আগামী বছরে রাশিয়ার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে এরইমধ্যে এক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। ওই প্রার্থী রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রদিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক টিভি সাংবাদিক ইয়েকাতেরিনা দুনস্তভাকে শনিবার আযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি ইউক্রেনে হামলায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
সেন্ট্রাল ইলেক্টরাল কমিশনের সদস্যরা তার প্রার্থিতা বাতিলের ব্যাপারে মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, ওই প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য যেসব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তাতে অসংখ্য ত্রুটি রয়েছে।
সমালোচকদের দাবি, আগামী বছরের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভ্লাদিমির পুতিনের বিপক্ষে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর প্রথমবারের মতো দেশটিতে নির্রাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এটি আসলে সম্ভাব্য ফলাফলের জন্য ভুয়া প্রক্রিয়া করা।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে পুতিন আবারও জয়ী হবেন। নির্বাচনে তার ৮০ শতাংশ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুনস্তভা টেলিগ্রামে এক বার্তায় বলেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টে প্রার্থিতার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবেন। কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক ও অবিচার বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রতিনিধিত্ব ও নিজেদের ভাব প্রকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তকে তিনি আগ্রাসী বলেও সমালোচনা করেন।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগামী বছরের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন বলেন, তিনি আরও একবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। নির্বাচনী এক প্রচারণায় গিয়ে তিনি আসন্ন নির্বাচনে বিপুল জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অবশ্য পুতিনের এমন ঘোষণা প্রত্যাশিতই ছিল। ২০২০ সালে তাকে অবারও ক্ষমতায় রাখার জন্য দেশটির সংবিধান সংশোধন করা হয়। এ সংশোধনের মাধ্যমে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন পুতিন। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টর পদ আসীন।
২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিন। এরপর এ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ইউক্রেনে অভিযান চালানো শুরুর পর প্রথমবারের মতো দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
জার্মান ইনিস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ারর্স বিভাগের বিশ্লেষক নিকোলাই পেত্রভ বলেন, এটি আসলে নির্বাচন নয়। একই নেতৃত্ব পুনরায় নির্বাচিত হওয়া। তিনি এ নির্বাচনে নিজের সাথে নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচের মাধ্যমে তিনি এটি দেখাবেন যে ২৫ বছরের আগের তুলনায় তিনি এখন খারাপ অবস্থায় নেই।