ঢাকা: অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জট খুলেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, না বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষা নেবে- এ নিয়ে জটিলতা কেটে গেছে।
বুয়েট কর্তৃপক্ষই পরীক্ষা নেবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম ধাপের নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে। বন্যা, জাতীয় নির্বাচনসহ সার্বিক দিক বিবেচনা করে হয়তো সেপ্টেম্বরে প্রথম ধাপের পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে রংপুর, সিলেট এবং বরিশাল বিভাগের ক্লাস্টারের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ দিন থেকেই বুয়েটের কারিগরি সহায়তা নিয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো। কারিগরি সহায়তার জন্য বুয়েট কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হতো। এবারও বুয়েটের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার কথা। কিন্তু বুয়েটের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ায় বাড়তি খরচে আপত্তি তোলে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব অর্থ সচিবের সঙ্গে দেখা করে যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। এতে জটিলতা কেটে যায়।
মন্ত্রণালয় জানায়, বুয়েটের মাধ্যমে পরীক্ষা নিলে প্রশ্ন ফাঁসের ঝুঁকি থাকে না। এছাড়া দ্রুত সময়ে পরীক্ষা নিয়ে নির্ভুলভাবে ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সক্ষমতা তৈরি হলে অধিদপ্তরের অধীনে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর, সিলেট এবং বরিশাল বিভাগের ক্লাস্টারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অধিদপ্তর। এরপর ২২ মার্চ রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৭ জুন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রথম ধাপে তিন লাখ ৬০ হাজার ৭০০, দ্বিতীয় ধাপে চার লাখ ৫৯ হাজার ৪৩৮ এবং তৃতীয় ধাপে তিন লাখ ৪০ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন। বর্তমানে প্রায় আট হাজারের বেশি পদ শূন্য রয়েছে।
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জট কমাতে বিভাগগুলোকে ক্লাস্টারে ভাগ করে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় চার লাখ চার হাজার সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। প্রতিবছর প্রায় ছয় হাজারের কাছাকাছি শিক্ষক অবসরে যান। ২০২০ সালের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০২২ সালে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জনকে নিয়োগ দিতে দুই বছর সময় লেগেছে। ক্লাস্টার বা বিভাগ ভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারলে ছয় মাসের মধ্যে নিয়োগ দেওয়া যাবে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।