ঢাকা ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

  • রিয়াজ ফরাজি
  • আপডেট সময় ০৫:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫২১ বার পড়া হয়েছে

ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হিরন বাকলাই ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে জমি জবরদখল, অসদাচরণ ও নারীদেরকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউনূস ডাকুয়া নামের এক ভুক্তভোগীর পরিবার।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের একটি পত্রিকা অফিসে ওই ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেন।

ভুক্তভোগী পরিবার এবং অভিযুক্তরা একই গ্রামের বাসিন্দা। তাদের সবার বাড়ি ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্র প্রসাদ গ্রামে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করেন, দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর যাবত ইউনূস ডাকুয়া ওই গ্রামের চন্দ্র প্রসাদ মৌজার ৯০ শতাংশ জমিতে শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করে আসছেন। ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর স্থানীয় ইউপি সদস্য হিরন বাকলাই গংরা ওই জমি থেকে জমি পাবেন মর্মে জবরদস্তি শুরু করেন এবং ইউনূস ডাকুয়ার পরিবারকে গ্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন। এরপর ভুক্তভোগী পরিবার নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে গেল কয়েকমাস আগে ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এবং কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

জিডির তদন্তে গিয়ে ভেলুমিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইদুর রহমান উভয়পক্ষকে নিয়ে গেল মাসে ভেলুমিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে বসেন। সেখানে দু’পক্ষের উপস্থিতি একটি সালিসি বৈঠক হয়। কিন্তু, ওই বৈঠকে সুষ্ঠু কোনো ফয়সাল হয়নি।

গেল ২৪ জানুয়ারি সকালে ইউনূস ডাকুয়া তার পুকুর পাড়ে টিনের বেড়া দিতে গেলে হিরন, হারুন, জাহিদুল ও আনোয়ার বাকলাইয়ের সঙ্গে ইউনূস ডাকুয়ার পরিবারের সঙ্গে তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ইউনূস ডাকুয়ার অভিযোগ প্রতিপক্ষরা ঘাবের লাঠি এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার পরিবারের উপর হামলা চালায়।

এরপর কোস্টগার্ড খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে সকল তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হিরন বাকলাইকে আটক করা হয়। এরপর কোস্টগার্ড তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করেন। ইউনূস ডাকুয়া এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে হিরনের ভাই আনোয়ার ডাকুয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাইন পারভেজের উপস্থিতিতে ক্ষমা চান এবং বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে ফয়সাল করবেন মর্মে পুলিশকে মুচলেকা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে রাবেয়া আক্তার ময়না নামের এক নারী অভিযোগ তুলে বলেন, থানা থেকে মুচলেকা নিয়ে হিরন বাকলাই হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়ে নাটকীয় মোড় নেন। মূল ঘটনা অন্যখাতে প্রবাহিত করতে নানা ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছেন বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিপক্ষ গ্রুপের ফোরকান বাকলাই বলেন, আমরা ইউনূস ডাকুয়ার কাছ থেকে জমি পাই। তিনি সে জমি দিচ্ছেন না। যাঁর কারনে জমি নিয়ে এই দ্বন্দ্ব। থানা থেকে মুচলেকা নিয়ে কেন নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসনাইন পারভেজ জানান, কোস্টগার্ড হিরনকে থানায় সোপর্দ করার পর আমরা মামলা নিতে চেয়েছি। কিন্তু হিরনের ভাই আনোয়ার বাকলাই ইউনূস ডাকুয়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে মামলা না দিতে অনুরোধ করেন। পরে ইউনূস ডাকুয়ার কথায় মুচলেকা নিয়ে হিরনকে ছেড়ে দেয়া হয়। ইউনূস মানবিক দিক বিবেচনা করে মামলা দেয়নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোলায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

আপডেট সময় ০৫:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হিরন বাকলাই ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে জমি জবরদখল, অসদাচরণ ও নারীদেরকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউনূস ডাকুয়া নামের এক ভুক্তভোগীর পরিবার।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের একটি পত্রিকা অফিসে ওই ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেন।

ভুক্তভোগী পরিবার এবং অভিযুক্তরা একই গ্রামের বাসিন্দা। তাদের সবার বাড়ি ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্র প্রসাদ গ্রামে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করেন, দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর যাবত ইউনূস ডাকুয়া ওই গ্রামের চন্দ্র প্রসাদ মৌজার ৯০ শতাংশ জমিতে শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করে আসছেন। ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর স্থানীয় ইউপি সদস্য হিরন বাকলাই গংরা ওই জমি থেকে জমি পাবেন মর্মে জবরদস্তি শুরু করেন এবং ইউনূস ডাকুয়ার পরিবারকে গ্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন। এরপর ভুক্তভোগী পরিবার নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে গেল কয়েকমাস আগে ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এবং কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

জিডির তদন্তে গিয়ে ভেলুমিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইদুর রহমান উভয়পক্ষকে নিয়ে গেল মাসে ভেলুমিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে বসেন। সেখানে দু’পক্ষের উপস্থিতি একটি সালিসি বৈঠক হয়। কিন্তু, ওই বৈঠকে সুষ্ঠু কোনো ফয়সাল হয়নি।

গেল ২৪ জানুয়ারি সকালে ইউনূস ডাকুয়া তার পুকুর পাড়ে টিনের বেড়া দিতে গেলে হিরন, হারুন, জাহিদুল ও আনোয়ার বাকলাইয়ের সঙ্গে ইউনূস ডাকুয়ার পরিবারের সঙ্গে তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ইউনূস ডাকুয়ার অভিযোগ প্রতিপক্ষরা ঘাবের লাঠি এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার পরিবারের উপর হামলা চালায়।

এরপর কোস্টগার্ড খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে সকল তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হিরন বাকলাইকে আটক করা হয়। এরপর কোস্টগার্ড তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করেন। ইউনূস ডাকুয়া এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে হিরনের ভাই আনোয়ার ডাকুয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাইন পারভেজের উপস্থিতিতে ক্ষমা চান এবং বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে ফয়সাল করবেন মর্মে পুলিশকে মুচলেকা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে রাবেয়া আক্তার ময়না নামের এক নারী অভিযোগ তুলে বলেন, থানা থেকে মুচলেকা নিয়ে হিরন বাকলাই হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়ে নাটকীয় মোড় নেন। মূল ঘটনা অন্যখাতে প্রবাহিত করতে নানা ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছেন বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিপক্ষ গ্রুপের ফোরকান বাকলাই বলেন, আমরা ইউনূস ডাকুয়ার কাছ থেকে জমি পাই। তিনি সে জমি দিচ্ছেন না। যাঁর কারনে জমি নিয়ে এই দ্বন্দ্ব। থানা থেকে মুচলেকা নিয়ে কেন নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসনাইন পারভেজ জানান, কোস্টগার্ড হিরনকে থানায় সোপর্দ করার পর আমরা মামলা নিতে চেয়েছি। কিন্তু হিরনের ভাই আনোয়ার বাকলাই ইউনূস ডাকুয়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে মামলা না দিতে অনুরোধ করেন। পরে ইউনূস ডাকুয়ার কথায় মুচলেকা নিয়ে হিরনকে ছেড়ে দেয়া হয়। ইউনূস মানবিক দিক বিবেচনা করে মামলা দেয়নি।