ঢাকা ১১:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

সত্যিই কি একরাতে গড়ে উঠেছিল পাবনার জোড় বাংলা মন্দির?

কোলাহলে ভরা শহরের মধ্যেই হঠাৎ বেশ ছিমছাম শান্তিপূর্ণ পুরনো দোচালা দুটো ঘর। কথা হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর ফটক পাবনার জোড়বাংলা মন্দিরের। পাবনা শহর থেকে একটু ভেতরেই, দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকায় রয়েছে নজরকাড়া এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন। শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০-২৫ মিনিটের দূরত্বেই আছে ঐতিহাসিক এই নিদর্শন। এটি ঠিক কীসের মন্দির বা আসলেও মন্দির কি না এ ব্যাপারে এখনো বেশ সন্দেহ রয়ে গেছে।

মন্দির নির্মাণের সময়ের যথাযথ কোনো শিলালিপি না পাওয়ায় মন্দিরটির ইতিহাস নিয়ে পুরোপুরি সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী জানা যায় আঠেরো শতকের মাঝামাঝি সময় এই মন্দিরটি গড়ে ওঠে। ব্রজমোহন ক্রোড়ী নামক মুর্শিদাবাদের নবাবের তহশীলদার এই মন্দিরটির নির্মাণকারী হিসেবে ধরা হয়। অনেকে বলে থাকেন মন্দিরটি অলৌকিকভাবে একরাতের ভেতর গড়ে ওঠে। আবার কেউ কেউ বলেন, পলাশির যুদ্ধে হেরে যাবার পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা পদ্মা ওরফে গঙ্গা পেরিয়ে এখানে পালিয়ে আসেন এবং কিছু সময় অজ্ঞাতবাসে কাটান। নবাবের লুকোবার ব্যবস্থা করার জন্যই তার তহশিলদার আগে থেকে এসে রাতারাতি এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।

বর্তমানে এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনটি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীন। ইট দিয়ে তৈরি অনুচ্চ বেদীর ওপরের দোচালা এই মন্দিরটি টেরাকোটার এক অপূর্ব নিদর্শন। প্রবেশপথ ও সংলগ্ন স্তম্ভ ও দেওয়ালে একসময় প্রচুর পোরামাটির চিত্রফলক আঁকা ছিলো। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ভূমিকম্পে সেসবের বেশ অনেকটাই ক্ষতি হয়। যদিও বর্তমানে মন্দির সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। পশ্চিমমুখী এই মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি বারান্দা এবং তাতে দুটি স্তম্ভের সাহায্যে প্রবেশপথ রয়েছে ৩টি। গ্রাম বাংলার দোচালা ঘরের আদোলে তৈরি এই মন্দিরে দুটি কক্ষের সামনেরটি মণ্ডপ এবং অপরটি গর্ভগৃহ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আর মন্দিরের পেছন অংশে রয়েছে মন্দির থেকে বেরোনোর রাস্তা। পুরো মন্দিরটির দেওয়াল জুড়ে ছিলো রামায়ণ-মহাভারত সহ বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী। সত্যিই দু-বাংলা মিলিয়ে বঙ্গ প্রদেশে নিদর্শনের শেষ নেই।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

সত্যিই কি একরাতে গড়ে উঠেছিল পাবনার জোড় বাংলা মন্দির?

আপডেট সময় ০৯:৪৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

কোলাহলে ভরা শহরের মধ্যেই হঠাৎ বেশ ছিমছাম শান্তিপূর্ণ পুরনো দোচালা দুটো ঘর। কথা হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর ফটক পাবনার জোড়বাংলা মন্দিরের। পাবনা শহর থেকে একটু ভেতরেই, দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকায় রয়েছে নজরকাড়া এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন। শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০-২৫ মিনিটের দূরত্বেই আছে ঐতিহাসিক এই নিদর্শন। এটি ঠিক কীসের মন্দির বা আসলেও মন্দির কি না এ ব্যাপারে এখনো বেশ সন্দেহ রয়ে গেছে।

মন্দির নির্মাণের সময়ের যথাযথ কোনো শিলালিপি না পাওয়ায় মন্দিরটির ইতিহাস নিয়ে পুরোপুরি সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী জানা যায় আঠেরো শতকের মাঝামাঝি সময় এই মন্দিরটি গড়ে ওঠে। ব্রজমোহন ক্রোড়ী নামক মুর্শিদাবাদের নবাবের তহশীলদার এই মন্দিরটির নির্মাণকারী হিসেবে ধরা হয়। অনেকে বলে থাকেন মন্দিরটি অলৌকিকভাবে একরাতের ভেতর গড়ে ওঠে। আবার কেউ কেউ বলেন, পলাশির যুদ্ধে হেরে যাবার পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা পদ্মা ওরফে গঙ্গা পেরিয়ে এখানে পালিয়ে আসেন এবং কিছু সময় অজ্ঞাতবাসে কাটান। নবাবের লুকোবার ব্যবস্থা করার জন্যই তার তহশিলদার আগে থেকে এসে রাতারাতি এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।

বর্তমানে এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনটি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীন। ইট দিয়ে তৈরি অনুচ্চ বেদীর ওপরের দোচালা এই মন্দিরটি টেরাকোটার এক অপূর্ব নিদর্শন। প্রবেশপথ ও সংলগ্ন স্তম্ভ ও দেওয়ালে একসময় প্রচুর পোরামাটির চিত্রফলক আঁকা ছিলো। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ভূমিকম্পে সেসবের বেশ অনেকটাই ক্ষতি হয়। যদিও বর্তমানে মন্দির সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। পশ্চিমমুখী এই মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি বারান্দা এবং তাতে দুটি স্তম্ভের সাহায্যে প্রবেশপথ রয়েছে ৩টি। গ্রাম বাংলার দোচালা ঘরের আদোলে তৈরি এই মন্দিরে দুটি কক্ষের সামনেরটি মণ্ডপ এবং অপরটি গর্ভগৃহ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আর মন্দিরের পেছন অংশে রয়েছে মন্দির থেকে বেরোনোর রাস্তা। পুরো মন্দিরটির দেওয়াল জুড়ে ছিলো রামায়ণ-মহাভারত সহ বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী। সত্যিই দু-বাংলা মিলিয়ে বঙ্গ প্রদেশে নিদর্শনের শেষ নেই।