ঢাকা ১০:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সাভার-আশুলিয়া-ধামরাইয়ে বেড়েছে কামারদের ব্যস্ততা

আগামী সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল আজহা। পশু কুরবানিতে প্রয়োজন হয় দা, বঁটি ও ছুরির। পশু কুরবানিতে ব্যবহƒত সরঞ্জামাদি শান দেওয়া ও অস্ত্র তৈরিতে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই অঞ্চলে কামারদের বাড়িতে শুরু হয়েছে ব্যস্ততা। নতুন তৈরির সঙ্গে কামাররা ব্যস্ত পুরোনো দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতিতে শান দিতে।

আবার মোটরচালিত মেশিনে শান দেওয়ার কাজও চলছে। তাই যেন দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। আর এসব উপকরণ তৈরি করতে গিয়ে নাওয়া খাওয়া ভুলে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা। তবে কয়লার দাম বেশি হওয়ায় অন্যবারের চেয়ে এবারে দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতির দাম অনেকটা বেশি বলেও জানান তারা।

কামারপট্টিতে বেশ কয়েকটি কামার দোকানে ঘুরে দেখা গেছে আগের তুলনায় কাজ বেড়েছে কামারদের। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে। অথচ সারা বছরই তাদের কাটে অলস সময়।

কর্মকাররা জানান, সাধারণত স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা ব্যবহার করে দা, বঁটি ও ছুরি তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম।

এ ছাড়াও লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহা ৫০০ টাকা, নরমাল ৩০০ টাকা, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০, দা ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, বঁটি ২০০ থেকে ৪০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে শুরু, চাপাতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

আশুলিয়ার নরসিংহপুর দা, বঁটি শান দিতে আসা সুমন নামের এক ব্যক্তি বলেন, দুই বছর ধরে আমি দা, বঁটি শান দেই না। মরিচা ধরেছে, ধারও একটু কমে গেছে। এজন্য একটু আগেভাগে শান দিতে এলাম।

ধামরাই পৌর এলাকার কর্মকার সুজন হাওলাদার বলেন, দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় কাস্টমারদের সঙ্গে মজুরি বা দাম নিয়ে বিতণ্ডা লেগেই থাকে। দাম বাড়তির কারণে পুরোনো দা, বঁটি শান দিয়েই বেশি সময় কাটছে। দাম দ্বিগুণ হওয়ায় নতুন কাজ কিছুটা কমেছে।

সাভার নামা বাজারের কর্মকার দিপু সাহা বলেন, এটা তাদের পৈতৃক ব্যবসা। কুরবানির ঈদে তাকে নতুন কর্মচারী রাখতে হয়।

তিনি বলেন, এ সময় চাহিদা বৃদ্ধির কারণে আগে ভাগেই কিছু উপকরণ তৈরি রাখা হয়। তার পরও এ সময় নাওয়া খাওয়ার সময় থাকে না।

কামাররা জানান, তাদের এ ক্ষুদ্র শিল্পে সরকারি অনুদান না থাকায় তাদের এ সময়ের আয়ের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষদ্র শিল্প বিনিয়োগ ও প্রসারের জন্য অনেক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িত যারা তাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ইতোমধ্যেই সাভারের কামার শিল্পীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সুদখোর চেয়ারম্যান সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!

সাভার-আশুলিয়া-ধামরাইয়ে বেড়েছে কামারদের ব্যস্ততা

আপডেট সময় ১১:১৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

আগামী সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল আজহা। পশু কুরবানিতে প্রয়োজন হয় দা, বঁটি ও ছুরির। পশু কুরবানিতে ব্যবহƒত সরঞ্জামাদি শান দেওয়া ও অস্ত্র তৈরিতে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই অঞ্চলে কামারদের বাড়িতে শুরু হয়েছে ব্যস্ততা। নতুন তৈরির সঙ্গে কামাররা ব্যস্ত পুরোনো দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতিতে শান দিতে।

আবার মোটরচালিত মেশিনে শান দেওয়ার কাজও চলছে। তাই যেন দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। আর এসব উপকরণ তৈরি করতে গিয়ে নাওয়া খাওয়া ভুলে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা। তবে কয়লার দাম বেশি হওয়ায় অন্যবারের চেয়ে এবারে দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতির দাম অনেকটা বেশি বলেও জানান তারা।

কামারপট্টিতে বেশ কয়েকটি কামার দোকানে ঘুরে দেখা গেছে আগের তুলনায় কাজ বেড়েছে কামারদের। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে। অথচ সারা বছরই তাদের কাটে অলস সময়।

কর্মকাররা জানান, সাধারণত স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা ব্যবহার করে দা, বঁটি ও ছুরি তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম।

এ ছাড়াও লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহা ৫০০ টাকা, নরমাল ৩০০ টাকা, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০, দা ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, বঁটি ২০০ থেকে ৪০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে শুরু, চাপাতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

আশুলিয়ার নরসিংহপুর দা, বঁটি শান দিতে আসা সুমন নামের এক ব্যক্তি বলেন, দুই বছর ধরে আমি দা, বঁটি শান দেই না। মরিচা ধরেছে, ধারও একটু কমে গেছে। এজন্য একটু আগেভাগে শান দিতে এলাম।

ধামরাই পৌর এলাকার কর্মকার সুজন হাওলাদার বলেন, দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় কাস্টমারদের সঙ্গে মজুরি বা দাম নিয়ে বিতণ্ডা লেগেই থাকে। দাম বাড়তির কারণে পুরোনো দা, বঁটি শান দিয়েই বেশি সময় কাটছে। দাম দ্বিগুণ হওয়ায় নতুন কাজ কিছুটা কমেছে।

সাভার নামা বাজারের কর্মকার দিপু সাহা বলেন, এটা তাদের পৈতৃক ব্যবসা। কুরবানির ঈদে তাকে নতুন কর্মচারী রাখতে হয়।

তিনি বলেন, এ সময় চাহিদা বৃদ্ধির কারণে আগে ভাগেই কিছু উপকরণ তৈরি রাখা হয়। তার পরও এ সময় নাওয়া খাওয়ার সময় থাকে না।

কামাররা জানান, তাদের এ ক্ষুদ্র শিল্পে সরকারি অনুদান না থাকায় তাদের এ সময়ের আয়ের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষদ্র শিল্প বিনিয়োগ ও প্রসারের জন্য অনেক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িত যারা তাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ইতোমধ্যেই সাভারের কামার শিল্পীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।