ঢাকা ০২:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মমিন মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে লেক ভিউ আবাসিক হোটেলের নামে চলছে নারী জুয়া ও মাদক ব্যবসা যাত্রাবাড়িতে দেহব্যবসার মহারানী রেখার রঙিন জগৎ ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ কেবল শিল্প কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন উত্তরায় চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করছেন ইমরান খান নন্দনপুর সরকারি রাস্তা কেটে ইট পোড়াচ্ছেন আজাদ ব্রিকসের মালিক ইসহাক সরদার জামাই-শশুর মিইল্লা পদ্মা অয়েল খাইল গিল্লা! বখতিয়ারের কোটি টাকার রহস্য কী? অনিয়ম-দুর্নীতিতে বেহাল অবস্থা সামসুল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজ একাত্তরের কোনো ভুল প্রমাণিত হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবে জামায়াত দাবি আদায় না হলে আমরণ অনশনের ঘোষণা নকল নবীশদের

জীবনের মানে কি? দিনশেষে আপনার প্রাপ্তিটা কোথায়? সুখটা কোথায়?

  • স্বপ্নীল পলাশ
  • আপডেট সময় ০৩:৩৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
  • ৭৪১ বার পড়া হয়েছে

জীবনের মানে কি?
কখনো কি ভেবে দেখেছেন?
কীসের জন্য এত আয়োজন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আর প্রযুক্তির এই যুগে, আমরা ভুলতে বসেছি জীবনের মানে। জীবন মানে কি ৯-৫ টা অফিস? জীবন মানে কি যানজটে বসে একাকিত্বে বাড়ি ফেরা? আসলে আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে রেস এর ময়দানে। সবাই ছুটে চলছি, নিজ নিজ গন্তব্যে।

কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন নিজেকে নিয়ে?
কখনো কি কথা বলেছেন নিজের সাথে একান্তে। আসলে আমরা সবাই ছুটছি টাকার পিছনে। আবেগ, ভালোবাসা, মায়া-মমতা আজকাল নেই বললেই চলে। কিন্তু এতসব আয়োজনে যদি নিজের মনেই তৃপ্তি না থাকে, তবে বেঁচে থেকে কি লাভ?

আমাদের ভালোলাগা গুলো আজ চার ইঞ্চির বোকাবাক্সে (মোবাইল) এসে আটকে গেছে। সত্যি বলতে সবাই আমরা সাপ লুডুর ছকে আটকে গেছি। জীবনের মানেই আমরা ভুলতে বসেছি। আমি এমন অনেককে দেখেছি, যারা ভালো চাকরি করে, ভালো টাকা বেতন পায়, ভালো ব্যবসা করে, প্রচুর অর্থবিত্তের অধিকারী। কিন্তু মনে সুখ নেই। আবার এমন অনেককে দেখেছি, দু’বেলা না খেয়েও দিব্যি সুখে আছে, মনে আনন্দ আছে। আসলে সুখ এটার মানে যে কাড়িকাড়ি টাকা আর অঢেল অর্থ থাকলেই আসবে এমনটা নহে।

আমি সুখ দেখেছি রাস্তায় সেই টিএসসির বটতলায় প্রচণ্ড গরমে মাথায় গামছা দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা সেই রিকশাচালককে। আমি সুখ দেখেছি বস্তির খেটে খাওয়া পরিবার গুলোর মধ্যে। অথচ আমরা তো অনেকেই বড় বড় ফ্ল্যাট আর এসি রুমে থেকেও কাজ ও মানসিক চাপে ঘেমে অস্থির।

আসলে মনের তৃপ্তি থেকেই সুখের সৃষ্টি। যখন নিজেকে ভালোবাসবেন মন থেকে, তখন নিজের প্রতি একটা তৃপ্তি কাজ করে ভিতর থেকে, আর তখন সেই ভালোবাসাটাও সুখের হয়।

বড় চাকরি বা বিসিএস ক্যাডার না হলেই যে জীবনের মানে নেই, এমনটা ভাবারও দরকার নেই। কারণ ইতিহাস বলে, সবাই সৃষ্টি করতে জানে না। আর জীবনে যারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে, তারাই পরে নতুন জীবন সৃষ্টি করে গেছে।
তাই জীবনকে সবসময় জীবনের নিয়মে চলতে দিতে হয়। যখন যেটা ভালো লাগে সেটাই করা উচিত। ভালো লাগা সৃষ্টি হলেই, জীবনটা কাছ থেকে উপভোগ করা যায়।

ভেবে দেখুন গড় আয়ু সত্তর বছর, তার মধ্যে পড়াশুনাতে কেটে যায়, পঁচিশ বছর। পরবর্তীতে চাকরি বা ব্যবসার জীবন সব মিলিয়ে ষাট বছর। এরপর আপনি চাইলেও আপনার ব্রেন বা শরীর আগের মত কাজ করবে না।

জীবনটা ক্ষণিকের তাই, টাকা আর অফিস, আর কাজের পিছনে ছুটে, অর্থহীন করবেন না।

আমি ঠিক সময়ে ঠিক কাজ পছন্দ করি। অফিসের নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করলেন, অতিরিক্ত টাকাও পেলেন, অথচ মানসিক ভাবে শান্তি পাচ্ছেন না। তাহলে এসব আয়োজন কাদের জন্য? পরিবারকে সময় না দিয়ে অধিক টাকা এবং বসকে খুশির জন্য নিজের জান-প্রাণ সব দিলেন, তাতে প্রতিষ্ঠান বা বস খুশি হবে, হয়ত ভালো পারিশ্রমিকও পাবেন। কিন্তু তাতে কি লাভ? নিজে শান্তিতে থাকতে পারলেন না। নিজেকে সময় দিতে পারলেন না।
জীবনের লক্ষ্য কি শুধুই টাকা? জীবনটাকে ভালোবাসার মত সময় দিতে হয়। যান্ত্রিক শহরে প্রতিদিন গড়ে যানজটে চার-পাঁচ ঘণ্টা চলে যায়। এরপর যা সময় পাবেন তাতে অফিস আর ঘুম। এটাই কি জীবন? এর জন্যই কি এত আয়োজন।

একটা জিনিস সবসময় জেনে রাখবেন, এই যুগটা দেওয়া এবং নেওয়ার মধ্যে। আপনি যতদিন সার্ভিস দিবেন ততদিন আপনি পারফেক্ট। দেশ বলেন বা আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন না কেনো,
-আপনি শুধু একটা সংখ্যা আর কিছুই না।

তাহলে দিনশেষে আপনার প্রাপ্তিটা কী?
সুখটা কোথায়?

নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন, নিজেকে একটু সময় দিন। আজ যে দিনটা চলে যাচ্ছে সেটা কাল আর আসবে না। সত্তর বছরের গড় আয়ুর এই জীবনে সত্তর সেকেন্ডও যেন আপনাকে আফসোস করতে না হয়।

আমি বিশ্বাস করি, আফসোস ছাড়া বেঁচে থাকার নামই জীবন।

 

পলাশ চন্দ্র দাশ

ডিজিটাল ক্রিয়েটর, প্রেরণামূলক লেখক
Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মমিন মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে

জীবনের মানে কি? দিনশেষে আপনার প্রাপ্তিটা কোথায়? সুখটা কোথায়?

আপডেট সময় ০৩:৩৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

জীবনের মানে কি?
কখনো কি ভেবে দেখেছেন?
কীসের জন্য এত আয়োজন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আর প্রযুক্তির এই যুগে, আমরা ভুলতে বসেছি জীবনের মানে। জীবন মানে কি ৯-৫ টা অফিস? জীবন মানে কি যানজটে বসে একাকিত্বে বাড়ি ফেরা? আসলে আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে রেস এর ময়দানে। সবাই ছুটে চলছি, নিজ নিজ গন্তব্যে।

কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন নিজেকে নিয়ে?
কখনো কি কথা বলেছেন নিজের সাথে একান্তে। আসলে আমরা সবাই ছুটছি টাকার পিছনে। আবেগ, ভালোবাসা, মায়া-মমতা আজকাল নেই বললেই চলে। কিন্তু এতসব আয়োজনে যদি নিজের মনেই তৃপ্তি না থাকে, তবে বেঁচে থেকে কি লাভ?

আমাদের ভালোলাগা গুলো আজ চার ইঞ্চির বোকাবাক্সে (মোবাইল) এসে আটকে গেছে। সত্যি বলতে সবাই আমরা সাপ লুডুর ছকে আটকে গেছি। জীবনের মানেই আমরা ভুলতে বসেছি। আমি এমন অনেককে দেখেছি, যারা ভালো চাকরি করে, ভালো টাকা বেতন পায়, ভালো ব্যবসা করে, প্রচুর অর্থবিত্তের অধিকারী। কিন্তু মনে সুখ নেই। আবার এমন অনেককে দেখেছি, দু’বেলা না খেয়েও দিব্যি সুখে আছে, মনে আনন্দ আছে। আসলে সুখ এটার মানে যে কাড়িকাড়ি টাকা আর অঢেল অর্থ থাকলেই আসবে এমনটা নহে।

আমি সুখ দেখেছি রাস্তায় সেই টিএসসির বটতলায় প্রচণ্ড গরমে মাথায় গামছা দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা সেই রিকশাচালককে। আমি সুখ দেখেছি বস্তির খেটে খাওয়া পরিবার গুলোর মধ্যে। অথচ আমরা তো অনেকেই বড় বড় ফ্ল্যাট আর এসি রুমে থেকেও কাজ ও মানসিক চাপে ঘেমে অস্থির।

আসলে মনের তৃপ্তি থেকেই সুখের সৃষ্টি। যখন নিজেকে ভালোবাসবেন মন থেকে, তখন নিজের প্রতি একটা তৃপ্তি কাজ করে ভিতর থেকে, আর তখন সেই ভালোবাসাটাও সুখের হয়।

বড় চাকরি বা বিসিএস ক্যাডার না হলেই যে জীবনের মানে নেই, এমনটা ভাবারও দরকার নেই। কারণ ইতিহাস বলে, সবাই সৃষ্টি করতে জানে না। আর জীবনে যারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে, তারাই পরে নতুন জীবন সৃষ্টি করে গেছে।
তাই জীবনকে সবসময় জীবনের নিয়মে চলতে দিতে হয়। যখন যেটা ভালো লাগে সেটাই করা উচিত। ভালো লাগা সৃষ্টি হলেই, জীবনটা কাছ থেকে উপভোগ করা যায়।

ভেবে দেখুন গড় আয়ু সত্তর বছর, তার মধ্যে পড়াশুনাতে কেটে যায়, পঁচিশ বছর। পরবর্তীতে চাকরি বা ব্যবসার জীবন সব মিলিয়ে ষাট বছর। এরপর আপনি চাইলেও আপনার ব্রেন বা শরীর আগের মত কাজ করবে না।

জীবনটা ক্ষণিকের তাই, টাকা আর অফিস, আর কাজের পিছনে ছুটে, অর্থহীন করবেন না।

আমি ঠিক সময়ে ঠিক কাজ পছন্দ করি। অফিসের নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করলেন, অতিরিক্ত টাকাও পেলেন, অথচ মানসিক ভাবে শান্তি পাচ্ছেন না। তাহলে এসব আয়োজন কাদের জন্য? পরিবারকে সময় না দিয়ে অধিক টাকা এবং বসকে খুশির জন্য নিজের জান-প্রাণ সব দিলেন, তাতে প্রতিষ্ঠান বা বস খুশি হবে, হয়ত ভালো পারিশ্রমিকও পাবেন। কিন্তু তাতে কি লাভ? নিজে শান্তিতে থাকতে পারলেন না। নিজেকে সময় দিতে পারলেন না।
জীবনের লক্ষ্য কি শুধুই টাকা? জীবনটাকে ভালোবাসার মত সময় দিতে হয়। যান্ত্রিক শহরে প্রতিদিন গড়ে যানজটে চার-পাঁচ ঘণ্টা চলে যায়। এরপর যা সময় পাবেন তাতে অফিস আর ঘুম। এটাই কি জীবন? এর জন্যই কি এত আয়োজন।

একটা জিনিস সবসময় জেনে রাখবেন, এই যুগটা দেওয়া এবং নেওয়ার মধ্যে। আপনি যতদিন সার্ভিস দিবেন ততদিন আপনি পারফেক্ট। দেশ বলেন বা আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন না কেনো,
-আপনি শুধু একটা সংখ্যা আর কিছুই না।

তাহলে দিনশেষে আপনার প্রাপ্তিটা কী?
সুখটা কোথায়?

নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন, নিজেকে একটু সময় দিন। আজ যে দিনটা চলে যাচ্ছে সেটা কাল আর আসবে না। সত্তর বছরের গড় আয়ুর এই জীবনে সত্তর সেকেন্ডও যেন আপনাকে আফসোস করতে না হয়।

আমি বিশ্বাস করি, আফসোস ছাড়া বেঁচে থাকার নামই জীবন।

 

পলাশ চন্দ্র দাশ

ডিজিটাল ক্রিয়েটর, প্রেরণামূলক লেখক