ঢাকা ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহী পলিটেকনিক এক্স স্টুডেন্টস ফোরাম (আরপিইএসএফ) এর নির্বাচন ২০২৪-২৬ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ মালিক সমিতি ভাটারা থানা কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্যাসিস্ট বিরোধী যত রাজনৈতিক সংগঠন আছে তাদের মধ্যে একটি ঐক্য গড়ে তুলতে হবে: নজরুল ইসলাম খান কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু ভোলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার নেতাকর্মীদের ত্যাগ স্বীকার করে কাজ করার শপথ করালেন, আমিনুল হক দৌলতের কান্দিতে অন্যরকম এক বিদায় সংবর্ধনা পেল শিক্ষক সেলিনা আক্তার চিন্ময়ের গ্রেফতার ও সাইফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে যত অপতথ্য ছড়িয়েছে বাংলাদেশকে ২২৬৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জার্মানি দুদকের মামলায় অব্যাহতি পেলেন জামায়াত সেক্রেটারি

সত্যিই কি একরাতে গড়ে উঠেছিল পাবনার জোড় বাংলা মন্দির?

কোলাহলে ভরা শহরের মধ্যেই হঠাৎ বেশ ছিমছাম শান্তিপূর্ণ পুরনো দোচালা দুটো ঘর। কথা হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর ফটক পাবনার জোড়বাংলা মন্দিরের। পাবনা শহর থেকে একটু ভেতরেই, দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকায় রয়েছে নজরকাড়া এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন। শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০-২৫ মিনিটের দূরত্বেই আছে ঐতিহাসিক এই নিদর্শন। এটি ঠিক কীসের মন্দির বা আসলেও মন্দির কি না এ ব্যাপারে এখনো বেশ সন্দেহ রয়ে গেছে।

মন্দির নির্মাণের সময়ের যথাযথ কোনো শিলালিপি না পাওয়ায় মন্দিরটির ইতিহাস নিয়ে পুরোপুরি সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী জানা যায় আঠেরো শতকের মাঝামাঝি সময় এই মন্দিরটি গড়ে ওঠে। ব্রজমোহন ক্রোড়ী নামক মুর্শিদাবাদের নবাবের তহশীলদার এই মন্দিরটির নির্মাণকারী হিসেবে ধরা হয়। অনেকে বলে থাকেন মন্দিরটি অলৌকিকভাবে একরাতের ভেতর গড়ে ওঠে। আবার কেউ কেউ বলেন, পলাশির যুদ্ধে হেরে যাবার পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা পদ্মা ওরফে গঙ্গা পেরিয়ে এখানে পালিয়ে আসেন এবং কিছু সময় অজ্ঞাতবাসে কাটান। নবাবের লুকোবার ব্যবস্থা করার জন্যই তার তহশিলদার আগে থেকে এসে রাতারাতি এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।

বর্তমানে এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনটি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীন। ইট দিয়ে তৈরি অনুচ্চ বেদীর ওপরের দোচালা এই মন্দিরটি টেরাকোটার এক অপূর্ব নিদর্শন। প্রবেশপথ ও সংলগ্ন স্তম্ভ ও দেওয়ালে একসময় প্রচুর পোরামাটির চিত্রফলক আঁকা ছিলো। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ভূমিকম্পে সেসবের বেশ অনেকটাই ক্ষতি হয়। যদিও বর্তমানে মন্দির সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। পশ্চিমমুখী এই মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি বারান্দা এবং তাতে দুটি স্তম্ভের সাহায্যে প্রবেশপথ রয়েছে ৩টি। গ্রাম বাংলার দোচালা ঘরের আদোলে তৈরি এই মন্দিরে দুটি কক্ষের সামনেরটি মণ্ডপ এবং অপরটি গর্ভগৃহ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আর মন্দিরের পেছন অংশে রয়েছে মন্দির থেকে বেরোনোর রাস্তা। পুরো মন্দিরটির দেওয়াল জুড়ে ছিলো রামায়ণ-মহাভারত সহ বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী। সত্যিই দু-বাংলা মিলিয়ে বঙ্গ প্রদেশে নিদর্শনের শেষ নেই।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহী পলিটেকনিক এক্স স্টুডেন্টস ফোরাম (আরপিইএসএফ) এর নির্বাচন ২০২৪-২৬ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সত্যিই কি একরাতে গড়ে উঠেছিল পাবনার জোড় বাংলা মন্দির?

আপডেট সময় ০৯:৪৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

কোলাহলে ভরা শহরের মধ্যেই হঠাৎ বেশ ছিমছাম শান্তিপূর্ণ পুরনো দোচালা দুটো ঘর। কথা হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর ফটক পাবনার জোড়বাংলা মন্দিরের। পাবনা শহর থেকে একটু ভেতরেই, দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকায় রয়েছে নজরকাড়া এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন। শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০-২৫ মিনিটের দূরত্বেই আছে ঐতিহাসিক এই নিদর্শন। এটি ঠিক কীসের মন্দির বা আসলেও মন্দির কি না এ ব্যাপারে এখনো বেশ সন্দেহ রয়ে গেছে।

মন্দির নির্মাণের সময়ের যথাযথ কোনো শিলালিপি না পাওয়ায় মন্দিরটির ইতিহাস নিয়ে পুরোপুরি সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী জানা যায় আঠেরো শতকের মাঝামাঝি সময় এই মন্দিরটি গড়ে ওঠে। ব্রজমোহন ক্রোড়ী নামক মুর্শিদাবাদের নবাবের তহশীলদার এই মন্দিরটির নির্মাণকারী হিসেবে ধরা হয়। অনেকে বলে থাকেন মন্দিরটি অলৌকিকভাবে একরাতের ভেতর গড়ে ওঠে। আবার কেউ কেউ বলেন, পলাশির যুদ্ধে হেরে যাবার পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা পদ্মা ওরফে গঙ্গা পেরিয়ে এখানে পালিয়ে আসেন এবং কিছু সময় অজ্ঞাতবাসে কাটান। নবাবের লুকোবার ব্যবস্থা করার জন্যই তার তহশিলদার আগে থেকে এসে রাতারাতি এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।

বর্তমানে এই প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনটি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীন। ইট দিয়ে তৈরি অনুচ্চ বেদীর ওপরের দোচালা এই মন্দিরটি টেরাকোটার এক অপূর্ব নিদর্শন। প্রবেশপথ ও সংলগ্ন স্তম্ভ ও দেওয়ালে একসময় প্রচুর পোরামাটির চিত্রফলক আঁকা ছিলো। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ভূমিকম্পে সেসবের বেশ অনেকটাই ক্ষতি হয়। যদিও বর্তমানে মন্দির সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। পশ্চিমমুখী এই মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি বারান্দা এবং তাতে দুটি স্তম্ভের সাহায্যে প্রবেশপথ রয়েছে ৩টি। গ্রাম বাংলার দোচালা ঘরের আদোলে তৈরি এই মন্দিরে দুটি কক্ষের সামনেরটি মণ্ডপ এবং অপরটি গর্ভগৃহ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আর মন্দিরের পেছন অংশে রয়েছে মন্দির থেকে বেরোনোর রাস্তা। পুরো মন্দিরটির দেওয়াল জুড়ে ছিলো রামায়ণ-মহাভারত সহ বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী। সত্যিই দু-বাংলা মিলিয়ে বঙ্গ প্রদেশে নিদর্শনের শেষ নেই।