চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের একাধিক শাখায় তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম সারওয়ার চৌধুরীসহ ইসলামী ব্যাংকের ২৩ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাদের আগামী ১০ থেকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সাইজের ছবিসহ অন্যান্য তথ্যাদি জমা দিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছে দুদক।
এই ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার আলী, ওমর ফারুক খান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহের আহমেদ চৌধুরী, এ এ এম হাবিবুর রহমান, হাসনে আলম, আব্দুল জাব্বার, সিদ্দিকুর রহমান, কাজী মো. রেজাউল করীম, মিফতাহ উদ্দিন, এএফএম কামালুদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, জেকিউএম হাবিবুল্লাহ।
আরও আছেন মনিটরিং বিভাগের প্রধান এসভিপি খালেকুজ্জামান, একই বিভাগের এসএভিপি মোহম্মদ নজরুল ইসলাম, বিনিয়োগ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাব্বির, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ উল্লাহ, মোহাম্মদ আলী, ফরিদ উদ্দিন, সাইদ উল্লাহ, আবু সৈয়দ মোহম্মদ ইদ্রিস, আলতাফ হোসাইন ও গিয়াস উদ্দিন কাদের।
চিঠিতে উল্লিখিত ব্যক্তিদের দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয়ে বিতরণকৃত ঋণের তথ্যসহ ব্যক্তিগত তথ্য এবং লিখিত বক্তব্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
কোন গ্রাহকের কত ঋণ
ঋণসংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যাংকটির চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের ঠিকানা চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের ১৫০০/১। এই গ্রাহককে গত ৬ ডিসেম্বর ২৪০ কোটি টাকা, ৭ ডিসেম্বর ১১০ কোটি টাকা, ১১ ডিসেম্বর ১৩০ কোটি টাকা, ১২ ডিসেম্বর ১২০ কোটি টাকা, ১৩ ডিসেম্বর ১৩০ কোটি টাকা, ১৪ ডিসেম্বর ১২০ কোটি টাকা ও ১৫ ডিসেম্বর ১১৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়। মুনাফাসহ এ ঋণের পরিমাণ দেখানো হয়েছে এক হাজার ৫৪ কোটি টাকা।
ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের ঠিকানা চট্টগ্রামের কোতোয়ালির ৪০,আসাদগঞ্জ। এই গ্রাহককে গত ১৮ থেকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মাত্র ১১ দিনে দেওয়া হয় ৯৫৯ কোটি টাকা। নথিপত্রে মুনাফাসহ এ ঋণের পরিমাণ দেখানো হয়েছে এক হাজার ৮৪ কোটি টাকা।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের ঠিকানা হাটহাজারীর ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী। এই গ্রাহককে সব মিলিয়ে এক হাজার ১১৯ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে ঋণ ও ঋণ সুবিধা মিলিয়ে দেওয়া হয় ৫৭৪ কোটি টাকা। বাকি অর্থ দেওয়া হয় গত ডিসেম্বরে।