হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অভিযোগে গত ৮ ডিসেম্বর মোহসেন সেকারি নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। দেশটিতে নতুন করে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ার পর এটি প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরব শনিবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে মোহসেন সেকারিকে তার পরিবারের সঙ্গে শেষ দেখার সুযোগও দেওয়া হয়নি। এমনকি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে তার পরিবারকে এটি অবহিতও করা হয়নি। তার পরিবারের সদস্যরা এ মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। আপিলের রায়ের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। এরমধ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে খবর পান, তাদের প্রিয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানি কর্মকর্তারা মোহসেনের পরিবারকে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ব্যাপারে অভিহিত করছেন। এ খবর শোনার পর তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মোহসেন সেকেরির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, হিজাব বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি রাজধানী তেহরানের একটি রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করছিলেন। ওই সময় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আধাসামরিক বাহিনী বাসিজ প্রতিরক্ষা ফোর্সের এক সদস্যকে আহত করেন। তার বিরুদ্ধে কথিত ‘সৃষ্টিকর্তার প্রতি শত্রুতার’ প্রমাণ পায় ইরানি আদালত। এরপরই খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মোহসেন। গত ২০ নভেম্বর আপিল আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। কিন্তু এর কোনো কিছুই তার পরিবারকে অভিহিত করা হয়নি।
এদিকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ইরানের রাজধানী তেহরানে হিজাব পরিধানের বিধান লঙ্ঘনের দায়ে আটক হন কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি। আটক অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে তিনি মারা যান। এরপরই দেশটিতে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত চারশরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।