ঢাকা ০৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
১৪ কোটি টাকা আত্মসাতকারী এনজিও মালিকের শাস্তি ও জামানত ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক-কে হুমকির প্রতিবাদে মঠবাড়িয়ায় মানববন্ধন দেশে ফিরেই মিজানুর রহমান আজহারীর স্ট্যাটাস ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জনগণ অন্যতম সহায়ক শক্তি’ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না হলে রাজপথে আন্দোলন হবে : ১২ দলীয় জোট ভারতের অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা উচিত : সিলেটে মির্জা ফখরুল ‘সাড়ে ১৫ বছর শাসনকারীরা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদের সাজিয়েছে’ কুর্দি যোদ্ধাদের শেষ পরিণতির হুঁশিয়ারি এরদোয়ানের ‘১৫ বছরে চট্টগ্রামে যত উন্নয়ন হয়েছে এখন সব ক্ষতির কারণ’ বিমানের সিটের নিচে ২ কেজি সোনা

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ছেলের হাতের মোয়া নয় যে চাইলেই পাওয়া যাবে

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারত সরকারের কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশে পূর্বতন ভারতের হাইকমিশনার মহেশ সচদেভা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আবেদন সত্ত্বেও শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বন্ধ করা যেতে পারে এবং এর জন্য বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শুধুমাত্র ভারতীয় আদালতে আপিল করতে হবে। নিউজ এজেন্সি এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহেশ সচদেভা বলেছেন যে যেমন অনেক ইউরোপীয় দেশ বিভিন্ন শর্তের ভিত্তিতে ভারতের প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে, একইভাবে শেখ হাসিনা আদালতে গেলে আদালতের আদেশ অনুযায়ী ভারতও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

যেসব কারণে ভারত প্রত্যর্পণ স্থগিত করতে পারে :

উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে এবং এই চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করছে। মহেশ সচদেবা বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে শর্ত রয়েছে যা রাজনৈতিক ইস্যুতে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করে। সুতরাং এই শর্তগুলি বিদ্যমান এবং এই শর্তগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যর্পণের অনুরোধের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন এবং বলতে পারেন যে তার সাথে অন্যায় আচরণ করা হতে পারে। ভারত আদালতে এটাও বলতে পারে যে আমরা নিশ্চিত নই যে তার (শেখ হাসিনা) বিচার ব্যবস্থা সঠিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে কি না।’

সচদেবা বলেছেন যে ‘আপনাদের মনে থাকবে যে ইউরোপ থেকে সন্ত্রাসীদের ভারতে প্রত্যর্পণ চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রত্যর্পণ বন্ধ করা হয়েছিল কারণ তাদের ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা এবং ভারতীয় কারাগার গুলিকে ইউরোপের মান অনুসারে বিবেচনা করা হয়নি। পলাতক শিল্পপতি বিজয় মাল্যও তার প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে এই যুক্তিগুলি ব্যবহার করেছেন।’ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে সংশোধিত হয়েছিল। ‘এই প্রত্যর্পণ চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের সাধারণ সীমান্তে বিদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের সমস্যা মোকাবেলা করা। তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিতেও প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যানের শর্ত রয়েছে, যা অনুযায়ী অপরাধ রাজনৈতিক হলে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যাবে।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে একটি চিরকুট পাঠানো হয়েছে যাতে বলা হয় তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে বাংলাদেশে পাঠানো হোক। যাইহোক, এই নোটে কি চার্জ করা হয়েছে তা বলা হয়নি। মহেশ সচদেবা আরও বলেন, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে এবং বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব জোরদার হতে পারে।
কিন্তু সেটা আইনি ব্যাপার নয় । ভারত সরকারেরও তার দ্বারা প্রভাবিত হবার কথা নয় ৷ সম্ভবত বিরোধী দলগুলোও এ ব্যাপারে সরকারের বিরুদ্ধে যাবে না ৷ ভারতীয় আদালতে গেলে শেখ হাসিনা পর্য্যাপ্ত লাইফলাইন পাবেন যাতে প্রত্যর্পন আটকে যায় ।একটি ধর্মসর্বস্ব জিহাদি সন্ত্রাসী দেশের বেনানা রিপাব্লিকের বিচার ব্যবস্থা ও অপরাধী সংরক্ষণ যে ভারতের সমতুল গণতান্ত্রিক হবেনা তার বহু উদাহরণ ইউনুস সরকার ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে যেগুলো হাসিনাকে আদালতে প্রভূত সাহায্য করবে ৷

এ ছাড়া ভারতের আরও একটি জোরদার সুবিধা আছে প্রত্যর্পণের অনুরোধটিকে ড্রয়ারের মধ্যে রেখে ভুলে যাওয়ার । এটি হল, ইউনুসের উপদেষ্টা সরকার বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধি নয় , এটি সেনা সমর্থিত একটি তত্তাবধায়ক সরকার মাত্র । সুতরাং একে অবজ্ঞা করাই সঙ্গত যা মোদি ইতিমধ্যে দেখিয়ে দিয়েছেন ইউনুসের সঙ্গে বৈঠকের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে এবং শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট দিসানায়েককে দিল্লীতে হার্দিক অভ্যর্থনা দিয়ে ও বড় বৈঠক করে ৷ ইউনুসের সরকারের সঙ্গে ভারতের ভবিষ্যৎ নীতি কি হবে তা বোঝা যাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জয়শঙ্করের বর্তমান বৈঠকের পর কারণ ইউনুস যে মার্কিন ২১৯৯ নং ডিপ ষ্টেটের অঙ্গ তা আজ প্রায় সর্বজনবিদিত।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

১৪ কোটি টাকা আত্মসাতকারী এনজিও মালিকের শাস্তি ও জামানত ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ছেলের হাতের মোয়া নয় যে চাইলেই পাওয়া যাবে

আপডেট সময় ০৮:৩৭:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারত সরকারের কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশে পূর্বতন ভারতের হাইকমিশনার মহেশ সচদেভা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আবেদন সত্ত্বেও শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বন্ধ করা যেতে পারে এবং এর জন্য বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শুধুমাত্র ভারতীয় আদালতে আপিল করতে হবে। নিউজ এজেন্সি এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহেশ সচদেভা বলেছেন যে যেমন অনেক ইউরোপীয় দেশ বিভিন্ন শর্তের ভিত্তিতে ভারতের প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে, একইভাবে শেখ হাসিনা আদালতে গেলে আদালতের আদেশ অনুযায়ী ভারতও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

যেসব কারণে ভারত প্রত্যর্পণ স্থগিত করতে পারে :

উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে এবং এই চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করছে। মহেশ সচদেবা বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে শর্ত রয়েছে যা রাজনৈতিক ইস্যুতে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করে। সুতরাং এই শর্তগুলি বিদ্যমান এবং এই শর্তগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যর্পণের অনুরোধের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন এবং বলতে পারেন যে তার সাথে অন্যায় আচরণ করা হতে পারে। ভারত আদালতে এটাও বলতে পারে যে আমরা নিশ্চিত নই যে তার (শেখ হাসিনা) বিচার ব্যবস্থা সঠিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে কি না।’

সচদেবা বলেছেন যে ‘আপনাদের মনে থাকবে যে ইউরোপ থেকে সন্ত্রাসীদের ভারতে প্রত্যর্পণ চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রত্যর্পণ বন্ধ করা হয়েছিল কারণ তাদের ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা এবং ভারতীয় কারাগার গুলিকে ইউরোপের মান অনুসারে বিবেচনা করা হয়নি। পলাতক শিল্পপতি বিজয় মাল্যও তার প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে এই যুক্তিগুলি ব্যবহার করেছেন।’ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে সংশোধিত হয়েছিল। ‘এই প্রত্যর্পণ চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের সাধারণ সীমান্তে বিদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের সমস্যা মোকাবেলা করা। তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিতেও প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যানের শর্ত রয়েছে, যা অনুযায়ী অপরাধ রাজনৈতিক হলে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যাবে।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে একটি চিরকুট পাঠানো হয়েছে যাতে বলা হয় তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে বাংলাদেশে পাঠানো হোক। যাইহোক, এই নোটে কি চার্জ করা হয়েছে তা বলা হয়নি। মহেশ সচদেবা আরও বলেন, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে এবং বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব জোরদার হতে পারে।
কিন্তু সেটা আইনি ব্যাপার নয় । ভারত সরকারেরও তার দ্বারা প্রভাবিত হবার কথা নয় ৷ সম্ভবত বিরোধী দলগুলোও এ ব্যাপারে সরকারের বিরুদ্ধে যাবে না ৷ ভারতীয় আদালতে গেলে শেখ হাসিনা পর্য্যাপ্ত লাইফলাইন পাবেন যাতে প্রত্যর্পন আটকে যায় ।একটি ধর্মসর্বস্ব জিহাদি সন্ত্রাসী দেশের বেনানা রিপাব্লিকের বিচার ব্যবস্থা ও অপরাধী সংরক্ষণ যে ভারতের সমতুল গণতান্ত্রিক হবেনা তার বহু উদাহরণ ইউনুস সরকার ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে যেগুলো হাসিনাকে আদালতে প্রভূত সাহায্য করবে ৷

এ ছাড়া ভারতের আরও একটি জোরদার সুবিধা আছে প্রত্যর্পণের অনুরোধটিকে ড্রয়ারের মধ্যে রেখে ভুলে যাওয়ার । এটি হল, ইউনুসের উপদেষ্টা সরকার বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধি নয় , এটি সেনা সমর্থিত একটি তত্তাবধায়ক সরকার মাত্র । সুতরাং একে অবজ্ঞা করাই সঙ্গত যা মোদি ইতিমধ্যে দেখিয়ে দিয়েছেন ইউনুসের সঙ্গে বৈঠকের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে এবং শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট দিসানায়েককে দিল্লীতে হার্দিক অভ্যর্থনা দিয়ে ও বড় বৈঠক করে ৷ ইউনুসের সরকারের সঙ্গে ভারতের ভবিষ্যৎ নীতি কি হবে তা বোঝা যাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জয়শঙ্করের বর্তমান বৈঠকের পর কারণ ইউনুস যে মার্কিন ২১৯৯ নং ডিপ ষ্টেটের অঙ্গ তা আজ প্রায় সর্বজনবিদিত।