রাশিয়ার অধিকৃত খেরসন অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা আরও বাড়ছে। এবার ইউক্রেন অভিযোগ এনেছে, সাধারণ মানুষের পোশাক পরে রুশ সেনারা ফাঁকা বাড়িঘরগুলোতে লুটপাট চালাচ্ছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের খেরসন শহরে বেসামরিক পোশাক পরে রুশ সেনারা রাস্তার মোড়ে মোড়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলেও জানায় কিয়েভ।
সম্প্রতি শহরটি পুনর্দখলের জন্য ইউক্রেনের হামলার সতর্কতায় বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে শুরু করে রাশিয়া। পুতিন প্রশাসন দাবি করে, শত্রুদের বিরুদ্ধে রুশ বাহিনীর প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর প্রথম এই অঞ্চলটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় মস্কো।
রুশ-সমর্থিত খেরসনের কর্মকর্তারা দাবি করেন, ইউক্রেন বাহিনীর‘সন্ত্রাসী হামলায়’ খেরসনের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে কাজ করছেন। অপরদিকে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া দেড় কিলোমিটার বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ফলে যতক্ষণ না পর্যন্ত শহরটি ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আসছে ততক্ষণ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয়।
কিয়েভের অভিযোগ ওই অঞ্চলটির লোকজনকে জোর করে সরানো হচ্ছে এবং এটি যুদ্ধাপরাধের সামিল। তবে মস্কোর দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে লোকজনকে সরানো হচ্ছে। বেসামরিক লোকদের অপব্যবহার করার বিষয়টিও অস্বীকার করছে ক্রেমলিন।
সোমবার (৭ নভেম্বর) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘রাশিয়া লোকজনকে খেরসন থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে তাদেরকে জোরপূর্বক উৎখাত করছে। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে রুশ বাহিনী ও রাশিয়ার এফএসবি কর্মকর্তারা তাদের পছন্দের কাজটি করছে। বাসিন্দাদের ফেলে যাওয়া বাড়িঘরে লুটপাট চালাচ্ছে তারা। যেসব মানুষকে সুরক্ষা দিতে এসেছিল তাদের বাড়িঘরেই লুটপাট করছে তারা’।
ইউক্রেনের অধিকৃত চারটি অঞ্চলের মধ্যে খেরসন একটি যেখানে গণভোটের আয়োজন করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় পুতিন সরকার। এটি ক্রিমিয়া উপদ্বীপের একমাত্র স্থল রুট যা রাশিয়া ২০১৪ সালে দখল করেছে এবং দিনিপ্রোর মুখ, ২২০০ কিলোমিটার-দীর্ঘ (১৩৬৭-মাইল) নদী যা ইউক্রেনকে দ্বিখণ্ডিত করেছে। ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়ের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর হলো খেরসন।