ঢাকা ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পান্নাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে বাদীর আবেদন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলা থেকে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে অব্যাহতি দিতে আবেদন করা হয়েছে। সোমবার রাজধানীর খিলগাঁও থানার ওসি বরাবর মামলার বাদী মো. বাকের এ আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে (৬৫) ভুলবশত আসামি করা হয়। তাকে বাদ দিয়ে মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করিতে মর্জি হয়।

এর আগে হত্যাচেষ্টার মামলায় আগাম জামিন পান পান্না। এদিন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাকে এই মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দেন।

ছাত্র আন্দোলনের সময় আহাদুল ইসলামকে গুলি ও মারধরের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রাজধানীর খিলগাঁও থানায় গত ১৭ অক্টোবর আহাদুলের বাবা মো. বাকের (৫২) বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

ওই মামলায় পান্নাসহ ১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে ৯৪ নম্বর আসামি জেড আই খান পান্না। এছাড়া মামলাটিতে আসামি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীরও নাম রয়েছে।

মামলার বাদি মো. বাকের বনশ্রী এলাকায় ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন।

সোমবার বাকের জানান, তিনি জেড আই খান পান্নাকে চেনেন না এবং কীভাবে তার নাম আসামির তালিকায় এসেছে সেটাও জানেন না। আইনজীবী পান্না সম্পর্কে বাকের বললেন, ‘উনি কেডা জানি না।’

বাকের আরও বলেন, ‘বিএনপি আর জামায়াতের আইনজীবীদের সহযোগিতা নিয়া মামলা করছি। তাদের হুকুমেই তো হইছে। তারাই ভালো জানেন। পুলিশও হেল্প করছে। তাগোর সঙ্গে কথা কইলে বুঝতে পারবেন।’

কেন বিএনপি-জামায়াতের সহযোগিতা চেয়েছেন এমন প্রশ্নে বাকেরের ভাষ্য, আমি ছেলের জন্য ন্যায়বিচার চাই। আমি মুর্খ মানুষ। কাজ করি, ভাত খাই। মামলা কীভাবে করতে হয় জানি না। তাই মামলা করার জন্য আমি তাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন।

জেড আই খান পান্না মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি নানা আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করার আদেশ চেয়ে গত ২৯ জুলাই আইনজীবীদের একটি দল হাইকোর্টে আবেদন করে। ওই আবেদনের পক্ষে আদালতে যুক্তি-তর্ক উপস্থান করেন জেড আই খান পান্না। শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ২৯ জুলাই নাগরিক উদ্যোগে গঠিত জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের সদস্যও ছিলেন তিনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পান্নাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে বাদীর আবেদন

আপডেট সময় ০২:১৬:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলা থেকে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে অব্যাহতি দিতে আবেদন করা হয়েছে। সোমবার রাজধানীর খিলগাঁও থানার ওসি বরাবর মামলার বাদী মো. বাকের এ আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে (৬৫) ভুলবশত আসামি করা হয়। তাকে বাদ দিয়ে মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করিতে মর্জি হয়।

এর আগে হত্যাচেষ্টার মামলায় আগাম জামিন পান পান্না। এদিন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাকে এই মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দেন।

ছাত্র আন্দোলনের সময় আহাদুল ইসলামকে গুলি ও মারধরের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে জেড আই খান পান্নার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রাজধানীর খিলগাঁও থানায় গত ১৭ অক্টোবর আহাদুলের বাবা মো. বাকের (৫২) বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

ওই মামলায় পান্নাসহ ১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে ৯৪ নম্বর আসামি জেড আই খান পান্না। এছাড়া মামলাটিতে আসামি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীরও নাম রয়েছে।

মামলার বাদি মো. বাকের বনশ্রী এলাকায় ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন।

সোমবার বাকের জানান, তিনি জেড আই খান পান্নাকে চেনেন না এবং কীভাবে তার নাম আসামির তালিকায় এসেছে সেটাও জানেন না। আইনজীবী পান্না সম্পর্কে বাকের বললেন, ‘উনি কেডা জানি না।’

বাকের আরও বলেন, ‘বিএনপি আর জামায়াতের আইনজীবীদের সহযোগিতা নিয়া মামলা করছি। তাদের হুকুমেই তো হইছে। তারাই ভালো জানেন। পুলিশও হেল্প করছে। তাগোর সঙ্গে কথা কইলে বুঝতে পারবেন।’

কেন বিএনপি-জামায়াতের সহযোগিতা চেয়েছেন এমন প্রশ্নে বাকেরের ভাষ্য, আমি ছেলের জন্য ন্যায়বিচার চাই। আমি মুর্খ মানুষ। কাজ করি, ভাত খাই। মামলা কীভাবে করতে হয় জানি না। তাই মামলা করার জন্য আমি তাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন।

জেড আই খান পান্না মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি নানা আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করার আদেশ চেয়ে গত ২৯ জুলাই আইনজীবীদের একটি দল হাইকোর্টে আবেদন করে। ওই আবেদনের পক্ষে আদালতে যুক্তি-তর্ক উপস্থান করেন জেড আই খান পান্না। শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ২৯ জুলাই নাগরিক উদ্যোগে গঠিত জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের সদস্যও ছিলেন তিনি।