ঢাকা ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্প : উদ্ধার কাজে যেতে ইস্তাম্বুলে হাজারো মানুষের ভিড়

তুরস্কে সংগঠিত ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে মারা গেছেন ২ হাজার ৯২১ জন। আর সিরিয়ায় এক হাজার ৪৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৬৫ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। 

এদিকে, তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর এলাকায় হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছেন। তারা সবাই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যেতে চান। স্থানীয়দের বরাতে বিবিসি বলছে, তারা ভূমিকম্পের পর সাহায্য করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে যাওয়ার জন্য জড়ো হয়েছেন। অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে চেয়েছেন। সেখানার উদ্ধার কাজে সহযোগিতার জন্য তারা ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে ভিড় করছেন।

তবে, বিবিসি যাচাই করতে পারেনি যে ছবিতে দেখা যাওয়া সবাই স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার আশা করছে কি-না। তবে, ভিড়ের মাত্রা অবশ্যই অস্বাভাবিক। ১৯৯৯ সালে একই মাত্রার একটি ভূমিকম্প পূর্ব মারমারা সাগরতীরে ইস্তাম্বুলের কাছে আঘাত হানলে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে, সোমবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, তুরস্কে মৃতের সংখ্যা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ হাজার ৩৭৯ থেকে  বেড়ে ২ হাজার ৯২১ জনে পৌঁছেছে।

তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতাই বলেছেন, তুরস্কের ১০টি প্রদেশে ১৪ হাজার ৪৮২ জন আহত হয়েছেন এবং ৭ হাজার ৮৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি ও অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় তীব্র ঠান্ডার মধ্যে বহু মানুষকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হয়েছে। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণে অনেক মানুষকে জটলা হয়ে বসে থাকার ছবিও তুলে এনেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

ভূমিকম্পে তুরস্কে অন্তত ৫ হাজার ৬০৬টি ভবন ধ্বংস হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপ শহরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পের পর আরো অন্তত ৭৭টি আফটারশক (পরাঘাত) অনুভূত হয়, যার মধ্যে তিনটি ছিল রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার বেশি। আবার দুপুরের দিকে হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্ধারকারী দল তুরস্কে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তুরস্ককে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীনসহ বিশ্বের বহু দেশ সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভূমিকম্প : উদ্ধার কাজে যেতে ইস্তাম্বুলে হাজারো মানুষের ভিড়

আপডেট সময় ০২:৪২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

তুরস্কে সংগঠিত ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে মারা গেছেন ২ হাজার ৯২১ জন। আর সিরিয়ায় এক হাজার ৪৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৬৫ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। 

এদিকে, তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর এলাকায় হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছেন। তারা সবাই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যেতে চান। স্থানীয়দের বরাতে বিবিসি বলছে, তারা ভূমিকম্পের পর সাহায্য করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে যাওয়ার জন্য জড়ো হয়েছেন। অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে চেয়েছেন। সেখানার উদ্ধার কাজে সহযোগিতার জন্য তারা ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে ভিড় করছেন।

তবে, বিবিসি যাচাই করতে পারেনি যে ছবিতে দেখা যাওয়া সবাই স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার আশা করছে কি-না। তবে, ভিড়ের মাত্রা অবশ্যই অস্বাভাবিক। ১৯৯৯ সালে একই মাত্রার একটি ভূমিকম্প পূর্ব মারমারা সাগরতীরে ইস্তাম্বুলের কাছে আঘাত হানলে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে, সোমবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, তুরস্কে মৃতের সংখ্যা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ হাজার ৩৭৯ থেকে  বেড়ে ২ হাজার ৯২১ জনে পৌঁছেছে।

তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতাই বলেছেন, তুরস্কের ১০টি প্রদেশে ১৪ হাজার ৪৮২ জন আহত হয়েছেন এবং ৭ হাজার ৮৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি ও অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় তীব্র ঠান্ডার মধ্যে বহু মানুষকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হয়েছে। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণে অনেক মানুষকে জটলা হয়ে বসে থাকার ছবিও তুলে এনেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

ভূমিকম্পে তুরস্কে অন্তত ৫ হাজার ৬০৬টি ভবন ধ্বংস হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপ শহরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পের পর আরো অন্তত ৭৭টি আফটারশক (পরাঘাত) অনুভূত হয়, যার মধ্যে তিনটি ছিল রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার বেশি। আবার দুপুরের দিকে হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্ধারকারী দল তুরস্কে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তুরস্ককে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীনসহ বিশ্বের বহু দেশ সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।