নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসীতে অবস্থিত গাজী টায়ারে আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে গাজী টায়ার কারখানায় জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক যুগান্তরকে এ তথ্য জানান।
এই তদন্ত কমিটিতে বিদ্যুৎ কল কারখানা ফায়ার সার্ভিসসহ সব বিভাগের লোকজন রয়েছে। এ সময় তিনি গাজী টায়ার কারখানা পরিদর্শন করেন।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, ৮ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের একটি তালিকা তৈরি করতে। ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজী টায়ারের ভবনটির ভেতরে সালফারসহ কেমিক্যাল থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও তাপ ও ধোঁয়া রয়ে গেছে- এ কারণে উদ্ধার কাজ চালানো যাচ্ছে না। খুব দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে।
নিখোঁজদের একটি তালিকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসেছে। গত রোববার রাত ১১টায় আগুন লাগলেও ৪০ ঘণ্টা পর এর কোনো সুরাহা হয়নি।
১৮ ঘণ্টা পরও উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি গাজী টায়ারের ছয়তলা ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গাজী টায়ারে উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণের এসেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন ঢাকা ফুলবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিখোঁজদের স্বজনরা কারখানার ভেতরে ও বাইরে এসে ভিড় জমাতে থাকে। উদ্ধার কাজ শুরু না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ পর্যন্ত ১৭৬ জন নিখোঁজের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। মঙ্গলবার সকালে পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করেন।
সরেজমিন জানা গেছে, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজী টায়ার কারখানায় লুটপাটকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে ২১ ঘণ্টা পর সোমবার ৭টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। নিখোঁজদের স্বজনরা কারখানার সামনে এসে ভিড় করছে স্বজনদের খোঁজে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও উদ্ধার কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিখোঁজদের স্বজনরা।
গন্ধর্বপুর এলাকা থেকে আসা লিপি আক্তার বলেন, আমার ছোট ভাই আলামিন বন্ধু মাহফুজের সঙ্গে গাজী টায়ার ফ্যাক্টরিতে রোববার রাত ৯টার দিকে আসেন। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো উদ্ধার কাজ শুরু করেনি ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ভবনটিতে দীর্ঘসময় ধরে আগুন জ্বালার কারণে ভবনটি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ভবনের আগুন নিভে গেলেও ভেতরে ধোঁয়া ও তাপের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনে প্রবেশ করতে পারছে না। তবে তারা পানি নিয়ে তাপ ও ধোঁয়া কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তাপ ও ধোঁয়া কমে গেলে উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।