ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লালমনিরহাটে মধ্যরাতে আগুনে পুড়ল ১৪ দোকান, কোটি টাকার ক্ষতি কুমিল্লা জেলা দেবিদ্বার থানা গ্রাম পুলিশের নির্দেশে রাতের অন্ধকারে অবৈধ গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ। দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় জেলা-উপজেলায় কন্ট্রোল রুম চালু : আইজিপি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মটর চালক দলের ভোলা জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা জামাই-শ্বশুর মিলে সোনালী লাইফের ৩৫৩ কোটি লুট সেতু বিভাগের নতুন সচিব ফাহিমুল ইসলাম হিজবুল্লাহর রকেটের আঘাতে কাঁপল ইসরাইলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর স্বামী-স্ত্রীর মরদেহের পাশে পড়ে ছিল চিরকুট। স্টার কাবাবে বাসি খাবার, প্রতিবাদ করায় রক্তাক্ত গ্রাহক রাজবাড়ীতে মহাসড়কে গাছ ফেলে যানবাহনে ডাকাতি

দশ মাসে ধর্ষণের শিকার ৮৩০ জন নারী, ঢাকায় সর্বাধিক

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর এই ১০ মাসে ৮৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ধর্ষণের পর খুন হয়েছেন ৩৯ জন নারী। এছাড়া ঢাকাতে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে নারী অধিকার সংগঠন জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ। 

রোববার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুর ও কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সানজীদ সুলতানাসহ আরও অনেকে।

এসময় লিখিত বক্তব্যে বিলসের পরিচালক নাজমা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই ৩৭১ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ জন শিশুসহ ৯১ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ১২ জন শিশু ও ১০ জন নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর দুজন শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ শিশুসহ ১০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। তাছাড়া নারী ও শিশু পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬৩টি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বরাত দিয়ে নাজমা ইসলাম বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই দশমাসে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৩০ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৯ জন। আর ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন। এছাড়া আরও ১৪১ নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নোয়াখালী জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।

তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা-নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা। এটা কোনো একক সমস্যা নয়। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হবে। নারীর প্রতি এ সহিংসতা রোধে নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরনো আইনগুলোকে সংস্কার করতে হবে এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নারী নির্যাতনের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।

হয়রানি ও নির্যাতন রোধে জেন্ডার প্লাটফর্মের দাবিগুলো হলো—

১. যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।

২. কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে।

৩. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

৪. আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, সেজন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে।

৫. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করতে হবে।

৬. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর সংশোধনীতে মহিলাদের প্রতি আচরণ সংক্রান্ত নতুন বিধি ৩৬১ ক এবং সেই বিধি(২)’এ বর্ণিত অভিযোগ কমিটি গঠন করতে হবে। সেগুলো হতে হবে হাইকোর্টের দেওয়া গাইডলাইনের ভিত্তিতে।

৭. নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত সংস্কৃতিচর্চা করতে হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লালমনিরহাটে মধ্যরাতে আগুনে পুড়ল ১৪ দোকান, কোটি টাকার ক্ষতি

দশ মাসে ধর্ষণের শিকার ৮৩০ জন নারী, ঢাকায় সর্বাধিক

আপডেট সময় ০৩:১২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর এই ১০ মাসে ৮৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ধর্ষণের পর খুন হয়েছেন ৩৯ জন নারী। এছাড়া ঢাকাতে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে নারী অধিকার সংগঠন জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ। 

রোববার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুর ও কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সানজীদ সুলতানাসহ আরও অনেকে।

এসময় লিখিত বক্তব্যে বিলসের পরিচালক নাজমা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই ৩৭১ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ জন শিশুসহ ৯১ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ১২ জন শিশু ও ১০ জন নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর দুজন শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ শিশুসহ ১০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। তাছাড়া নারী ও শিশু পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬৩টি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বরাত দিয়ে নাজমা ইসলাম বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই দশমাসে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৩০ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৯ জন। আর ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন। এছাড়া আরও ১৪১ নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নোয়াখালী জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।

তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা-নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা। এটা কোনো একক সমস্যা নয়। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হবে। নারীর প্রতি এ সহিংসতা রোধে নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরনো আইনগুলোকে সংস্কার করতে হবে এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নারী নির্যাতনের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।

হয়রানি ও নির্যাতন রোধে জেন্ডার প্লাটফর্মের দাবিগুলো হলো—

১. যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।

২. কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে।

৩. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

৪. আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, সেজন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে।

৫. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করতে হবে।

৬. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর সংশোধনীতে মহিলাদের প্রতি আচরণ সংক্রান্ত নতুন বিধি ৩৬১ ক এবং সেই বিধি(২)’এ বর্ণিত অভিযোগ কমিটি গঠন করতে হবে। সেগুলো হতে হবে হাইকোর্টের দেওয়া গাইডলাইনের ভিত্তিতে।

৭. নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত সংস্কৃতিচর্চা করতে হবে।