১৯ মার্চ বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নদীপথে লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযানের চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষায় সকাল ১১:৩০ মিনিটে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল সংলগ্ন ঘাটে নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডার সাব-লেফটেন্যান্ট মো. ফজলুল হক, সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ পিপিএম, চাঁদপুর নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএমএস ইকবাল, লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি মো. রুহুল আমিন হাওলাদার, বিআইডব্লিউটিএ-এর উপপরিচালক বাবু লাল সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
সভায় বক্তারা ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সভাপতি সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার, নৌ পুলিশ, চাঁদপুর অঞ্চল, চাঁদপুর , তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, লঞ্চে পলিথিন মোড়ানো খাবার বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। যাত্রীরা যদি খাবার সঙ্গে নিয়ে আসেন, তবে যেন কোনোভাবেই ব্যবহৃত পলিথিন নদীতে না ফেলে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।তিনি আরও বলেন, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে আচরণ করতে হবে। যাত্রীদের জোরপূর্বক লঞ্চে ওঠানোর জন্য টানা-হেঁচড়া করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। প্রত্যেক যাত্রী নিজ সুবিধামত লঞ্চে উঠবেন। লঞ্চের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও নির্দেশনা দেন যে, সিএনজি ও অটোরিকশা চালকরা নির্ধারিত পার্কিং এলাকায় অবস্থান করবেন এবং যাত্রীদের টানাটানি করা থেকে বিরত থাকবেন। কোনো অবস্থাতেই সিএনজি বা অটোরিকশা চালকরা পল্টন পর্যন্ত যাত্রী নিতে পারবেন না। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট অনুসারে ভাড়া গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুততম সময়ে প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সরকার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে লাইসেন্স গ্রহণে সহানুভূতির আহ্বান জানান তিনি। শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন এবং পুলিশের কাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি লঞ্চে নামাজের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃক নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী লঞ্চ পরিচালনা করতে হবে। ২০ রমজান থেকে ঈদের কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রধান অতিথি জনাব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, জেলা প্রশাসক, চাঁদপুর, তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, লঞ্চে উপস্থিতির (Attendance) ব্যবস্থা রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নদীর মাঝখান থেকে নৌকা দিয়ে লঞ্চে যাত্রী ওঠানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। ঈদের পাঁচ দিন আগে এবং পাঁচ দিন পর পর্যন্ত লঞ্চঘাটে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হবে।
তিনি আরও নির্দেশনা দেন যে, সিএনজি ও অটোরিকশা চালকদের নির্ধারিত পার্কিং এলাকায় অবস্থান করতে হবে এবং লঞ্চের কাছে এসে যাত্রীদের টানাটানি করা যাবে না। ঈদ উপলক্ষে চুরি ও ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দেন যে, স্পিডবোট কেবল দিনের বেলায় চলবে এবং রাতের বেলা স্পিডবোট চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে—
লঞ্চে যাত্রী ওঠানোর সময় টানাহেঁচড়া করা যাবে না, যাত্রী নিজ সুবিধামতো লঞ্চে উঠবে।
লঞ্চ কর্মচারীদের নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সিএনজি ও অটোরিকশা নির্ধারিত পার্কিং স্থানে রাখতে হবে, কোনোভাবেই লঞ্চের কাছে এসে যাত্রীদের ডাকা যাবে না।স্পিডবোট শুধু দিনের বেলায় চলবে, রাতের বেলায় চলাচল বন্ধ থাকবে। লঞ্চে নামাজের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বিআইডব্লিউটিএ নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী লঞ্চ পরিচালনা করতে হবে।
সভায় উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে যাত্রী, লঞ্চ মালিক, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।