ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ শেখ হাসিনা ও রেহানাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় হত্যা মামলা ভারতে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে ভোলায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ আল-আরাফাহ ঘিরে নতুন পাঁয়তারা রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র তিতু গ্রেফতার আঙুল ফুলে কলাগাছ গোয়াইনঘাটের বুঙ্গড়ী আজিজুল-মাসুক! দুদক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদের পাহাড়  আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ঘনিষ্ঠ দু’জনকে অতিরিক্ত এমডি পদে নিয়োগের আয়োজন ১১৭০ টাকার নামজারির খরচ, ভূমি কর্মকর্তা নেন ৮-১৫ হাজার! পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার হাসানুজ্জামানের দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্যে যেন আলাউদ্দিনের চেরাগ।

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনবান্ধব সিদ্ধান্ত নয়

 

দেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক নির্বাহী আদেশে এ মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়, যা চলতি মাসে থেকেই কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সিদ্ধান্তের আগেই নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতি আরেকবার বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে বলে মনে করছেন তারা।

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় বিইআরসির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এর মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিইআরসির জবাবদিহিতার সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গেল মনে মত জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে আবশ্যিকভাবেই একটা সামাজিক প্রভাব পড়বে। যেটা তেল বা গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সময়েও হয়েছিল। মূল্যস্ফীতি এখন ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, সবকিছুর দামও বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে এর সংশ্লিষ্ট সব কিছুর দাম আরেক দফা বেড়ে যাবে। যেটা মানুষের জীবনযাত্রার ওপর বাড়তি চাপ ফেলবে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জনজীবনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছেন অনেকে। দাম অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিকমতো দেওয়া সম্ভব না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সে কারণে দাম অনুযায়ী সঠিক মানের বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি এই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বেশিই পড়বে। সরকার এই খাতে প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে থাকে। সে ভর্তুকি সমন্বয় করতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন জনগণকে অতিরিক্ত দাম পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু সে যদি দাম অনুযায়ী সার্ভিস না পায়, তাহলে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। সুতরাং সরকারের উচিত মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি সঠিক মানের বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করা।

বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ দাম বাড়ানোয় মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব খুব একটা পড়বে না বলেও মতামত জানিয়েছেন অনেক অর্থনীতিবিদ। তবে নিজ ক্ষমতাবলে সরকারের বিদ্যুতের দাম বাড়ানো সিদ্ধান্ত জনবান্ধব নয় বলে মনে করছেন তারা।

অর্থনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার বিইআরসির মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারত, যেহেতু শুনানি তারাই করেছে। কিন্তু সরকার নিজ ক্ষমতাবলেই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে যদি মাল্টিপল সাপ্লায়ার আসে সেক্ষেত্রে বিইআরসিকে কিন্তু দায়িত্বে রাখতে হবে। তবে মূল্যস্ফীতির যতটা আশঙ্কা করা হচ্ছে, ততটা বাড়বে না। ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হলেও সেটা ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। পুরোটা বৃদ্ধি করা হলে একটা ব্যাপক চাপ আসত। তবে সার্বিকভাবে সরকারের এ সিদ্ধান্তগুলো সঠিক এবং জনবান্ধব নয়।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনবান্ধব সিদ্ধান্ত নয়

আপডেট সময় ০১:১২:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩

 

দেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক নির্বাহী আদেশে এ মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়, যা চলতি মাসে থেকেই কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সিদ্ধান্তের আগেই নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতি আরেকবার বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে বলে মনে করছেন তারা।

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় বিইআরসির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এর মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিইআরসির জবাবদিহিতার সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গেল মনে মত জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে আবশ্যিকভাবেই একটা সামাজিক প্রভাব পড়বে। যেটা তেল বা গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সময়েও হয়েছিল। মূল্যস্ফীতি এখন ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, সবকিছুর দামও বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে এর সংশ্লিষ্ট সব কিছুর দাম আরেক দফা বেড়ে যাবে। যেটা মানুষের জীবনযাত্রার ওপর বাড়তি চাপ ফেলবে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জনজীবনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছেন অনেকে। দাম অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিকমতো দেওয়া সম্ভব না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সে কারণে দাম অনুযায়ী সঠিক মানের বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি এই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বেশিই পড়বে। সরকার এই খাতে প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে থাকে। সে ভর্তুকি সমন্বয় করতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন জনগণকে অতিরিক্ত দাম পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু সে যদি দাম অনুযায়ী সার্ভিস না পায়, তাহলে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। সুতরাং সরকারের উচিত মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি সঠিক মানের বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করা।

বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ দাম বাড়ানোয় মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব খুব একটা পড়বে না বলেও মতামত জানিয়েছেন অনেক অর্থনীতিবিদ। তবে নিজ ক্ষমতাবলে সরকারের বিদ্যুতের দাম বাড়ানো সিদ্ধান্ত জনবান্ধব নয় বলে মনে করছেন তারা।

অর্থনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার বিইআরসির মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারত, যেহেতু শুনানি তারাই করেছে। কিন্তু সরকার নিজ ক্ষমতাবলেই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে যদি মাল্টিপল সাপ্লায়ার আসে সেক্ষেত্রে বিইআরসিকে কিন্তু দায়িত্বে রাখতে হবে। তবে মূল্যস্ফীতির যতটা আশঙ্কা করা হচ্ছে, ততটা বাড়বে না। ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হলেও সেটা ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। পুরোটা বৃদ্ধি করা হলে একটা ব্যাপক চাপ আসত। তবে সার্বিকভাবে সরকারের এ সিদ্ধান্তগুলো সঠিক এবং জনবান্ধব নয়।