মোংলার মাছমারা গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মাইকেল ঘোষের ভিটা বাড়ি ঘর দখল করে তথাকথিত সরকারি ক্যানেল নির্মাণের পায়তারা, নিরাপত্তা চেয়ে মোংলা থানায় জিডি। মোংলায় স্কুল শিক্ষকের বাড়িঘর ও পৈত্তিক জমি দখলের পায়তারা করছে একটি ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী গ্রুপ বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ড মাছমারা গ্রামে বাবার রেখে যাওয়া জমিতে বাড়িঘর নির্মাণ করে একই গ্রামের কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে রাস্তায় বের হতে পারছেন না নিরীহ এ স্কুল শিক্ষক ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও ভূমিদস্যুদের হুমকির ভয়ে প্রতিনিয়ত দিন কাটতে হচ্ছে নিরীহ এই পরিবারটির।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মাইকেল ঘোষ জানায়, মোংলা উপজেলার আড়াজী মাকোরডোন মৌজার বি আর এস ১২৪২ নং-খতিয়ানে ৮৫. ৮০ একর জমি ১৯৭৩ সালে সোলাইমান নামের এক জনের কাছ থেকে ক্রয় করেন পিতা টমাস ঘোষ। সেই ওয়ারেশ সূত্রে কিছু জমির মালিক হন পুত্র সাবেক স্কুল শিক্ষক মাইকেল ঘোষ। পিতার মৃত্যু হওয়ায় অন্যান্য ওয়ারেশ ভাইবোনও ওই জমির ৩৬০৯ ও ৩৬৩৯ নং-দাগের বাকি অংশ ভাই মাইকেল ঘোষের কাছে বিক্রি করেন। মাছমারা এলাকায় .৮৫, .৮০ একর জমির মালিক মাইকেল ঘোষ বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করতে থাকেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোনও জায়গা খালি পড়ে থাকবেনা আর সেই কথাকে পুজি করে মাইকেল ঘোষ তার ভিটায় শাক সবজি ও মাছ চাষ শুরু করেন। তৈরি করেন সরকারি ফসল প্রদর্শনী প্রকল্প। যে সকল প্রকল্প থেকে বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও শাক সবজি ।
শিক্ষকতা শেষ করে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার সুবাদে কিছু দিন ঢাকায় অবস্থান করায় ওই এলাকার একটি ভূমিদস্যু গ্রুপ স্কুল শিক্ষকের ওই জমিটুকু দখলে নেয়ার পায়তারা করে। প্রথমে জোরপূর্বক ক্রয় করে নেয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু পৈত্রিক সম্পত্তি হাতছাড়া করবেনা বলে জানালে বিভিন্ন লোক দিয়ে স্কুল শিক্ষক মাইকেল ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর জুলুম অত্যাচার করতে থাকে এবং ভুমি দস্যু বাহিনির প্রধানের যোগ সাজোসে এবং তার তৎকালীন সরকারি ক্ষমতার বলে সেই জমির উপর এলজিইডির একটি কালভার্ট বসিয়ে দেওয়া হয়, যেন এই জমিটি খালে পরিনত হয়। এই কালভার্ট টি বসানোর জন্য এলজিইডি জমির মালিক মাইকেল ঘোষের কাছ থেকে কোন প্রকার অনুমতি নেয় নাই, তৎকালীন সময়ে কালভার্ট বসানোর কাজে বাধা দিলে এলাকার ভুমি দস্যু সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা উপরি সরকারি ক্ষমতার ভয় দেখান।
মাছমারা গ্রামে সরকারি খাল, স্লুইজগেট ও নব নির্মিত সরকারি ড্রেন থাকা সত্ত্বেও এই শিক্ষকের ভিটা জমির উপর দিয়ে জমি অধিগ্রহণ ব্যাতিত তথাকথিত সরকারি ক্যানেল নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা করার জন্য সরকারি কিছু কর্মকর্তা বর্তমানে মৌখিক ভাবে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। ভুমি দস্যু বাহিনির এই অবৈধ কাজে এই শিক্ষকের পরিবার বাঁধা দিলে জনৈক এক প্রভাবশালী ব্যক্তির সন্ত্রাসী গ্রুপ তাকে মারপিট করার জন্য আক্রমণ করে জমি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার জন্য বলে এবং নিয়মিত জীবননাশের হুমকি দিয়ে চলেছে। বিষয়টি পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (মেওর ও কমিশনার) সহ এলাকার সকলেরই নজরে আসে।
স্কুল শিক্ষকের সাথে কোন কিছুতেই না পেরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর , প্রমোদ হালদার, টিটো হালদার, জনি হালদার, বিশ্ব হালদার, লিলা হালদার ও শোভা রানী হালদারের নেতৃত্বে কয়েকজন ভুমি দস্যু ১০/১২ জন লোক নিয়ে কথিত মানববন্ধন করে নিরিহ স্কুল শিক্ষক দুই ভাই ও তার পরিবারদের বিরুদ্ধে। এসময় শিক্ষক পরিবারের সদস্যদের এলাকায় খারাপ ও কালোবাজারী বলে উল্লেখ করে মানহানীকর বক্তব্য প্রদান করেণ চিহ্নিত এই সন্ত্রাসী বাহিনী। যেখানে সম্পূর্ণ মিথ্যা ভাবে বলা হয় মাইকেল ঘোষ সরকারি কালভার্ট আটকে রেখে জলাবদ্ধতা তৈরি করে গ্রাম বাসিকে হুমকির মুখে ফেলেসে, কিন্তু এটা বলা হয় না যে সরকারি এই কালভার্ট টি একটি ব্যাক্তিগত জমির উপর, বিনা অনুমতিতে অবৈধ ভাবে স্থাপিত হয়েছে।
এছাড়াও এলাকার ভুমি দস্যু ওই প্রভাবশালী মহলটির ইন্দোনে প্রতিনিয়ত নিরিহ স্কুল শিক্ষক মাইকেল ঘোষ’র পরিবারের সদস্যদের বাসার সামনে রাস্তায় উদ্দোশ্যে মুলক ভাবে বাজে মন্তব্য করে কথা-বার্তা বলে আসছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয় পৌর কান্সিলর ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের অবহিত করা সহ ভুমি দস্যু ওই সন্ত্রাসী গ্রুপটির হাত থেকে রক্ষা ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মোংলা থানায় সাধারন ডায়রী করেছে সাবেক স্কুল শিক্ষক মাইকেল ঘোষ। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
দীর্ঘদিন থেকেই চলে এই বিষয় নিয়ে সালিশ দরবার। ইতিপূর্বেও এলাকার বহু নিরীহ গরিব মানুষের জমি দখল করতে না পেরে তাদের উপর অত্যাচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে ওই ভুমি দস্যু সন্ত্রাসী গ্রুপটির বিরুদ্ধে।
এই বিষয়ে মাইকেল ঘোষ সবার উদ্দেশ্য যে প্রশ্ন গুলো করেছেন সেগুলো আসলেই যুক্তি যুক্ত;
১। একজনের ব্যাক্তিগত জমির উপর, জমি মালিকের অনুমতি অথবা সম্মতি ছাড়া এলজিইডি কিভাবে সরকারি কালভার্ট নির্মাণ করে?
২। অধিগ্রহন ব্যাতিত কিভাবে কারো ব্যাক্তিগত জায়গার উপর সরকারি ড্রেন / ক্যানেল নির্মাণ হতে পারে? বাংলাদেশের কোন আইনে এই বিষয়ে বলা হয়েছে?
৩। গ্রামে সরকারি খাল, ড্রেন, স্লুইজ গেট থাকা সত্ত্বেও কোন আইনের ভিত্তিতে আমার ব্যাক্তিগত ভিটা জমির উপর দিয়ে ক্যানেল তৈরি করা হবে?
৪। গ্রামের পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকারি খাল ও স্লুজগেটটি কেন ব্যাবহার করা হয় না? কোন অপশক্তি এই স্লুজগেটটি নিয়ন্ত্রন করে?
৫। ভুমি মন্ত্রি বলেছেন কাগজ যার জমি তার তাহলে কোন অপশক্তি বার বার আমার ভিটা জমি দখল করে তথাকথিত সরকারি ক্যানেল নির্মান করতে চাচ্ছেন?
এই বিষয়ে মাইকেল ঘোষ আরও বলেন আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক হয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে আজ একটা কথাই বলতে চাই, আমার মত একজন নিরীহ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের সারা জীবনে অর্জিত শেষ সম্বলটুকু যেন কোন অদৃশ্য অপশক্তির দ্বারা দখল ও লুন্ঠিত না হয়।