এশিয়া কাপের ১৬তম আসরে ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুললো ভারত। মোহাম্মদ সিরাজের বিধ্বংসী বোলিংয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করে মাত্র ৫০ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৫১ রানের মামুলি লক্ষ্য মাত্র ৬.১ ওভারেই পেরিয়ে যায় ভারত। হেসেখেলে ১০ উইকেটের দাপুটে জয়ে এশিয়া কাপে অষ্টমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো তারা।
রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দাসুন শানাকা। নিজেও হয়তো ভাবেননি এতো বাজেভাবে ভুল প্রমাণ হবেন তিনি। মাত্র ৯২ বলেই অলআউট হয় তার দল। ভারতের হয়ে মাত্র ২১ রান খরচ করে ৬ উইকেট শিকার করেন সিরাজ। এছাড়া হার্দিক পান্ডিয়া তিনটি ও জাসপ্রিত বুমরাহ নেন এক উইকেট। লঙ্কানদের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৭ রান আসে কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে।
বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের ৪০ মিনিট পরে শুরু হয় খেলা। ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা প্রথম ধাক্কাটা খায় ইনিংসের প্রথম ওভারেই। জাসপ্রিত বুমরাহর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার কুশল পেরেরা।
এরপর শুধু সিরাজের দাপট। কোনও রান ছাড়াই নিজের প্রথম ওভার শেষ করেন এই পেসার। দ্বিতীয় ওভারে একাই শিকার করেন ৪ উইকেট। তার প্রথম বলে লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে পয়েন্টে রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ক্যাচ দেন পাথুম নিসাঙ্কা (২)। পরের বল ডট দিলেও তৃতীয় বলে নতুন আসা ব্যাটার সাদিরা সামারাবিক্রমাকে (০) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সিরাজ। চতুর্থ বলে আসালাঙ্কাকে (০) ফিরিয়ে জাগিয়ে তোলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। যদিও হ্যাটট্রিকের পরিবর্তে সেই বলে ৪ হজম করতে হয়েছে ডানহাতি এই পেসারকে। কিন্তু শেষ বলে তুলে নেন আরো এক উইকেট। দুর্দান্ত এক আউটসুইঙ্গারে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলকে ক্যাচ দেন ধনঞ্জয়া (৪)।
বল বাই বল ডাটা অনুসারে, প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে এক ওভারে চার উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন সিরাজ। এর পরের ওভারে দাসুন শানাকাকে বোল্ড করে ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার পূর্ণ করেন ডানহাতি এ পেসার। যার ফলে মাত্র ১২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। এরপর খুব বেশি দূর আর নিজেদের ইনিংস টেনে নিতে পারেনি তারা। কিছুক্ষণ থিতু হলেও সিরাজের ষষ্ঠ শিকারে পরিণত হন কুশল মেন্ডিস। ১৫তম ওভারের প্রথম দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেন পান্ডিয়া।
শ্রীলঙ্কাদের ১১ জন ব্যাটারের মধ্যে ৫ জনকেই ফিরতে হয় শূন্য রানে আউট হয়ে। মেন্ডিসের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৩ রান করেন দুশান হেমন্ত। এছাড়া আর কোনও ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। এশিয়া কাপে এটাই কোনও দলের সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে লজ্জার রেকর্ডটি ছিল বাংলাদেশের। ২০০০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৩ রানে অলআউট হয়েছিল টাইগাররা।
জবান দিতে মাঠে নেমে উড়ন্ত শুরু করেন ভারতের দুই ওপেনার শুভমান গিল ও ইশান কিশান। যেই উইকেটে মুখ থুবড়ে পড়েছিল লঙ্কানরা, সেখানেই করলেন সাবলীল ব্যাটিং। মাত্র ৩৭ বলেই পাড়ি দেন ৫১ রানের লক্ষ্য। গিল ১৯ বলে ২৭ ও কিশান অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ২৩ রানে।