ঢাকা ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা: পাল্টাপাল্টি ১৩ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ২ দেশ

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সদস্যরা সোমবার থেকে ২০০টি বিমান নিয়ে তাদের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করে। এ মহড়া শুরুর পর উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয় এগুলো উস্কানিমূলক, এসব কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে উত্তর কোরিয়া।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়া নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যেই  বুধবার নতুন করে আরও ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। এর জবাবে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে দক্ষিণ কোরিয়াও। সব মিলিয়ে দুই দেশ এক সকালেই ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।

উত্তর কোরিয়ার ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলীয় জলসীমার কাছে।

এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে উত্তর কোরিয়ার এ ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল এ ঘটনাকে আঞ্চলিক আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি কার্যকরীভাবে একটি আঞ্চলিক আক্রমণ।

উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট  ইওনের দপ্তর থেকে হুশিয়ারি  দিয়ে বলা হয় ‘দৃঢ় ও কঠোর’ ব্যবস্থা নেওয়া হবে যেন ‘উত্তর কোরিয়া উস্কানির মূল্য দেয়’। এমন হুশিয়ারি দেওয়ার পরই পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে দেশটি।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ (জেসিএস) জানায়, উত্তর কোরিয়ার উপকূলীয় এলাকা ওনসান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছিল তিন ধরনের স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে একটি। পরবর্তীতে জেসিএস জানায়, সবমিলিয়ে কয়েক ধরনের ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া।

জেসিএস বলেছে অন্তত একটি ক্ষেপণাস্ত্র এনএলএল সীমারেখার ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ওলেউং দ্বীপ থেকে ১৬৭ কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়ে। এসব জায়গায় কয়েকবার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হয়।

ওলেউং দ্বীপের একজন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে প্রথম সাইরেনের শব্দ শুনতে পাই। আমরা সবাই বেজমেন্টের ভেতর আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই। আমরা সকাল ৯টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত উপরের দিকে ওঠে আসা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করি নিক্ষিপ্ত বস্তুটি সমুদ্রে আছড়ে পড়ার পর।

দ্বীপটির দক্ষিণ দিকের একজন বাসিন্দা জানিয়েছেন তারা সাইরেনের কোনো ধরনের শব্দ শুনতে পাননি।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বুধবার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়ার জবাবে।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি পাক জং চং বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভিজিলেন্ট স্ট্রম নামের যৌথ মহড়ায় যত বিমান ব্যবহার করা হয়েছে এটি প্রমাণ করে তাদের মহড়া ‘আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক’ এবং উত্তর কোরিয়াকে লক্ষ্য করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, এমনকি এই মহড়ার নাম নেওয়া হয়েছে ১৯৯০ সালে ইরাকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো ডিজার্ট স্ট্রম অভিযান থেকে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা: পাল্টাপাল্টি ১৩ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ২ দেশ

আপডেট সময় ১২:৩৪:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সদস্যরা সোমবার থেকে ২০০টি বিমান নিয়ে তাদের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করে। এ মহড়া শুরুর পর উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয় এগুলো উস্কানিমূলক, এসব কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে উত্তর কোরিয়া।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়া নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যেই  বুধবার নতুন করে আরও ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। এর জবাবে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে দক্ষিণ কোরিয়াও। সব মিলিয়ে দুই দেশ এক সকালেই ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।

উত্তর কোরিয়ার ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলীয় জলসীমার কাছে।

এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে উত্তর কোরিয়ার এ ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল এ ঘটনাকে আঞ্চলিক আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি কার্যকরীভাবে একটি আঞ্চলিক আক্রমণ।

উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট  ইওনের দপ্তর থেকে হুশিয়ারি  দিয়ে বলা হয় ‘দৃঢ় ও কঠোর’ ব্যবস্থা নেওয়া হবে যেন ‘উত্তর কোরিয়া উস্কানির মূল্য দেয়’। এমন হুশিয়ারি দেওয়ার পরই পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে দেশটি।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ (জেসিএস) জানায়, উত্তর কোরিয়ার উপকূলীয় এলাকা ওনসান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছিল তিন ধরনের স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে একটি। পরবর্তীতে জেসিএস জানায়, সবমিলিয়ে কয়েক ধরনের ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া।

জেসিএস বলেছে অন্তত একটি ক্ষেপণাস্ত্র এনএলএল সীমারেখার ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ওলেউং দ্বীপ থেকে ১৬৭ কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়ে। এসব জায়গায় কয়েকবার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হয়।

ওলেউং দ্বীপের একজন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে প্রথম সাইরেনের শব্দ শুনতে পাই। আমরা সবাই বেজমেন্টের ভেতর আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই। আমরা সকাল ৯টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত উপরের দিকে ওঠে আসা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করি নিক্ষিপ্ত বস্তুটি সমুদ্রে আছড়ে পড়ার পর।

দ্বীপটির দক্ষিণ দিকের একজন বাসিন্দা জানিয়েছেন তারা সাইরেনের কোনো ধরনের শব্দ শুনতে পাননি।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বুধবার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়ার জবাবে।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি পাক জং চং বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভিজিলেন্ট স্ট্রম নামের যৌথ মহড়ায় যত বিমান ব্যবহার করা হয়েছে এটি প্রমাণ করে তাদের মহড়া ‘আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক’ এবং উত্তর কোরিয়াকে লক্ষ্য করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, এমনকি এই মহড়ার নাম নেওয়া হয়েছে ১৯৯০ সালে ইরাকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো ডিজার্ট স্ট্রম অভিযান থেকে।