ঢাকা ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ধরিত্রী প্রোপার্টিজের বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগ অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক বিআরটিএ মোটরযান পরিদর্শক নাসিম হায়দার চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের নেতাসহ ৫ শিক্ষার্থীকে শাস্তি কুয়েটের প্রো-ভিসি শেখ শরীফুল আলমের দায়িত্ব গ্রহণ বোরহানউদ্দিনে স্বপ্নকুড়িঁ আধুনিক শিশু শিক্ষালয় স্কুলে অভিভাবক সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত নাটোর রানী ভবানী সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীরা মাদকাসক্ত কোন ছেলেকে বিবাহ করবে না ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৬২৯ নতুন রোগী রংপুরে দলিল লেখক এর উপর হামলা বাবা ছেলে হাসপাতালে ভর্তি ভোলায় জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারীর বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের সংবাদ সম্মেলন রাহুল–প্রিয়াঙ্কাকে সহিংসতাগ্রস্ত সাম্ভালে যেতে দিল না পুলিশ

ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ

ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। এই পৃষ্ঠপোষকতাকে পুঁজি করে তার অন্তরালে ভিন্ন কায়দায় বিগত ১৭ বছরে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। হাসপাতাল ব্যবসার আড়ালে তার গাইনি ডাক্তার, নার্স ও নারী স্টাফদের সাথে কারো কারো অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে।

২০০৮ সালের আগে ডা. পরেশ চন্দ্র পাল কর্মরত ছিলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে। সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন ২০০৮ সালের পূর্বে ফরিদগঞ্জ বাজারে পলাশ ভিলা নামে তার স্ত্রীর মালিকানাধীন ২তলা একটি ভবন ছিলো। ২০০৮ সালের পরবর্তী সময়ে ওই ভবনের সম্মুখে আরো একটি পাঁচতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মাত্র ১৬ বছরে প্রায় কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। এ যেনো আলাদিনের চেরাগ পাওয়া বা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার মতই।

ফরিদগঞ্জ সদরে ২২ শতাংশ জমির উপর স্থাপিত ফরিদগঞ্জ লাইফ জেনারেল হাসপাতাল ভবনের মালিক তিনি নিজেই। হাসপাতালে একক আধিপত্য খাটানোর জন্যে ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার তার নিজের নামেই নিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই হাসপাতালে নার্স ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের যৌন হয়রানির শিকার হবার।

ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল সুবিধা পাওয়ার জন্যে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শেয়ার হোল্ডার হিসেবে নেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেনকে। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোহাম্মদ হোসেনের শেয়ারের টাকা ফেরত দিয়ে তার পরিবর্তে নেয়া হয় বিএনপি সমর্থিত অন্য ব্যাক্তিকে। তার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে আধিপত্য বিস্তার করে যে কোনো পন্থায়ই হোক অর্থের মালিক হওয়া।

উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক সাহাবুদ্দিন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে ধরা খেলে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তখনকার সময়ে এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হলেও সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা।

এছাড়াও ফরিদগঞ্জ লাইফ জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নার্স ও নারী স্টাফ জানান, ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের ছেলে পলাশ ও শাহাবুদ্দিনসহ কিছু লোক তাদেরকে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন এবং শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। বিনা প্রয়োজনে গাইনি ডাক্তার, নার্স ও নারী স্টাফদের পার্সোনাল রুমে ডেকে নিয়ে যান পরেশ চন্দ্র পালের ছেলে পলাশ চন্দ্র পাল। এ কারণে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়ে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন অনেক নারী স্টাফ। (ভিডিও ধারণ করা আছে) পলাশ চন্দ্র পাল চারিত্রিক দিক থেকে এতোটাই কুচরিত্রের একজন মানুষ যে, অভিযোগ রয়েছে তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পরেও তাকে নিয়ে পুনরায় সংসার করেন এবং অন্যদিকে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্যেও ফের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

লম্বা সময় জুড়ে আলোচিত ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের খুঁটির জোর কোথায় তা জানতে অনুসন্ধান করে জানা যায়, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জাতীয়, স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের মোটা অংকের টাকা ডোনেট করতেন নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্যে। বিগত সময়ে ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের দেয়া টাকা দিয়ে জামাত-বিএনপির বিভিন্ন নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যে মামলায় হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও অর্থের প্রভাব খাটিয়ে, খামখেয়ালিপনা করে আধিপত্য বিস্তার করেছেন বিভিন্ন মন্দির ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের কমিটিতেও। ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ মন্দিরে অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরে পরেশ চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে একাধিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং তা তার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করেছেন উৎপল সাহা।

পরেশ পালের স্ত্রী পেশায় নার্স হলেও অবৈধ গর্ভপাত ও নরমাল ডেলিভারি করাতে গিয়ে অনেক নবজাতকের মৃত্যু ও গর্ভবতী মায়েদের ক্ষতি হয়েছে বলে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। বহুবার যে কোনো অপকর্ম স্থানীয়ভাবে অর্থের বিনিময়ে সমাধান করেছেন ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল। তার হাসপাতালটির অনিয়ম, দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারির বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে তদন্ত করে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হাসপাতাল থেকে চাকরি ছেড়ে দেয়া বিভিন্ন কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ধরিত্রী প্রোপার্টিজের বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগ

ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ

আপডেট সময় ০৮:৫৪:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। এই পৃষ্ঠপোষকতাকে পুঁজি করে তার অন্তরালে ভিন্ন কায়দায় বিগত ১৭ বছরে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। হাসপাতাল ব্যবসার আড়ালে তার গাইনি ডাক্তার, নার্স ও নারী স্টাফদের সাথে কারো কারো অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে।

২০০৮ সালের আগে ডা. পরেশ চন্দ্র পাল কর্মরত ছিলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে। সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন ২০০৮ সালের পূর্বে ফরিদগঞ্জ বাজারে পলাশ ভিলা নামে তার স্ত্রীর মালিকানাধীন ২তলা একটি ভবন ছিলো। ২০০৮ সালের পরবর্তী সময়ে ওই ভবনের সম্মুখে আরো একটি পাঁচতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মাত্র ১৬ বছরে প্রায় কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। এ যেনো আলাদিনের চেরাগ পাওয়া বা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার মতই।

ফরিদগঞ্জ সদরে ২২ শতাংশ জমির উপর স্থাপিত ফরিদগঞ্জ লাইফ জেনারেল হাসপাতাল ভবনের মালিক তিনি নিজেই। হাসপাতালে একক আধিপত্য খাটানোর জন্যে ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার তার নিজের নামেই নিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই হাসপাতালে নার্স ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের যৌন হয়রানির শিকার হবার।

ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল সুবিধা পাওয়ার জন্যে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শেয়ার হোল্ডার হিসেবে নেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেনকে। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোহাম্মদ হোসেনের শেয়ারের টাকা ফেরত দিয়ে তার পরিবর্তে নেয়া হয় বিএনপি সমর্থিত অন্য ব্যাক্তিকে। তার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে আধিপত্য বিস্তার করে যে কোনো পন্থায়ই হোক অর্থের মালিক হওয়া।

উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক সাহাবুদ্দিন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে ধরা খেলে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তখনকার সময়ে এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হলেও সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা।

এছাড়াও ফরিদগঞ্জ লাইফ জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নার্স ও নারী স্টাফ জানান, ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের ছেলে পলাশ ও শাহাবুদ্দিনসহ কিছু লোক তাদেরকে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন এবং শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। বিনা প্রয়োজনে গাইনি ডাক্তার, নার্স ও নারী স্টাফদের পার্সোনাল রুমে ডেকে নিয়ে যান পরেশ চন্দ্র পালের ছেলে পলাশ চন্দ্র পাল। এ কারণে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়ে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন অনেক নারী স্টাফ। (ভিডিও ধারণ করা আছে) পলাশ চন্দ্র পাল চারিত্রিক দিক থেকে এতোটাই কুচরিত্রের একজন মানুষ যে, অভিযোগ রয়েছে তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পরেও তাকে নিয়ে পুনরায় সংসার করেন এবং অন্যদিকে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্যেও ফের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

লম্বা সময় জুড়ে আলোচিত ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের খুঁটির জোর কোথায় তা জানতে অনুসন্ধান করে জানা যায়, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জাতীয়, স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের মোটা অংকের টাকা ডোনেট করতেন নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্যে। বিগত সময়ে ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের দেয়া টাকা দিয়ে জামাত-বিএনপির বিভিন্ন নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যে মামলায় হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও অর্থের প্রভাব খাটিয়ে, খামখেয়ালিপনা করে আধিপত্য বিস্তার করেছেন বিভিন্ন মন্দির ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের কমিটিতেও। ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ মন্দিরে অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরে পরেশ চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে একাধিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং তা তার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করেছেন উৎপল সাহা।

পরেশ পালের স্ত্রী পেশায় নার্স হলেও অবৈধ গর্ভপাত ও নরমাল ডেলিভারি করাতে গিয়ে অনেক নবজাতকের মৃত্যু ও গর্ভবতী মায়েদের ক্ষতি হয়েছে বলে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। বহুবার যে কোনো অপকর্ম স্থানীয়ভাবে অর্থের বিনিময়ে সমাধান করেছেন ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল। তার হাসপাতালটির অনিয়ম, দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারির বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে তদন্ত করে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হাসপাতাল থেকে চাকরি ছেড়ে দেয়া বিভিন্ন কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার পরেশ চন্দ্র পালের ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।