ঢাকা ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বছরে বায়ুদূষণে দেশে ১৯ হাজার শিশুর মৃত্যু

বায়ুদূষণের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ হাজারের বেশি।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ এবং হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট (এইচইআই) যৌথভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদন এ তথ্য জানানো হয়।

‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার ২০২৪’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে বাতাসের মানের উদ্বেগজনক অবস্থা উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে শিশুদের জন্য বাতাসের গুণগত মান উন্নত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুদূষণের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ হাজারের বেশি। আর বিশ্বব্যাপী এই বয়স শ্রেণির ৭ লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু হয় বায় দূষণের কারণে।

ইউনিসেফের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা বায়ুদূষণজনিত রোগের বেশি শিকার হয়। এর প্রভাবে অপরিণত ও কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ, হাঁপানি ও ফুসফুসের রোগসহ নানা স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। সারাবিশ্বে এই বয়সী শিশুদের মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ হল বায়ুদূষণ। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি শিশু মারা যায় অপুষ্টিতে। বায়ুদূষণের কারণে শিশু মৃত্যু ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট।

তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নিম্নমানের বাতাসের ক্ষতিকর প্রভাব শিশুদের উপরই বেশি দেখা যায়; তারা হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়। শুধু শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও বাতাসের গুণগত মান উন্নত করতে টেকসই সমাধান বাস্তবায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।’

বায়ুদূষণজনিত এসব রোগের প্রভাব ও প্রাদুর্ভাব কিন্তু বিশ্বব্যাপী সমান নয়। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বজুড়ে মানুষের ইসকেমিক হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে বায়ুদূষণের অবদান গড়ে ২৮ শতাংশ হলেও ফিনল্যান্ড, নরেওয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এর হার ১০ শতাংশের; অন্যদিকে পূর্ব, পশ্চিম, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এর হার (যেমন নাইজেরিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও বাংলাদেশ) ৪০ শতাংশের বেশি।

এ বছরের এসওজিএ প্রতিবেদনটিতে বায়ুদূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব এবং এ বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেশগুলো যখন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিমালাকে আরও উন্নত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ তার জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বায়ুদূষণ মোকাবিলায় একটি বড় চ্যালেঞ্জের সামনে রয়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বছরে বায়ুদূষণে দেশে ১৯ হাজার শিশুর মৃত্যু

আপডেট সময় ১১:৪৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

বায়ুদূষণের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ হাজারের বেশি।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ এবং হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট (এইচইআই) যৌথভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদন এ তথ্য জানানো হয়।

‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার ২০২৪’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে বাতাসের মানের উদ্বেগজনক অবস্থা উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে শিশুদের জন্য বাতাসের গুণগত মান উন্নত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুদূষণের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ হাজারের বেশি। আর বিশ্বব্যাপী এই বয়স শ্রেণির ৭ লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু হয় বায় দূষণের কারণে।

ইউনিসেফের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা বায়ুদূষণজনিত রোগের বেশি শিকার হয়। এর প্রভাবে অপরিণত ও কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ, হাঁপানি ও ফুসফুসের রোগসহ নানা স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। সারাবিশ্বে এই বয়সী শিশুদের মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ হল বায়ুদূষণ। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি শিশু মারা যায় অপুষ্টিতে। বায়ুদূষণের কারণে শিশু মৃত্যু ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট।

তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নিম্নমানের বাতাসের ক্ষতিকর প্রভাব শিশুদের উপরই বেশি দেখা যায়; তারা হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়। শুধু শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও বাতাসের গুণগত মান উন্নত করতে টেকসই সমাধান বাস্তবায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।’

বায়ুদূষণজনিত এসব রোগের প্রভাব ও প্রাদুর্ভাব কিন্তু বিশ্বব্যাপী সমান নয়। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বজুড়ে মানুষের ইসকেমিক হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে বায়ুদূষণের অবদান গড়ে ২৮ শতাংশ হলেও ফিনল্যান্ড, নরেওয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এর হার ১০ শতাংশের; অন্যদিকে পূর্ব, পশ্চিম, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এর হার (যেমন নাইজেরিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও বাংলাদেশ) ৪০ শতাংশের বেশি।

এ বছরের এসওজিএ প্রতিবেদনটিতে বায়ুদূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব এবং এ বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেশগুলো যখন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিমালাকে আরও উন্নত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ তার জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বায়ুদূষণ মোকাবিলায় একটি বড় চ্যালেঞ্জের সামনে রয়েছে।