ঢাকা ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারের নিয়ম অমান্য করে টাকা বেশি নিচ্ছে সেনেরচর ইউনিয়ন

দেশে শিশুর জন্ম থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সরকারি নিয়মানুযায়ী জন্ম নিবন্ধনের কোন ফি নেওয়া হয়না তবে শিশুর ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা ও ৫ বছরের উপরে সব বয়সীদের ৫০ টাকা এবং সংশোধনের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা ফি নেয়ার নিয়ম করে দিয়েছে সরকার। তবে সরকারের এই নিয়ম মানা হচ্ছেনা শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়ন পরিষদে।

সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান জালাল জমাদার সরকারি বেধে দেয়া ফি এর স্থলে নিজেই নতুন নিয়ম করেছেন। তার করে দেয়া নিয়মে প্রতি জন্ম সনদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করছেন উদ্যোক্তারা। এমনই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে এমন অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায়।

জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে আসা জিহাদ কাজী বলেন, আমি আমার জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে এসেছিলাম। আমার থেকে পরিষদের উদ্যোক্তারা ২০০ টাকা দাবি করেন। তখন তাদের দাবীকৃত টাকা না দিয়ে সচিবের শরণাপন্ন হই। সেখানে গেলে সচিব আমাকে বলেন ২০০ টাকাই দিতে হবে, কেননা চেয়ারম্যান জন্মনিবন্ধনের টাকা নির্ধারণ করে দিয়ছেন। তাই আমি কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে ২০০ টাকাই দিয়ে আসি।

সেবা নিতে আসা একাধিক সেবাগ্রহীতারা অভিযোগ করে বলেন, ২০০ টাকার নিচে জন্মনিবন্ধন করাই যায় না। এখানে কাজ করা উদ্যোক্তা এবং পরিষদের সচিব বলেন চেয়ারম্যান নিয়ম করে দিয়েছেন তাই তাদের চাহিদামত টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঘুরেও জন্ম নিবন্ধন করা যায়না। আমরা এই ভোগান্তি থেকে নিস্তার চাই।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবু ছাইম বলেন, চেয়ারম্যান যেভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জালাল জমাদার বলেন, পরিষদে ২ জন উদ্যোক্তা থাকার কথা থাকলেও আমাদের এখানে তিন জন উদ্যোক্তা রয়েছেন। তাদের কোনো বেতন নেই বিধায় জন্মনিবন্ধন করতে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তারা ২০০ টাকা করে নিচ্ছে সে ব্যাপারে আমি জানি না।

এ ব্যাপারে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। সরকার নির্ধারিত ফি থেকে বেশি টাকা নেওয়া অপরাধ। সেখানে সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি করা হয় কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। এই বিষয়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারের নিয়ম অমান্য করে টাকা বেশি নিচ্ছে সেনেরচর ইউনিয়ন

আপডেট সময় ১২:০১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দেশে শিশুর জন্ম থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সরকারি নিয়মানুযায়ী জন্ম নিবন্ধনের কোন ফি নেওয়া হয়না তবে শিশুর ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা ও ৫ বছরের উপরে সব বয়সীদের ৫০ টাকা এবং সংশোধনের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা ফি নেয়ার নিয়ম করে দিয়েছে সরকার। তবে সরকারের এই নিয়ম মানা হচ্ছেনা শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়ন পরিষদে।

সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান জালাল জমাদার সরকারি বেধে দেয়া ফি এর স্থলে নিজেই নতুন নিয়ম করেছেন। তার করে দেয়া নিয়মে প্রতি জন্ম সনদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করছেন উদ্যোক্তারা। এমনই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে এমন অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায়।

জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে আসা জিহাদ কাজী বলেন, আমি আমার জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে এসেছিলাম। আমার থেকে পরিষদের উদ্যোক্তারা ২০০ টাকা দাবি করেন। তখন তাদের দাবীকৃত টাকা না দিয়ে সচিবের শরণাপন্ন হই। সেখানে গেলে সচিব আমাকে বলেন ২০০ টাকাই দিতে হবে, কেননা চেয়ারম্যান জন্মনিবন্ধনের টাকা নির্ধারণ করে দিয়ছেন। তাই আমি কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে ২০০ টাকাই দিয়ে আসি।

সেবা নিতে আসা একাধিক সেবাগ্রহীতারা অভিযোগ করে বলেন, ২০০ টাকার নিচে জন্মনিবন্ধন করাই যায় না। এখানে কাজ করা উদ্যোক্তা এবং পরিষদের সচিব বলেন চেয়ারম্যান নিয়ম করে দিয়েছেন তাই তাদের চাহিদামত টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঘুরেও জন্ম নিবন্ধন করা যায়না। আমরা এই ভোগান্তি থেকে নিস্তার চাই।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবু ছাইম বলেন, চেয়ারম্যান যেভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জালাল জমাদার বলেন, পরিষদে ২ জন উদ্যোক্তা থাকার কথা থাকলেও আমাদের এখানে তিন জন উদ্যোক্তা রয়েছেন। তাদের কোনো বেতন নেই বিধায় জন্মনিবন্ধন করতে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তারা ২০০ টাকা করে নিচ্ছে সে ব্যাপারে আমি জানি না।

এ ব্যাপারে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। সরকার নির্ধারিত ফি থেকে বেশি টাকা নেওয়া অপরাধ। সেখানে সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি করা হয় কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। এই বিষয়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।