ঢাকা ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শরীয়তপুরে ছেলের গাছের গোড়ার আঘাতে বাবা নিহত সেই ছেলে গ্রেফতার। ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক শিগগিরই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা: শিবির সভাপতি চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত, ২ নেতা বহিষ্কার সরকার পতনের পর এই প্রথম মুখ খুললেন সাদ্দাম-ইনান কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ভোলায় শহীদ পরিবারদের কোটি টাকার সহায়তা দিল- জামায়াতে ইসলাম জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন যোগ দিতে নিউইয়র্কে দৈনিক তরুণ কণ্ঠ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শান্ত বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি বন্ধ হলেও এপারে কাটেনি আতঙ্ক

মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষে উখিয়া টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৮ জানুয়ারি) ঘুমধুম সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে ওপারে গোলাগুলি বন্ধ হলেও এপারে সীমান্তে বসবাসকারীদের মাঝে এখনো আতঙ্ক কাটেনি। এরই মধ্যে রোববার সীমান্তে মর্টাশেলের বিকট শব্দের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এরইমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানানো হয়েছে। আর সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবিও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

বন্ধ ঘোষণা করা তুমব্রুর ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছৈয়দুর রহমান বলেন, রোববার দুপুরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দুটি হেলিকপ্টার আকাশে মহড়া দেয়। ঠিক সেই মুহূর্তে বেশ কয়েকটি বিকট শব্দে বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পাই আমরা। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে নিরাপত্তাজনিত কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের জন্য অনুরোধ করা হলে প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) মিয়ানমারে ছোড়া গুলি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসার পর রোববার কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। এ সময় বিজিবির সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

উখিয়ার পালংখালীর বাসিন্দা গণমাধ্যম কর্মী নুরুল বশর বলেন, প্রায় সময় ওপারে গোলাগুলি এবং মর্টারশেলের বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে ওঠে। রোববার দুপুরে বটতলী এলাকায় লোহার কিছু ভাঙা অংশ এসে পড়ে। পরে পুরো সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো মর্টারশেলের ভাঙা টুকরো।

টেকনাফ হোয়াইক্যং কাটাখালী এলাকার মো. ছৈয়দ বলেন, উলুবুনিয়ায় গুলি পড়ার পর সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারছে না।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সর্বশেষ ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা করে আমরা এখন অমানবিক সময় পার করছি। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ভয়ে আমরা এমনিতেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এরই মধ্যে মিয়ানমারে প্রতিনিয়ত গোলাগুলির ঘটনায় স্থানীয়রা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় পার করছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কী হচ্ছে তা বলা মুশকিল। এই ভালো তো একটু পরে খারাপ। এখন গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু বরাবরের মতো আমাদের আতঙ্ক কমছে না।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তে আমাদের বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানান তিনি।

৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছি আমরা। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মিয়ানমার নিজ দেশ শান্ত রাখতে বা বিদ্রোহ দমনে কী পদক্ষেপ নিবে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় টহল জোরদার করা হয়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীয়তপুরে ছেলের গাছের গোড়ার আঘাতে বাবা নিহত সেই ছেলে গ্রেফতার।

মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি বন্ধ হলেও এপারে কাটেনি আতঙ্ক

আপডেট সময় ০৮:৪৩:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষে উখিয়া টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৮ জানুয়ারি) ঘুমধুম সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে ওপারে গোলাগুলি বন্ধ হলেও এপারে সীমান্তে বসবাসকারীদের মাঝে এখনো আতঙ্ক কাটেনি। এরই মধ্যে রোববার সীমান্তে মর্টাশেলের বিকট শব্দের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এরইমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানানো হয়েছে। আর সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবিও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

বন্ধ ঘোষণা করা তুমব্রুর ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছৈয়দুর রহমান বলেন, রোববার দুপুরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দুটি হেলিকপ্টার আকাশে মহড়া দেয়। ঠিক সেই মুহূর্তে বেশ কয়েকটি বিকট শব্দে বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পাই আমরা। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে নিরাপত্তাজনিত কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের জন্য অনুরোধ করা হলে প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) মিয়ানমারে ছোড়া গুলি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসার পর রোববার কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। এ সময় বিজিবির সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

উখিয়ার পালংখালীর বাসিন্দা গণমাধ্যম কর্মী নুরুল বশর বলেন, প্রায় সময় ওপারে গোলাগুলি এবং মর্টারশেলের বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে ওঠে। রোববার দুপুরে বটতলী এলাকায় লোহার কিছু ভাঙা অংশ এসে পড়ে। পরে পুরো সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো মর্টারশেলের ভাঙা টুকরো।

টেকনাফ হোয়াইক্যং কাটাখালী এলাকার মো. ছৈয়দ বলেন, উলুবুনিয়ায় গুলি পড়ার পর সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারছে না।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সর্বশেষ ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা করে আমরা এখন অমানবিক সময় পার করছি। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ভয়ে আমরা এমনিতেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এরই মধ্যে মিয়ানমারে প্রতিনিয়ত গোলাগুলির ঘটনায় স্থানীয়রা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় পার করছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কী হচ্ছে তা বলা মুশকিল। এই ভালো তো একটু পরে খারাপ। এখন গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু বরাবরের মতো আমাদের আতঙ্ক কমছে না।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তে আমাদের বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানান তিনি।

৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছি আমরা। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মিয়ানমার নিজ দেশ শান্ত রাখতে বা বিদ্রোহ দমনে কী পদক্ষেপ নিবে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় টহল জোরদার করা হয়েছে।