপর চলতি বছরের ৯ মে সর্বশেষ সপ্তম দফায় দরপত্র আহবান করা হয়। এতে ১৫ জন ঠিকাদার সিডিউল ক্রয় করলেও কেউ শেষ পর্যন্ত সিডিউল জমা দেয়নি। এদের মধ্যে মেসার্স সৌরভ ব্রিকসের স্বাত্ত্বাধিকারি মোঃ মাহাবুবুল হক ছাড়া

সবার সাথেই মেসার্স মোস্তফা কামালের সমঝোতা ও নেগোসিয়েশন হওয়ায় কেউ টেন্ডার ড্রপ করেনি। কিন্তু মাহাবুবুল হকের সাথে সমঝোতা না হওয়ায় তিনি টেন্ডার ড্রপ করতে গেলে তাকে বাধা দেয় সন্ত্রাসীরা।

ঠিকাদার মো: মাহাবুবুল হক বলেন, গত ২৭ মে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সপ্তম দফায় দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল। ওই নির্ধারিত সময়ের আধাঘন্টা আগে পার্টনারদের সাথে নিয়ে আমি নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে দরপত্র জমা করতে যাই। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুপস্থিতিতে ১০/১২ অজ্ঞাত সন্ত্রাসী আমাদের টেন্ডার জমায় বাধা দিয়ে দরপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় আমি সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু আমাদের অভিযোগ তদন্ত না করেই রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ ইজারা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সি.এস প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

অথচ এর আগে বিগত ইজারা অষ্টম আহবানে করার নজির রয়েছে। মাহাবুবুল হক আরও বলেন, এ ঘটনায় গত ১১ জুন মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হলে আমাদের অভিযোগ নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী আমাদের অভিযোগ তদন্ত না করে আগামী ৩০ জুন চলতি ইজারার মেয়াদ শেষ হবে কারণ দেখিয়ে অভিযোগ বিবেচনা করার আইনগত সুযোগ নেই বলে নিষ্পত্তি করা হল মর্মে একটি চিঠি দিয়েছেন। অথচ এর আগে এই ইজারার মেয়াদ শেষ হবার পর একাধিকবার সড়ক ভবন থেকে খাস আদায়ের নজির রয়েছে। টেন্ডারে সমাঝোতা ও নেগোসিয়েশনের সত্যতা স্বীকার করেছেন মেসার্স

মোস্তফা কামাল এন্টাপ্রাইজের প্রভাবশালী অংশীদার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ এমদাদুল হক মন্ডল । তিনি বলেন, ঠিকাদারি কাজে সব জায়গাতেই নিকু (নেগোসিয়েশন) হয়, আমরাও করেছি। যাদের বিডি জমা ছিল, তাদের সবার সাথে আমাদের নিকু হয়েছে। এখন কেউ সংক্ষুব্ধ হয়েন অভিযোগ করতেই পারে। এতে কিছু যায়-আসে না। তবে টেন্ডার জমায় কাউকে বাঁধা দেওয়া হয়নি। সড়কের জরিপ রিপোর্টেই ৫৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার টেন্ডার দেওয়া হয়েছে ।অভিযোগ উঠেছে, ময়মনসিংহ সড়ক ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন ও উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী খলিলুর রহমানরা এই টেন্ডার পাইয়ে দিতে সুবিধাভোগী সিন্ডিকেটের কাছ থেকে কমপক্ষে ৫/৭ কোটি টাকা উৎকোচ গ্রহন করেছেন।

এ কারণেই তারা রি-টেন্ডারে অনাগ্রহ দেখিয়ে সপ্তম দফার আহবানে টেন্ডার চূড়ান্ত করার কারসাজি করছেন। যদিও এর আগে ৮ থেকে ৯ দফা টেন্ডার আহবানের নজির রয়েছে। এবিষয়ে ময়মনসিংহ সড়ক ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ইজারা প্রক্রিয়ার একটি তুলনামূলক বিবরণী (সি.এস) প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন তারা যে সিদ্ধান্ত দিবে, আমরা সেমতে ব্যবস্থা গ্রহন করব। আর হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে আর অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছি। তবে টেন্ডার জমায় বাঁধা দেওয়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিলামে উঠছে এমপি কোটার ২৪ গাড়ি

শম্ভুগঞ্জ সেতুর শতকোটি টাকার দরপত্রে ‘সমাঝোতা’! রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

আপডেট সময় ০৫:৩৪:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধিনে নেগোসিয়েশন ও সমাঝোতার মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত শম্ভুগঞ্জ সেতুর প্রায় শতকোটি টাকার টোল ইজারা প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত করার অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে দরপত্র জমায় বাঁধা দিয়ে সিডিউল ছিনিয়ে নেওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইতোমধ্যে ইজারা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি তুলনামূলক বিবরণী (সি.এস) প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রোববার (২৩ জুন) দুপুরে নিজ দফতরে এসব তথ্য জানান খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। এর আগে গত ২৭ মে ময়মনসিংহ সড়কভবনের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে দরপত্র দাখিলে বাধা ও সিডিউল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গত ২৯ মে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ভুক্তভোগী মেসার্স সৌরভ ব্রিকসের স্বাত্ত্বাধিকারি মো: মাহাবুবুল হক। একই দিনে ঘটনাটি অবহিত করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব অভিযোগের তদন্ত করে কোন ধরনের ব্যস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন এই ভুক্তভোগী। এই বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ

মাঈন উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এখনো ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়নি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্র জানায়, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে বিগত ১৪ বছর ধরে শম্ভুগঞ্জ সেতুর ইজারাদার হিসাবে টোল আদায় করছেন মেসার্স মোস্তফা কামাল। তবে এই ইজারার মূল নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মো: এমদাদুল হক মন্ডল (সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, শম্ভুগঞ্জ সেতুর ইজারা মেয়াদের তিন বছরে প্রায় দেড় শত কোটি টাকা টোল আদায় হয়।

কিন্তু একটি প্রভাবশালী চক্র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে গোপন সমঝোতা করে টানা ১৪ বছর ধরে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কম টাকায় ইজারা নিয়ে আসছে। এ কারণেই সিন্ডিকেটকে খুশি রাখতে চলতি দরপত্র অষ্টম দফা আহবান না করেই তড়িগড়ি করে চুড়ান্ত করার চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীসহ একাধিক ঠিকাদারের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদার জানায়, বর্তমান সরকার সব ধরনের টেন্ডার ইজিপি করলেও কর্তৃপক্ষ এই সেতুর ইজারা ম্যানুয়েলি করেছেন। মূলত সিন্ডিকেটকে সমঝোতা বা নেগোসিয়েশনের সুযোগ দিতেই তারা এই প্রক্রিয়া বহাল রেখেছেন।

সড়ক ভবন সূত্র জানায়, গত বছরের ২১ নভেম্বর প্রথম দফায় এই সেতুর ইজারা দরপত্র আহবান করা হয়। এরপর চলতি বছরের ৯ মে সর্বশেষ সপ্তম দফায় দরপত্র আহবান করা হয়। এতে ১৫ জন ঠিকাদার সিডিউল ক্রয় করলেও কেউ শেষ পর্যন্ত সিডিউল জমা দেয়নি। এদের মধ্যে মেসার্স সৌরভ ব্রিকসের স্বাত্ত্বাধিকারি মোঃ মাহাবুবুল হক ছাড়া

সবার সাথেই মেসার্স মোস্তফা কামালের সমঝোতা ও নেগোসিয়েশন হওয়ায় কেউ টেন্ডার ড্রপ করেনি। কিন্তু মাহাবুবুল হকের সাথে সমঝোতা না হওয়ায় তিনি টেন্ডার ড্রপ করতে গেলে তাকে বাধা দেয় সন্ত্রাসীরা।

ঠিকাদার মো: মাহাবুবুল হক বলেন, গত ২৭ মে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সপ্তম দফায় দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল। ওই নির্ধারিত সময়ের আধাঘন্টা আগে পার্টনারদের সাথে নিয়ে আমি নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে দরপত্র জমা করতে যাই। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুপস্থিতিতে ১০/১২ অজ্ঞাত সন্ত্রাসী আমাদের টেন্ডার জমায় বাধা দিয়ে দরপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় আমি সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু আমাদের অভিযোগ তদন্ত না করেই রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ ইজারা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সি.এস প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

অথচ এর আগে বিগত ইজারা অষ্টম আহবানে করার নজির রয়েছে। মাহাবুবুল হক আরও বলেন, এ ঘটনায় গত ১১ জুন মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হলে আমাদের অভিযোগ নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী আমাদের অভিযোগ তদন্ত না করে আগামী ৩০ জুন চলতি ইজারার মেয়াদ শেষ হবে কারণ দেখিয়ে অভিযোগ বিবেচনা করার আইনগত সুযোগ নেই বলে নিষ্পত্তি করা হল মর্মে একটি চিঠি দিয়েছেন। অথচ এর আগে এই ইজারার মেয়াদ শেষ হবার পর একাধিকবার সড়ক ভবন থেকে খাস আদায়ের নজির রয়েছে। টেন্ডারে সমাঝোতা ও নেগোসিয়েশনের সত্যতা স্বীকার করেছেন মেসার্স

মোস্তফা কামাল এন্টাপ্রাইজের প্রভাবশালী অংশীদার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ এমদাদুল হক মন্ডল । তিনি বলেন, ঠিকাদারি কাজে সব জায়গাতেই নিকু (নেগোসিয়েশন) হয়, আমরাও করেছি। যাদের বিডি জমা ছিল, তাদের সবার সাথে আমাদের নিকু হয়েছে। এখন কেউ সংক্ষুব্ধ হয়েন অভিযোগ করতেই পারে। এতে কিছু যায়-আসে না। তবে টেন্ডার জমায় কাউকে বাঁধা দেওয়া হয়নি। সড়কের জরিপ রিপোর্টেই ৫৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার টেন্ডার দেওয়া হয়েছে ।অভিযোগ উঠেছে, ময়মনসিংহ সড়ক ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন ও উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী খলিলুর রহমানরা এই টেন্ডার পাইয়ে দিতে সুবিধাভোগী সিন্ডিকেটের কাছ থেকে কমপক্ষে ৫/৭ কোটি টাকা উৎকোচ গ্রহন করেছেন।

এ কারণেই তারা রি-টেন্ডারে অনাগ্রহ দেখিয়ে সপ্তম দফার আহবানে টেন্ডার চূড়ান্ত করার কারসাজি করছেন। যদিও এর আগে ৮ থেকে ৯ দফা টেন্ডার আহবানের নজির রয়েছে। এবিষয়ে ময়মনসিংহ সড়ক ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ইজারা প্রক্রিয়ার একটি তুলনামূলক বিবরণী (সি.এস) প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন তারা যে সিদ্ধান্ত দিবে, আমরা সেমতে ব্যবস্থা গ্রহন করব। আর হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে আর অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছি। তবে টেন্ডার জমায় বাঁধা দেওয়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।