ঢাকা ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

পানির চেয়েও কম চামড়ার দাম!

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় এবারের কুরবানির ঈদে ১ লিটার বোতলজাত পানির দাম ছিল ৩০ টাকা। সেখানে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ৩০ টাকায় আর ছাগলের চামড়া কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ক্রেতারা।

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা সদরসহ লক্ষীখোলা, ভিটিবাড়ী, ভাবকির মোড়, চেচুয়া বাজার, বড়গ্রাম, ঘোগা বাজার, কুমারগাতা, গাবতলি বাজার, বনবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই বাড়ির সামনে রাস্তায় বা আবর্জনার স্তূপের ভিতর ফেলে গেছেন।

পাশাপাশি এলাকাগুলোতে চামড়া কেনার জন্য মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের তেমন দেখা মেলেনি; এর বিপরীতে বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার লোকজনের বিনামূল্যে চামড়া সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। অনেকেই আবার চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মসজিদ-মাদ্রাসা বা এতিমখানায় চামড়া দান করে দিয়েছেন।

উপজেলার ভিটিবাড়ি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ইমরুল কায়েস যুগান্তরকে বলেন, ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে তার কুরবানির গরু কাটাকাটি শেষ হয়েছে। কিন্তু ঈদের দিন থেকে পরের দিন পর্যন্ত কোনো চামড়া ব্যবসায়ীর দেখা মেলেনি। বিগত বছরগুলোতে এমন অবস্থা ছিল না, এখন এমন কেন হচ্ছে?

উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফ আহমেদ শরিফ জানান, এবার চামড়া কেনার জন্য কোনো ব্যবসায়ীকে দেখা যাইনি, দুই-একজন কিনছে তাও আবার আস্ত গরুর চামড়া ১৫ টাকা ও ছাগল ১০ টাকায়। এমন সিন্ডিকেট আগে কখনো দেখিনি। ফলে এলাকার এতিম ও দুস্থরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চামড়া ব্যবসায়ী জানান, নির্ধারিত দামে চামড়া কিনব কিভাবে- আমরা চামড়া কিনলেও আড়তে বেচতে হচ্ছে অনেক কম দামে। তাছাড়াও এবার ঈদের দিন বিকাল থেকে টানা বৃষ্টি থাকায় চামড়া বেচাকেনা করতে পারিনি। তাই চামড়া কিনতে কোনো ভরসা পাইনি। এবার দাম কম হওয়ায় হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গরিব, এতিম ও অসহায়রা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন না এ বছর।

গাবতলি বাজারের আরেক মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী জানান, খাসি ছাগলের চামড়া ১৫ টাকা, গরুর চামড়া ৩০-৪০ টাকায় কিনেছি। তবে বকরি ছাগলের চামড়া কিনছি না আমি। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অনেকেই এ বছর চামড়া কিনছেন না বলে জানান এই চামড়া ব্যবসায়ী।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদা হাসান জানান, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চামড়া ব্যবসায়ীরা এমনটি করতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব আমরা।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সুদখোর চেয়ারম্যান সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!

পানির চেয়েও কম চামড়ার দাম!

আপডেট সময় ১০:১০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় এবারের কুরবানির ঈদে ১ লিটার বোতলজাত পানির দাম ছিল ৩০ টাকা। সেখানে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ৩০ টাকায় আর ছাগলের চামড়া কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ক্রেতারা।

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা সদরসহ লক্ষীখোলা, ভিটিবাড়ী, ভাবকির মোড়, চেচুয়া বাজার, বড়গ্রাম, ঘোগা বাজার, কুমারগাতা, গাবতলি বাজার, বনবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই বাড়ির সামনে রাস্তায় বা আবর্জনার স্তূপের ভিতর ফেলে গেছেন।

পাশাপাশি এলাকাগুলোতে চামড়া কেনার জন্য মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের তেমন দেখা মেলেনি; এর বিপরীতে বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার লোকজনের বিনামূল্যে চামড়া সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। অনেকেই আবার চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মসজিদ-মাদ্রাসা বা এতিমখানায় চামড়া দান করে দিয়েছেন।

উপজেলার ভিটিবাড়ি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ইমরুল কায়েস যুগান্তরকে বলেন, ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে তার কুরবানির গরু কাটাকাটি শেষ হয়েছে। কিন্তু ঈদের দিন থেকে পরের দিন পর্যন্ত কোনো চামড়া ব্যবসায়ীর দেখা মেলেনি। বিগত বছরগুলোতে এমন অবস্থা ছিল না, এখন এমন কেন হচ্ছে?

উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফ আহমেদ শরিফ জানান, এবার চামড়া কেনার জন্য কোনো ব্যবসায়ীকে দেখা যাইনি, দুই-একজন কিনছে তাও আবার আস্ত গরুর চামড়া ১৫ টাকা ও ছাগল ১০ টাকায়। এমন সিন্ডিকেট আগে কখনো দেখিনি। ফলে এলাকার এতিম ও দুস্থরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চামড়া ব্যবসায়ী জানান, নির্ধারিত দামে চামড়া কিনব কিভাবে- আমরা চামড়া কিনলেও আড়তে বেচতে হচ্ছে অনেক কম দামে। তাছাড়াও এবার ঈদের দিন বিকাল থেকে টানা বৃষ্টি থাকায় চামড়া বেচাকেনা করতে পারিনি। তাই চামড়া কিনতে কোনো ভরসা পাইনি। এবার দাম কম হওয়ায় হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গরিব, এতিম ও অসহায়রা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন না এ বছর।

গাবতলি বাজারের আরেক মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী জানান, খাসি ছাগলের চামড়া ১৫ টাকা, গরুর চামড়া ৩০-৪০ টাকায় কিনেছি। তবে বকরি ছাগলের চামড়া কিনছি না আমি। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অনেকেই এ বছর চামড়া কিনছেন না বলে জানান এই চামড়া ব্যবসায়ী।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদা হাসান জানান, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চামড়া ব্যবসায়ীরা এমনটি করতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব আমরা।