বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর নীল নকশা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দেশীয় সিগারেট কোম্পানির ওপরে করের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে বিদেশি কোম্পানির সিগারেটের কর ভার ২ শতাংশ বাড়ানো হলেও দেশীয় কোম্পানির বাড়ানো হয়েছে ১২ শতাংশ। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বৈষম্যমূলক কর বৃদ্ধির ফলে দেশীয় কোম্পানিগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
রোববার রাজধানীতে একটি হোটেলে ন্যাশনাল সিগারেট ম্যানুফেকচারার অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুন নাহার লাকি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর স্বৈরাচারি মনোভাব, মনোপলি বাণিজ্যনীতি ও সরকারি আমলাদের একচ্ছত্র আধিপত্যের জন্য শতভাগ দেশীয় কোম্পানিগুলো রুগ্ন থেকে রুগ্নতর হচ্ছে। নিম্নস্তরে বিদেশি ব্রান্ড অনুমোদন করা হবে না ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নেওয়া এই সিদ্ধান্তটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দোসর বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসন ও চক্রান্তের জন্য ব্যাহত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, গত ১০ বছর আগে বিএটি যেখানে ২০০ কোটি টাকা মুনাফা করত, এখন তা ২ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিদেশি মালিকানাধীন শেয়ারের লভ্যাংশের অংশ হিসেবে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে।
অন্যদিকে দেশীয় কোম্পানিগুলোর মুনাফা দেশেই থাকছে। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। গত ১০ বছরে বিদেশি কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্যের কারণে দেশীয় কোম্পানিগুলো সর্বস্বান্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধের দোড়গোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে।
নাজমুন নাহার লাকি বলেন, বিদেশী কোম্পানির উত্পাদিত সিগারেটে নামমাত্র ২ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। অন্যদিকে ধুকতে থাকা দেশীয় উদ্যোক্তাদের নিম্ন স্তরের সিগারেটে এক অর্থবছরে প্রায় ১২ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এটি চরম বৈষম্য ও আত্মঘাতি সিদ্ধান্তের শামিল। এ শিল্পের সঙ্গে চাষী, কারখানা শ্রমিক, বিপণন কর্মীসহ ১০ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে। নজিরবিহীন বৈষম্যমূলক করনীতির কারণে দেশীয় শিল্পের ধ্বংস হয়ে যাবে।