ঢাকা ০১:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি আনার হত্যা: চিকিৎসা ভিসায় ভারত যায় মোস্তাফিজ ও ফয়সাল

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার জন্য চিকিৎসা ভিসায় ভারত যান মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল। তাদের ভিসা পেতে ব্যাংক স্টেটমেন্ট তৈরি, রোগের প্রেসক্রিপশনসহ যাবতীয় কাজ করে দেন হত্যার মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন।

চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়া তাদের বড় অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে এমপি আনার হত্যায় যুক্ত করেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে রিমান্ডে এমন তথ্যই জানিয়েছে তারা। গ্রেফতার মোস্তাফিজুর রহমান ফকির (৩৪) আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আসামিকে উপস্থিত করে জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহফুজুর রহমান এ আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফৌজদারি ১৬৪ ধারায় মোস্তাফিজের জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক। তবে মোস্তাফিজ জবানবন্দিতে কী বলেছেন তা জানা যায়নি। এ নিয়ে এমপি আনার হত্যায় গ্রেফতার চার আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। জানা যায়, মোস্তাফিজ খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার যুগ্মীপাশা গ্রামের মো. ইমান আলী ফকিরের ছেলে।

গত ২৭ জুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আতাউল্লাহ আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী সাহাজী ওরফে শাজীর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওইদিন তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

গত ২৬ জুন সীতাকুণ্ড পাতাল কালীমন্দির থেকে গ্রেফতার হন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। পরে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় তাদের। তবে রিমান্ডের পঞ্চম দিন দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারেক্তি দিল মোস্তাফিজ। এদিকে রিমান্ডে থাকা অপর আসামি ফয়সালকে আজ বুধবার আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবির তদন্ত কর্মকর্তারা।

এর আগে গত ৩ জুন আসামি সেলেস্তি রহমান, ৪ জুন তানভীর ভূঁইয়া এবং ৫ জুন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর গত ১৪ জুন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুও জবানবন্দি দেন। তারা সবাই এখন কারাগারে আছেন।

মঙ্গলবার ডিবির পক্ষ থেকে আদালতে মোস্তাফিজের জবাবন্দি রেকর্ডের আবেদনে উলে­খ করা হয়েছে, আসামিকে নিবিড়ভাবে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, এমপি আনার হত্যার অন্যতম আসামি শিমুল ভূঁইয়ার কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য এ বছরের মার্চ মাসের শেষদিকে যোগাযোগ করে মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। শিমুল তাদের বড় অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে একটা কাজ করে দেওয়ার জন্য ভারতের কলকাতায় যেতে বলে। জরুরি পাসপোর্ট করার জন্য মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে টাকাও দেয় সে। পাসপোর্ট করতে ১৫ এপ্রিল খুলনা থেকে ঢাকায় আসে এবং হত্যার মাস্টারমাইন্ড শাহীনের বসুন্ধরার এল ব্লকের বাসায় ওঠে।

শাহীনের ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ধারী সিয়াম হোসেন নামে এক লোক ওই বাসায় গিয়ে শাহীনের নির্দেশে মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সিয়াম তাদের (মোস্তাফিজ ও ফয়সাল) জানিয়েছিল, তাদের ভিসার জন্য শাহীন ব্যাংক স্টেটমেন্ট তৈরি, রোগের প্রেসক্রিপশনসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য প্রচুর টাকা খরচ করছে। ভারতীয় চিকিৎসা ভিসা পাওয়ার পর ২৫ এপ্রিল মোস্তাফিজ ও ফয়সাল ঢাকা থেকে খুলনা ফিরে যায়। পরে শিমুল ভূঁইয়া ও শাহীনের পরিকল্পনায় তারা ভারতের কলকাতায় যায় এবং নিউমার্কেট এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে উঠে অবস্থান করতে থাকে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তাফিজ ১০ মে কলকাতার নিউটাউনস্থ সঞ্জীবা গার্ডেনস নামক বাসায় যায়। শাহীনের পরিকল্পনায় এমপি আনার ওই বাসায় গেলে ঘাতক দলের প্রধান শিমুল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় জিহাদ, ফয়সাল, মোস্তাফিজসহ অজ্ঞাতনামারা আনারকে অজ্ঞান করে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মরদেহ থেকে হাড় ও মাংস আলাদা করে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে।

ঘাতক দলের সদস্য মোস্তাফিজ ও ফয়সাল কিলিং মিশন শেষ করে ১৯ মে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসে এবং শাহীনের বসুন্ধরার এল ব্লকের বাসায় ওঠে। পরে পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে ওই বাসা থেকে পালিয়ে আÍগোপনে চলে যায়। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়।

ঝুলে আছে ডরিনের কলকাতা যাওয়া : কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয় এমপি আনারের মরদেহের খণ্ডিত অংশ। এরপর ডিএনএ নমুনা নিতে গত ২০ জুন আনারের মেয়ে ডরিনকে ফোন করে কলকাতার সিআইডি। তাকে দ্রুত সময়ে কলকাতা যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। কলকাতার আদালতের অনুমোদন পেলে যেতে বলা হয়। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত কলকাতার সিআইডি ডরিনকে ডিএনএ নমুনা নিতে আদালতের অনুমোদনের বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি।

এমপি আনারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, সিআইডি আমাদের জানিয়েছিল ডিএনএ নমুনা দেওয়ার জন্য ইন্ডিয়ান আদালতের অনুমোদন পেলে জানাবে। এর পরই আমরা যাব। আদালতের অনুমোদনের বিষয়ে এখনো কলকাতার সিআইডি কিছু জানায়নি আমাদের। তারা জানালে তাৎক্ষণিক আমরা যেতে পারব।

উল্লেখ্য, এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে। ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে ডরিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। এছাড়া ভারতে একটি হত্যা মামলা হয়। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে নয়জনকে গ্রেফতার করেছে।

দুই নেতাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন : এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার ঘটনায় আ.লীগের দুই নেতাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে কালীগঞ্জ আওয়ামী লীগের একাংশ। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে শহরের কোটচাঁদপুর রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়ুব হোসেন খান বলেন, কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ বিদ্যমান। আনার হত্যার ঘটনা শুনে আমরা সবকিছু ভুলে তার পরিবারের পাশে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের জড়িয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এমপি আনার হত্যা: চিকিৎসা ভিসায় ভারত যায় মোস্তাফিজ ও ফয়সাল

আপডেট সময় ১১:৫৯:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার জন্য চিকিৎসা ভিসায় ভারত যান মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল। তাদের ভিসা পেতে ব্যাংক স্টেটমেন্ট তৈরি, রোগের প্রেসক্রিপশনসহ যাবতীয় কাজ করে দেন হত্যার মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন।

চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়া তাদের বড় অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে এমপি আনার হত্যায় যুক্ত করেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে রিমান্ডে এমন তথ্যই জানিয়েছে তারা। গ্রেফতার মোস্তাফিজুর রহমান ফকির (৩৪) আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আসামিকে উপস্থিত করে জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহফুজুর রহমান এ আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফৌজদারি ১৬৪ ধারায় মোস্তাফিজের জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক। তবে মোস্তাফিজ জবানবন্দিতে কী বলেছেন তা জানা যায়নি। এ নিয়ে এমপি আনার হত্যায় গ্রেফতার চার আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। জানা যায়, মোস্তাফিজ খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার যুগ্মীপাশা গ্রামের মো. ইমান আলী ফকিরের ছেলে।

গত ২৭ জুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আতাউল্লাহ আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী সাহাজী ওরফে শাজীর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওইদিন তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

গত ২৬ জুন সীতাকুণ্ড পাতাল কালীমন্দির থেকে গ্রেফতার হন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। পরে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় তাদের। তবে রিমান্ডের পঞ্চম দিন দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারেক্তি দিল মোস্তাফিজ। এদিকে রিমান্ডে থাকা অপর আসামি ফয়সালকে আজ বুধবার আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবির তদন্ত কর্মকর্তারা।

এর আগে গত ৩ জুন আসামি সেলেস্তি রহমান, ৪ জুন তানভীর ভূঁইয়া এবং ৫ জুন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর গত ১৪ জুন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুও জবানবন্দি দেন। তারা সবাই এখন কারাগারে আছেন।

মঙ্গলবার ডিবির পক্ষ থেকে আদালতে মোস্তাফিজের জবাবন্দি রেকর্ডের আবেদনে উলে­খ করা হয়েছে, আসামিকে নিবিড়ভাবে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, এমপি আনার হত্যার অন্যতম আসামি শিমুল ভূঁইয়ার কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য এ বছরের মার্চ মাসের শেষদিকে যোগাযোগ করে মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। শিমুল তাদের বড় অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে একটা কাজ করে দেওয়ার জন্য ভারতের কলকাতায় যেতে বলে। জরুরি পাসপোর্ট করার জন্য মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে টাকাও দেয় সে। পাসপোর্ট করতে ১৫ এপ্রিল খুলনা থেকে ঢাকায় আসে এবং হত্যার মাস্টারমাইন্ড শাহীনের বসুন্ধরার এল ব্লকের বাসায় ওঠে।

শাহীনের ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ধারী সিয়াম হোসেন নামে এক লোক ওই বাসায় গিয়ে শাহীনের নির্দেশে মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সিয়াম তাদের (মোস্তাফিজ ও ফয়সাল) জানিয়েছিল, তাদের ভিসার জন্য শাহীন ব্যাংক স্টেটমেন্ট তৈরি, রোগের প্রেসক্রিপশনসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য প্রচুর টাকা খরচ করছে। ভারতীয় চিকিৎসা ভিসা পাওয়ার পর ২৫ এপ্রিল মোস্তাফিজ ও ফয়সাল ঢাকা থেকে খুলনা ফিরে যায়। পরে শিমুল ভূঁইয়া ও শাহীনের পরিকল্পনায় তারা ভারতের কলকাতায় যায় এবং নিউমার্কেট এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে উঠে অবস্থান করতে থাকে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তাফিজ ১০ মে কলকাতার নিউটাউনস্থ সঞ্জীবা গার্ডেনস নামক বাসায় যায়। শাহীনের পরিকল্পনায় এমপি আনার ওই বাসায় গেলে ঘাতক দলের প্রধান শিমুল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় জিহাদ, ফয়সাল, মোস্তাফিজসহ অজ্ঞাতনামারা আনারকে অজ্ঞান করে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মরদেহ থেকে হাড় ও মাংস আলাদা করে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে।

ঘাতক দলের সদস্য মোস্তাফিজ ও ফয়সাল কিলিং মিশন শেষ করে ১৯ মে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসে এবং শাহীনের বসুন্ধরার এল ব্লকের বাসায় ওঠে। পরে পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে ওই বাসা থেকে পালিয়ে আÍগোপনে চলে যায়। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়।

ঝুলে আছে ডরিনের কলকাতা যাওয়া : কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয় এমপি আনারের মরদেহের খণ্ডিত অংশ। এরপর ডিএনএ নমুনা নিতে গত ২০ জুন আনারের মেয়ে ডরিনকে ফোন করে কলকাতার সিআইডি। তাকে দ্রুত সময়ে কলকাতা যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। কলকাতার আদালতের অনুমোদন পেলে যেতে বলা হয়। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত কলকাতার সিআইডি ডরিনকে ডিএনএ নমুনা নিতে আদালতের অনুমোদনের বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি।

এমপি আনারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, সিআইডি আমাদের জানিয়েছিল ডিএনএ নমুনা দেওয়ার জন্য ইন্ডিয়ান আদালতের অনুমোদন পেলে জানাবে। এর পরই আমরা যাব। আদালতের অনুমোদনের বিষয়ে এখনো কলকাতার সিআইডি কিছু জানায়নি আমাদের। তারা জানালে তাৎক্ষণিক আমরা যেতে পারব।

উল্লেখ্য, এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে। ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে ডরিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। এছাড়া ভারতে একটি হত্যা মামলা হয়। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে নয়জনকে গ্রেফতার করেছে।

দুই নেতাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন : এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার ঘটনায় আ.লীগের দুই নেতাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে কালীগঞ্জ আওয়ামী লীগের একাংশ। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে শহরের কোটচাঁদপুর রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়ুব হোসেন খান বলেন, কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ বিদ্যমান। আনার হত্যার ঘটনা শুনে আমরা সবকিছু ভুলে তার পরিবারের পাশে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের জড়িয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।