ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়িয়েছে। শীর্ষ দুই প্রার্থীর কেউই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় রান-অফে (দ্বিতীয় দফা) গড়ায় এ নির্বাচন। ৫ জুলাই ভোটের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (২৮ জুন) ইরানে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। এতে মূলত দুজন প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। তবে এগিয়ে থাকা প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাসুদ পেজেশকিয়ানও ৫০ শতাংশ ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছেন।
প্রথম পর্বের চূড়ান্ত ফলাফল অনুযায়ী, দেশটির সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংস্কারপন্থি নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান ১ কোটি ৪ লাখেরও বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধান পরমাণু আলোচক ও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির অনুগত সাঈদ জালিলি পেয়েছেন প্রায় ৯৫ লাখ ভোট।
নির্বাচনের বাকি দুই প্রার্থী পার্লামেন্ট স্পিকার বাকের কলিবফ ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি পেয়েছেন যথাক্রমে ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ ভোট ও ২ লাখ ৬ হাজার ৩৯৭ ভোট।
এদিকে, সাঈদ জালিলি ও মাসুদ পেজেশকিয়ান দ্বিতীয় পর্বের ভোটের জন্য তাদের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। ইরানের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, প্রথম পর্বের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষিত হওয়ার মুহূর্ত থেকে শীর্ষ দুই প্রার্থী তাদের প্রচারাভিযান শুরু করতে পারবেন, যা চলবে দ্বিতীয় পর্বের ভোটগ্রহণ শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত।
এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটার ছিলেন ৬ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে মোট ভোট দিয়েছেন ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৫ জন ভোটার। অর্থাৎ এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে ইরানের ক্ষমতা রক্ষণশীলদের হাতে থাকলেও, এবারের নির্বাচনে পেজেশকিয়ান এগিয়ে থাকায় আশার আলো দেখছেন সংস্কারপন্থিরা। তবে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ইরানের রাজনীতিতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। কারণ, দেশটির প্রকৃত ক্ষমতা থাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতেইরানের নির্ধারিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৫ সালের জুন মাসে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৯ মে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তার সাত সফরসঙ্গীসহ এক মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর ফলে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।
ইব্রাহিম রাইসির শাহাদাতের পর সংবিধান অনুযায়ী প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তার তত্ত্বাবধানেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।