বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের জলসীমা থেকে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। টানা তিন দিন ধরে সীমান্তের ওপারে নাফ নদে দেখতে পাওয়া জাহাজটি শনিবার সকাল থেকে দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দও বন্ধ হয়েছে।
এদিকে সেন্টমার্টিনে জেলা প্রশাসনের পাঠানো খাদ্যসামগ্রী পৌঁছেছে। ব্যবসায়ীরাও কিছু পণ্য নিয়ে গেছেন। এতে দ্বীপে স্বস্তি ফিরেছে।
সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে টেকনাফের নাফ নদ ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমারের অংশে জাহাজটি অবস্থান করছিল। এটি শনিবার সকাল থেকে আর দেখা যাচ্ছে না। রাতের কোনো এক সময় এটি চলে গেছে। একই সঙ্গে শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সীমান্তের ওপার থেকে কোনো ধরনের বোমা বা গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, বুধবার দুপুর থেকে নাফ নদের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার বিপরীতে মিয়ানমারের নিকটবর্তী এলাকায় দেখা যায় একটি বড় আকারের জাহাজ। এরপর বুধবার রাত ৯টা থেকে এপারে ভেসে আসতে থাকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। যে শব্দ টানা ৩ ঘণ্টা ধরে সীমান্তের লোকজন শুনেছেন। এরপর থেমে থেমে শব্দ শোনা গেছে রাতভর। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত আবারও শোনা গেছে এই বিকট শব্দ। এরপর সেই বড় জাহাজটি দক্ষিণ দিকে সরে গিয়ে টেকনাফের নাফ নদ ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়। সেই জাহাজ থেকে মিয়ানমারের স্থলভাগে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টারশেল বর্ষণের শব্দ অব্যাহত ছিল। শুক্রবার সকাল থেকে সেই শব্দ বন্ধ হয়। আর শনিবার সকাল থেকে জাহাজটিও দেখা যাচ্ছে না।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সার্ভিস ট্রলারগুলো বিকল্প পথে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করছে। পাঠানো হয়েছে খাদ্যপণ্যও।
এ নিয়ে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা হাসান আলী শনিবার যুগান্তরকে বলেন, কক্সবাজার থেকে খাদ্যসামগ্রী আসার কারণে আমরা কিছুটা স্বস্তিতে আছি।
নুরুল আলম রানা নামে এক যুবক জানান, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে এবং ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী দ্বীপে নিয়ে এসেছেন, তা দিয়ে আমরা দ্বীপবাসী আপাতত ২০-২২ দিন চলতে পারব।
এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে, তা আমরা দিন-রাত বিতরণ করছি। যাতে দ্বীপের মানুষ ঈদের আগে কিছুটা হলেও শান্তিতে থাকতে পারেন।