ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া রুশ কমান্ডার জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন বুধবার গুরুত্বপূর্ণ খেরসন শহর থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি টিভিতে দেওয়া ভাষণে জানান পর্যাপ্ত রসদ ও জনবলের অভাবে তাদের খেরসন শহর ছাড়তে হচ্ছে।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইল পোডোলিয়াক রুশ কমান্ডারের এ ঘোষণায় সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ানদের কথায় ও কাজে মিল নেই। ফলে রুশ কমান্ডার সুরোভিকিন খেরসন ছাড়ার কথা বললেও এখনই তারা এটি বিশ্বাস করবেন না। রুশ সেনারা সত্যিই খেরসন ছাড়ছে কিনা সেটি আগে দেখবেন। এছাড়া এখনই খেরসন শহরে ইউক্রেন তাদের সেনাদের পাঠাবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে টুইটে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রভাবশালী এ উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘কথার চেয়ে কাজের মূল্য বেশি। কোনো লড়াই ছাড়া রাশিয়া খেরসন শহর ছাড়বে এমন কোনো ইঙ্গিত আমরা দেখিনি। রুশ সেনাদের একটি অংশ শহরেই রয়ে গেছে এবং আরও রিজার্ভ সেনা পুরো অঞ্চলের দায়িত্বে আছে। ইউক্রেন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিজ অঞ্চল স্বাধীন করছে, টিভিতে দেওয়া মিথ্যা বক্তব্যের ওপর না।’
রুশ সেনারা কোনো শহর বা অঞ্চল থেকে পিছু হটলে সেখানে মাইন পুঁতে যায়। ফলে হঠাৎ করে ইউক্রেনের সেনারা খেরসন শহরে ঢুকে পড়বে না। যদিও গত দুই মাস ধরে ধীরে ধীরে খেরসন শহরের দিকে এগিয়ে আসছে তারা।
এদিকে ফেব্রুয়ারির শেষে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঠিক পরপরই কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর অঞ্চল খেরসন দখল করে রুশ সেনারা। আট মাসেরও বেশি সময় ধরে শহরটি তাদের দখলেই আছে। তবে খেরসন অঞ্চল থেকে খেরসন শহরটি অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। খেরসন শহরটি দানিপ্রো নদীর পশ্চিম দিকে অবস্থিত। অপরদিকে পুরো খেরসন অঞ্চলটি দানিপ্রো নদীর পূর্ব দিকে অবস্থিত।
গত কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনের সেনারা শহরটি পুনর্দখলে এগিয়ে আসতে থাকায় এখান থেকে ধীরে ধীরে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছিল রুশ সেনারা। পরে ধারণা করা হচ্ছিল শহর থেকে নিজেদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেবে তারা।
বুধবার স্থানীয় সময় সকালে খেরসন শহরের প্রধান সড়কের একটি সেতু উড়িয়ে দেওয়া হয়। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিরাপদে পিছু হটতেই সেতুটি উড়িয়ে দিয়েছে রুশ বাহিনী।
তাছাড়া রাশিয়ার যেসব সামরিক ব্লগার আছেন তারাও জানাচ্ছেন খেরসন শহর থেকে রুশ সেনারা পিছু হটছেন। যদিও তারা এমন সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি। তবে ওয়াগানার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগিনি প্রিগোজিন এবং চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।