সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে লংমার্চের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। আগামী শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) এই লংমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
মূলত শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের বর্তমান সরকারকে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে রাজি করতে এবং আগাম নির্বাচন ঘোষণায় বাধ্য করার জন্য এই লংমার্চ কর্মসূচি পালন করবেন ইমরান। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। মঙ্গলবার দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর (শুক্রবার) লাহোরের লিবার্টি চক এলাকা থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশে এই লংমার্চ শুরু হবে এবং তিনি নিজেই এর নেতৃত্ব দেবেন।
ইমরান বলেন, ‘আমরা বেলা ১১টায় লিবার্টি চক এলাকায় জড়ো হবো এবং এরপর আমরা ইসলামাবাদের দিকে মিছিল শুরু করবো’। পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃত স্বাধীনতা’ অর্জনের জন্য এই লংমার্চ ডাকা হয়েছে এবং প্রতিবাদকারীরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাদের লক্ষ্য পূরণ করবেন।
লংমার্চে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শান্তিপূর্ণ থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার বলেন, ‘আমরা কোনো সহিংসতার জন্য ইসলামাবাদ যাচ্ছি না; আমরা কোনো আইন ভঙ্গ করব না; আমরা উচ্চ নিরাপত্তা বলয় বলে পরিচিত রেড জোনে প্রবেশ করব না; এবং আমরা রাজধানীতে এমন একটি জায়গায় বিক্ষোভ করব যেখানে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি আছে।’ এর আগে গত ২৫ মে লংমার্চ তথা প্রতিবাদ-মিছিল করেছিলেন ইমরান খান। তিনি বলছেন, দেশে রক্তপাত এড়াতে শান্তিপূর্ণ সেই মিছিলটি বন্ধ করা হয়েছিল। ইমরানের ভাষায়, ‘হাকীকী আজাদীর বা সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য আমরা লংমার্চ করবো এবং এর কোনো সময়সীমা নেই। আমরা জিটি রোড থেকে ইসলামাবাদ পৌঁছাব। এবং সারা পাকিস্তানের সাধারণ মানুষও ইসলামাবাদে আসবে।’
তিনি দাবি করেন, আসন্ন এই লংমার্চ হবে পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ। এই লংমার্চ রাজনীতির জন্য নয়, বরং দেশের ভবিষ্যতের জন্য। ইমরানের ভাষায়, ‘এটা রাজনীতির বাইরের কিছু, এটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই চোরদের থেকে মুক্তির যুদ্ধ। এই জিহাদই ঠিক করবে দেশ কোথায় যাবে।’
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করে আসছেন ইমরান খান। এসব সমাবেশে তিনি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হয়েছেন বলে অভিযোগ করে আসছেন। এ নিয়ে দেশটির রাজনীতিতে উত্তাপ বিরাজ করছে।
মূলত, আগামী বছরের অক্টোবরে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের আগেই আগাম নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে সমাবেশ করছেন ইমরান খান। তার এসব সমাবেশ ঘিরে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে রয়েছে। ইমরান খান বলছেন, তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে পড়েছে সরকার।
মূলত পাকিস্তানে আগাম নির্বাচনের দাবিতে বর্তমান জোট সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন জোরদারের চেষ্টা করছে পিটিআই।