ঢাকা ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি শরীয়তপুরে ছেলের গাছের গোড়ার আঘাতে বাবা নিহত সেই ছেলে গ্রেফতার। ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক শিগগিরই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা: শিবির সভাপতি চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত, ২ নেতা বহিষ্কার সরকার পতনের পর এই প্রথম মুখ খুললেন সাদ্দাম-ইনান কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ভোলায় শহীদ পরিবারদের কোটি টাকার সহায়তা দিল- জামায়াতে ইসলাম জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন যোগ দিতে নিউইয়র্কে দৈনিক তরুণ কণ্ঠ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শান্ত

ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন লাখো ইসরায়েলি নাগরিক। মূলত নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে শনিবার (২১ জানুয়ারি) এই বিক্ষোভ আয়োজন করা হয় এবং এতে লাখো মানুষ অংশ নেন।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, নতুন এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলবে। রোববার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারকদের বাড়াবাড়ি রোধ করার জন্য বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে দাবি করেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার। তবে আইনজীবীসহ অন্যান্য গোষ্ঠী এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলি সমাজে এই পরিকল্পনা ইতোমধ্যে গভীর রাজনৈতিক বিভাজন প্রশস্ত করেছে।

ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছেন নতুন ইসরায়েলি বিচারমন্ত্রী। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে বাতিল করা সহজ হবে।

ইসরায়েলি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান আভি চিমি বলেন, ‘তারা আমাদেরকে একনায়কতন্ত্রে পরিণত করতে চায়, তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। তারা বিচার বিভাগীয় কর্তৃত্বকে ধ্বংস করতে চায়, বিচার বিভাগীয় কর্তৃত্ব ছাড়া কোনও গণতান্ত্রিক দেশ নেই।’

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সরকার যদি পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে সফল হয় তাহলে বুঝতে হবে ইসরায়েলি গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ এই সংস্কার বিচারিক নিয়োগের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কঠোর করবে এবং সরকারি সিদ্ধান্ত বা নেসেটের মাধ্যমে প্রণীত আইনগুলোকে উল্টে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাকে সীমিত করবে।

তারা বলছেন, বিচারকদের স্বাধীনতার হুমকি এবং সরকার ও পার্লামেন্টের তত্ত্বাবধানকে দুর্বল করার পাশাপাশি নেতানিয়াহু সরকারের এই পরিকল্পনা সংখ্যালঘুদের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করবে এবং আরও দুর্নীতির সুযোগ উন্মুক্ত করবে।

সাদা ও নীল ইসরায়েলি পতাকা নিয়ে শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষের মধ্যে ছিলেন ৬৪ বছর বয়সী আমনন মিলার। তিনি বলছেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য ৩০ বছর এই দেশে যুদ্ধ করেছি এবং আমরা এই সরকারকে আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে দেব না।’

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে নতুন সরকার গঠনের বিষয়টি আস্থা ভোটে পাস হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন নেতানিয়াহু। আস্থা ভোটে পার্লামেন্টের ১২০ সদস্যের মধ্যে ৬৩ জন নতুন সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। আর বিপক্ষে ভোট দেন ৫৪ জন।

নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় এমন রাজনীতিবিদও রয়েছেন যিনি গত বছরের শেষের দিকে কর ফাঁকির কথা স্বীকার করেছিলেন। এছাড়া ৭৩ বছর বয়সী নেতানিয়াহু নিজেও আদালতে দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়ছেন এবং ইতোমধ্যেই তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে অন্য যে কারও চেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ইতিহাস গড়েছেন।

নেতানিয়াহু এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি তৃতীয় মেয়াদে ইহুদি এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি

ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০২:৫৮:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৩

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন লাখো ইসরায়েলি নাগরিক। মূলত নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে শনিবার (২১ জানুয়ারি) এই বিক্ষোভ আয়োজন করা হয় এবং এতে লাখো মানুষ অংশ নেন।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, নতুন এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলবে। রোববার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারকদের বাড়াবাড়ি রোধ করার জন্য বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে দাবি করেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার। তবে আইনজীবীসহ অন্যান্য গোষ্ঠী এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলি সমাজে এই পরিকল্পনা ইতোমধ্যে গভীর রাজনৈতিক বিভাজন প্রশস্ত করেছে।

ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছেন নতুন ইসরায়েলি বিচারমন্ত্রী। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে বাতিল করা সহজ হবে।

ইসরায়েলি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান আভি চিমি বলেন, ‘তারা আমাদেরকে একনায়কতন্ত্রে পরিণত করতে চায়, তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। তারা বিচার বিভাগীয় কর্তৃত্বকে ধ্বংস করতে চায়, বিচার বিভাগীয় কর্তৃত্ব ছাড়া কোনও গণতান্ত্রিক দেশ নেই।’

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সরকার যদি পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে সফল হয় তাহলে বুঝতে হবে ইসরায়েলি গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ এই সংস্কার বিচারিক নিয়োগের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কঠোর করবে এবং সরকারি সিদ্ধান্ত বা নেসেটের মাধ্যমে প্রণীত আইনগুলোকে উল্টে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাকে সীমিত করবে।

তারা বলছেন, বিচারকদের স্বাধীনতার হুমকি এবং সরকার ও পার্লামেন্টের তত্ত্বাবধানকে দুর্বল করার পাশাপাশি নেতানিয়াহু সরকারের এই পরিকল্পনা সংখ্যালঘুদের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করবে এবং আরও দুর্নীতির সুযোগ উন্মুক্ত করবে।

সাদা ও নীল ইসরায়েলি পতাকা নিয়ে শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষের মধ্যে ছিলেন ৬৪ বছর বয়সী আমনন মিলার। তিনি বলছেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য ৩০ বছর এই দেশে যুদ্ধ করেছি এবং আমরা এই সরকারকে আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে দেব না।’

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে নতুন সরকার গঠনের বিষয়টি আস্থা ভোটে পাস হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন নেতানিয়াহু। আস্থা ভোটে পার্লামেন্টের ১২০ সদস্যের মধ্যে ৬৩ জন নতুন সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। আর বিপক্ষে ভোট দেন ৫৪ জন।

নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় এমন রাজনীতিবিদও রয়েছেন যিনি গত বছরের শেষের দিকে কর ফাঁকির কথা স্বীকার করেছিলেন। এছাড়া ৭৩ বছর বয়সী নেতানিয়াহু নিজেও আদালতে দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়ছেন এবং ইতোমধ্যেই তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে অন্য যে কারও চেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ইতিহাস গড়েছেন।

নেতানিয়াহু এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি তৃতীয় মেয়াদে ইহুদি এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন।