বিএনপির সমাবেশ যাতে বড় না হয় এ জন্য সরকার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘মৃত্যুকূপে ধাবমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ অভিযোগ করেন তিনি। সম্প্রতি বিএনপির আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহতদের স্মরণে এ ‘পুস্তিকা’টি প্রকাশ করেছে জিয়া পরিষদ।
গত আগস্ট থেকে জ্বালানি তেল ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সভা-সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এসব কর্মসূচি পালনকালে ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম, ছাত্র দলের নুরে আলম, নারায়ণগঞ্জে যুব দলের রাজা আহমেদ শাওন, মুন্সীগঞ্জে যুব দলের শহিদুল ইসলাম শাওন পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবীদের সংগঠন ‘জিয়া পরিষদ’ এর উদ্যোগে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল চলমান আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করে সকলের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কীভাবে অন্যায়-অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন হচ্ছে তা আপনারা সবাই জানেন। নিশ্চয়ই লক্ষ্য করছেন যে, আন্দোলনকে দমন করার জন্য সরকার কীভাবে ভয়ংকর কাজ করছে। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে, আবার তারা বিরোধী দলের সমাবেশে বাধা দিচ্ছে। বাস মালিকদের দিয়ে গণপরিবহন বন্ধ করেছে, সমাবেশ যেন বড় না হয়। সমাবেশ বড় না হলে তাদের (সরকার) লাভটা কী হবে? তারা বলতে পারবে যে, বিএনপির সমাবেশ বড় হয়নি। তাতে কী হবে? মানুষের অন্তরের মধ্যে যে ক্ষোভ জমে আছে, প্রতিটি মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ বিরাজ করছে তা কী ওরা মুছে দিতে পারবে না? পারবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আর না। এখন সময় এসে গেছে যার যা শক্তি আছে সেটি দিয়ে সমস্ত দেশের মানুষকে জাগিয়ে তোলা। আজ জিয়া পরিষদের দায়িত্ব হবে এ গণজাগরণের কাজটি করা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, আমাদেরও রাস্তায় নেমে আসতে হবে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সোচ্চার কণ্ঠে বলতে হবে, তাদের আমরা চাই না, মানুষ চায় না। যারা মানুষ খুন করে, গুম করে, যারা জনগণের সম্পদ লুটে নিয়ে বিদেশে পাঠায় তাদের মানুষ চায় না। এই সরকারকে যদি আমরা সরাতে না পারি এই দেশের অস্তিত্ব থাকবে না, জাতির অস্তিত্ব থাকবে না।
জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় জিয়া পরিষদের অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান ফরহাদ, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল, নিহত শহিদুল ইসলাম শাওনের বাবা ছোয়াব আলী ভুঁইয়া বক্তব্য রাখেন।